বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে অনেকেই চাকরির পথে না হেঁটে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে বিভিন্ন নিত্যনতুন কাজ শুরু করে সেটাকেই পেশা বানিয়ে নিচ্ছেন। এমনকি, ওই কাজগুলির মাধ্যমেই ভালো উপার্জনও করছেন তাঁরা। তবে, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা আপনাদের কাছে এমন এক যুবকের প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব যিনি তিন তিনটে সরকারি চাকরি ছেড়ে চাষাবাদ (Farming) শুরু করে প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন করছেন।
হ্যাঁ, প্রথমে শুনে অবিশ্বাস্য মনে হলেও ধনরাজ লাভবংশী নামের ওই যুবক এভাবেই নজির তৈরি করেছেন। শুধু তাই নয়, তিনি রাজস্থানের প্রথম কৃষক যিনি ইজরায়েলের পদ্ধতি অনুসরণ করে মাল্টিক্রপ হারভেস্টিং ফর্মুলার মাধ্যমে চাষাবাদ করছেন। এর পাশাপাশি তিনি ইতিমধ্যেই ৪০ জন পুরুষ ও মহিলার কর্মসংস্থানও করেছেন।
কেরানি ও শিক্ষকের চাকরি ছেড়ে দেন: ২৯ বছর বয়সী ধনরাজ লাভবংশী আসলপুরের বাসিন্দা। ২০১৯ সালে আকলেরা কোর্টের কেরানির চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। তারপর তহসিলে কেরানি হন। শুধু তাই নয়, তারপর তিনি থার্ড গ্রেড টিচার হিসেবেও মনোনীত হন। কিন্তু কৃষিকাজের প্রতি তাঁর গভীর অনুরাগ থাকায় তিনি তিনটি চাকরিই ছেড়ে দেন। যার ফলে তিনি নিজের কাছের মানুষদের কাছ থেকেও বিভিন্ন নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া পান। যদিও, তিনি সেইসবকে পাত্তা না দিয়ে মহারাষ্ট্রের মহাত্মা ফুলে কৃষি বিদ্যাপীঠ ছাড়াও বিভিন্ন স্থান থেকে চাষাবাদের একাধিক পদ্ধতির সাথে সম্পর্কিত সূক্ষ্ম বিষয়গুলি শিখেছিলেন। এছাড়াও, তিনি ইজরায়েলের পদ্ধতি অনুসরণ করে মাল্টিক্রপ হারভেস্টিং ফর্মুলা সম্পর্কে অবগত হন।
এমন পরিস্থিতিতে সরথালে জমি লিজ নিয়ে চাষ শুরু করেন ধনরাজ। প্রথমবারে সয়াবিন চাষ করে তিনি সফল হন। পাশাপাশি, তিনি ওই চাষের মাধ্যমে ৩৮ লক্ষ টাকা লাভ করেন। এবার তিনি মোট ৪০ বিঘা জমিতে দশ ধরণের অফ-সিজন সবজির চাষ করছেন। যার মধ্যে রয়েছে লঙ্কা, টমেটো, বেগুন, করলা, ও তরমুজের মত ফসল। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এবার তাঁর প্রায় এক কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্য রয়েছে।
৪০ জনের কর্মসংস্থান করেছেন: ধনরাজ লাভবংশী এলাকার প্রায় ৪০ জনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। তাঁরা চাষাবাদ সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজে সাহায্য করেন। এদিকে, কম জলে ফসল চাষের জন্য জমিতে ওয়াটার ডিপিং পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে। যাতে ফসল প্রয়োজন অনুযায়ী জল পায়। এই প্রসঙ্গে ধনরাজ জানিয়েছেন, “এই পদ্ধতিতে দিনে চল্লিশ বিঘা জমিতে সেচ দেওয়া সম্ভব। পাশাপাশি, এই পদ্ধতি জল সংরক্ষণও করে।”
স্বপ্ন রয়েছে নিজের কোম্পানি খোলার: এমতাবস্থায়, ধনরাজ লাভবংশী চান নিজস্ব কোম্পানি খুলতে। তিনি বলেছেন যে, ওই কোম্পানিতে ল্যাব থেকে ভেজিটেবল প্যাকেজিং পর্যন্ত একটি সঠিক ব্যবস্থা থাকবে। যাতে সেখানে প্যাক করা শাকসবজি অনলাইনের পাশাপাশি সমগ্ৰ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাওয়া যায়। এছাড়াও, ধনরাজ তাঁর এই কাজে আধুনিক প্রযুক্তির সঠিক সুবিধাও নিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে অনেক কিছু শেখার আছে। এর সঠিক ব্যবহার সবার জন্য উপকারী প্রমাণিত হতে পারে।