বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এসআইআর প্রক্রিয়া চলতে চলতেই পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল মহকুমার চন্দ্রকোনা পৌরসভার এক বুথকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে তুমুল আলোচনা। কারণ, পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের গোপালপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৪৮ নম্বর বুথে একটিও মৃত ভোটার নেই, যা প্রশাসনিক মহলে বিশেষ কৌতূহল তৈরি করেছে (SIR In Bengal)।
১৪৮ নম্বর বুথেই একটিও মৃত ভোটারের নাম নেই (SIR In Bengal)
চন্দ্রকোনা পৌরসভার মোট ২১টি বুথের মধ্যে বাকি ২০টি বুথে মৃত ভোটারের সংখ্যা মিলেছে ২৪৯। সেখানে একমাত্র ১৪৮ নম্বর বুথেই একটিও নাম নেই, এমনটাই বলছে বিধানসভা ভিত্তিক নির্বাচন কমিশনের প্রতিদিনের রিপোর্ট। সেই কারণেই এই বুথে ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছেন ব্লকের বিডিও, আর শোনা যাচ্ছে মহকুমা আধিকারিকরাও যাবেন খোঁজ নিতে (SIR In Bengal)। খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, এই বুথে মোট ভোটার ৫১৭। এর মধ্যে ৫১৩ জনের এনুমারেশন ফর্ম ডিজিটাইজ হয়েছে। বাকি চারজন পারমানেন্ট সিফটেড ভোটার হিসেবে চিহ্নিত।
এই অস্বাভাবিক সংখ্যা নিয়েই আলোচনা শুরু হলেও বুথের দায়িত্বে থাকা বিএলও বিকাশ লাহা খুবই আত্মবিশ্বাসী। তিনি বলেন, “২০১২ সাল থেকে আমি এই কাজ করছি। কেউ মারা গেলে ডেথ সার্টিফিকেট পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে ফর্ম ৭ পূরণ করাই এবং নাম বাদ দিই। এসআইআর শুরু হওয়ার আগেই দু’জনের নাম বাদ দিয়েছি।” বিকাশবাবুর দাবি, পৌরসভার ডেথ লিস্ট আর ভোটার তালিকা মিলিয়ে দেখলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে (SIR In Bengal)। বুথে সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বললেও অনেকেই জানান, এ বিষয়ে তাঁরা কিছু জানেন না। তবে বিএলও’র কাজ নিয়ে তাঁদের কোনও অসন্তোষ নেই, এটা স্পষ্ট।
গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা উত্তম হাতি দেড় বছর আগে মারা যান। তাঁর স্ত্রী বন্দনা হাতি বলেন, এসআইআর শুরু হওয়ার আগেই তাঁদের বাড়িতে গিয়ে বিএলও তাঁর স্বামীর মৃত্যুর তথ্য নিয়ে নাম তালিকা থেকে বাদ দেন। বুথের তৃণমূলের বিএলএ কাঞ্চন আশ জানালেন, “বিএলও আগেই সব মৃত ভোটারের নাম বাদ দিয়েছেন, তাই তালিকায় শুন্য দেখাচ্ছে।” বিজেপির বিএলএ শীর্ষেন্দু খাঁ-ও একই কথা বললেন, “বিএলও ভালো কাজ করেছেন, আমরা সহযোগিতা করেছি।” সিপিএমের বিএলএ পাঁচু লাহাও তাঁদের সঙ্গেই সহমত। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এমন ঐক্য খুবই বিরল, এটাই এখন এলাকায় আলোচনার বিষয়।
চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের বিডিও উৎপল পাইক বলেন, “সব বুথে ডেথ বা সিফটেড ভোটার পাওয়া গেছে। শুধু ১৪৮ নম্বর বুথে একটাও পাওয়া যায়নি। এখানকার বিএলও খুবই অ্যাক্টিভ। কেউ মারা গেলে ১৫ দিনের মধ্যে তিনি ফর্ম ৭ করিয়ে নাম বাদ দেন।” তবে প্রশংসার সঙ্গেই তিনি জানান, ওই বুথ পুরোপুরি নজরদারিতে আছে। তিনি নিজে গিয়েছেন সার্ভে করতে। এমনকি সেখানে থাকা ৮৫ বছর বয়সী এক ভোটারের ছবি নিজে তুলে এনেছেন।

আরও পড়ুনঃ দূর হল চিন্তা! প্রবীণ ও মহিলাদের জন্য এবার ‘গ্যারান্টেড’ লোয়ার বার্থ, রেলের নতুন ঘোষণা
এসবের মধ্যেই পরিষ্কার যে, এসআইআর (SIR In Bengal) আবহে মৃত ভোটার শুন্য এই বুথ এখন প্রশাসনের বিশেষ নজরে। বুথের কাজকর্ম নিয়ে প্রশংসা থাকলেও খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে প্রতিদিনই।












