খুচরো দিয়ে স্বপ্নপূরণ! ভিক্ষার জমানো কয়েন দিয়ে স্কুটি কিনে মাকে নিয়ে পুজো দিলেন ছেলে

বাংলা হান্ট ডেস্ক: স্বপ্নপূরণ হলে কার না ভালো লাগে! প্রত্যেকেই নিজেদের স্বপ্নপূরণের জন্য প্রতিনিয়তই করে চলেছেন লড়াই। কিন্তু, এবার আমাদের রাজ্যেই এমন এক ঘটনা ঘটেছে যা নিঃসন্দেহে অবাক করে দেবে সবাইকে। তিল তিল করে জমানো কয়েন দিয়ে এবার স্কুটি কিনলেন এক যুবক।

জানা গিয়েছে যে, রীতিমত খুচরো পয়সা দিয়েই স্বপ্নপূরণ করে ফেলেছেন নদীয়ার বাসিন্দা রাকেশ পাঁড়ে। বহু বছর জমিয়ে আসা ১ টাকার কয়েন দিয়েই নিজের পছন্দের স্কুটি কিনতে সক্ষম হন ওই যুবক। তবে, এই কাজে সবচেয়ে বেশি অবদান রয়েছে তাঁর মায়ের!

   

এই প্রসঙ্গে রাকেশ জানিয়েছেন যে, একদম ছোটবেলায় তাঁর বাবা মারা যাওয়ার ফলে সংসারের খরচ সামলাতে ভিক্ষার পথকেই বেছে নেন তাঁর মা। আর তার মাধ্যমেই জমতে শুরু করে কয়েন। এমতাবস্থায়, বর্তমান সময়ে অনেকেই ছোট এক টাকার কয়েন নিতে চান না। তবে, এবার সেই কয়েনগুলিকেই কাজে লাগিয়েছেন রাকেশ। ছোট এক টাকার কয়েনগুলিকে জমিয়ে রেখেই নতুন একটি স্কুটি কিনে ফেললেন তিনি।

রাকেশ আরও জানিয়েছেন, তিনি একটি দোকানে কাজ করেন। ভিক্ষার মাধ্যমেই তাঁর মা বেশ কয়েক বছর যাবৎ টাকা জমিয়েছিলেন। সেই জমানো টাকা দিয়েই তাঁকে কিছু করতে বলেন তাঁর মা। তারপরেই রাকেশ সিদ্ধান্ত নেন স্কুটি কিনে ফেলার।

এদিকে, গত মঙ্গলবার স্কুটি কেনার উদ্দেশ্য নিয়েই তিনি হাজির হয়ে যান কৃষ্ণনগরের একটি বাইকের শোরুমে। যদিও, শুধুমাত্র কয়েন দিয়ে স্কুটি কেনার কথা শুনে রীতিমত আকাশ থেকে পড়েন ওই শোরুমের ম্যানেজার থেকে কর্মী সকলেই। শুধু তাই নয়, রীতিমত দু’টি বালতি ও একটি ব্যাগ ভর্তি কয়েন নিয়ে রাকেশ কিনে ফেলেন নতুন স্কুটি।

এমতাবস্থায়, শোরুমের কর্মীদের প্রায় ৩ ঘন্টার চেষ্টায় পুরো কয়েন গুণে ফেলার কাজ শেষ হয়। হিসেব করে দেখা যায় যে, সেখানে রয়েছে মোট ৫১ হাজার ৫৯১ টাকা। বাকি টাকা রাকেশ ঋণের মাধ্যমে পরিশোধ করবেন বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি, নতুন স্কুটি কিনেই মাকে সঙ্গে নিয়ে পুজো দিতে যান রাকেশ।

WhatsApp Image 2022 03 31 at 11.37.54 AM

এই প্রসঙ্গে ওই বাইক শোরুমের জেনারেল ম্যানেজার শুভ শুক্লা জানিয়েছেন যে, “প্রথমে আমরা সকলেই খুব অবাক হয়ে যাই। পরে ব্যাঙ্কের ম্যানেজারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তারপর আমাদের সমস্ত স্টাফ মিলে কয়েন গুণে ফেলেন। প্রায় ২-৩ ঘণ্টার চেষ্টায় শেষ হয় গোনা। ওনাকে স্কুটিটি তুলে দিতে পেরে আমরাও খুব খুশি।”

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর