সালিশি সভা ডেকে নাবালিকার সঙ্গে বিয়ে দেওয়ায় আত্মঘাতী তরুণ! অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সালিশি সভা ডেকে এক যুবককে জোর করে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল গ্রামের মাতব্বরদের বিরুদ্ধে। মাতব্বরদের জোরাজুরির জেরে করুণ পরিণতি হল ওই যুবকের। অবসাদে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সে। গোটা ঘটনায় দায়ী করা হয়েছে স্থানীয় এক তৃণমূল নেতাকে।

মালদহের মানিকচক গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটেছে। সেখানে ২০ বছর বয়সী যুবক মানিক মণ্ডলের মৃত্যুর জন্য স্থানীয় তৃণমূল নেতাকে দায়ী করেছে পরিবার। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, রবিবার গ্রামের একটি বাগানে মানিক মণ্ডল এবং সেই গ্রামেরই এক তরুণীকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখে ফেলে গ্রামবাসীরা।

এরপর সালিশি সভা ডেকে ওই তরুণ তরুণীর বিচার করা হয়। মানিকচক গ্রামের তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য আশিস মণ্ডলের নেতৃত্বে একটি সালিশি সভা ডাকা হয় বলে অভিযোগ মৃত তরুণের পরিবারের। সেখানে অপ্রাপ্ত বয়স্ক তরুণ-তরুণীকে বিয়ে দেওয়ার নিদান দেওয়া হয়। তাঁদের জোর করে স্থানীয় একটি মন্দিরে নিয়ে গিয়ে বিয়ে দেয় মাতব্বররা। মানিক মণ্ডলের মা এই বিয়েতে আপত্তি জাহির করলেও, মাতব্বররা কোনও কথা শোনেন নি।

রবিবার জোর করে বিয়ে দেওয়ার পর, সোমবার সকালে নিজের বাড়ি থেকে মানিকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। মানিকের দাদা তুষার মণ্ডল জানান, ‘বাবা ভিন রাজ্যে কাজ করেন, আর এই কারণে আমরা আপাতত এই বিয়েটি দিতে না করেছিলাম। কিন্তু ওঁরা কেউ আমাদের কথা শোনেনি। তৃণমূল নেতা আশিস মণ্ডল আর বাকি মাতব্বররা মিলে জোর করে আমার ভাইয়ের বিয়ে দিয়ে দেয়। আর এভাবে জোরাজুরি করার কারণেই আমার ভাইয়ের প্রাণ গেল।”

যদিও, নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ খারিজ করেছেন তৃণমূল নেতা আশিস মণ্ডল। তিনি জানিয়েছেন, আমি বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়ার কথা বলেছিলেন, উল্টে মানিকের পরিবারের লোক বিষয়টি আলোচনা করে মিটিয়ে নিতে বলে। গ্রামের সবার সামনে পরিবার বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। আমরা কাউকে কোনও চাপ দিয়নি।

তৃণমূল নেতা আশিস মণ্ডল পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, আমি শুনেছি মানিকের পরিবার ওঁর উপর খুব অত্যাচার করত। সেই কারণেই হয়ত মানিক এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওঁর মৃত্যুর জন্য ওঁর পরিবারই দায়ী। গোটা ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। এখনও কাউকেই গ্রেফতার করা হয়নি বলে জানা গিয়েছে।


Koushik Dutta

সম্পর্কিত খবর