বাংলাহান্ট ডেস্ক : বড় সাফল্য বিধাননগর পুলিস কমিশনারেটের (Bidhannagar Police Commissionerate)। ধরা পড়ল আন্তঃদেশীয় কিডন্যাপিং চক্র। কলকাতা বিমানবন্দর (Kolkata Airport) থেকে ২০ জন যুবককে উদ্ধার করল বিধাননগর কমিশনারেটের এনএসসিবিআই থানার পুলিস।
পুলিস সূত্রে জানা যাচ্ছে, বিদেশে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিল্লি, হরিয়ানা থেকে ডেকে নিয়ে আসা হয় তাঁদের। তারপরই করা হয় অপহরণ। মুক্তিপণ চেয়ে ফোন পরিবারে ফোন করে অপহরণকারীরা (Kidnap)। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। পুলিসের হাতে গ্রেফতার তিন অপহরণকারীই। সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্সে বা সিআইএসএফ-র (CISF) সহযোগিতায় নেতাজি সুভাষচন্দ্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থানার পুলিস (Kolkata Airport) অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে।
জানা যাচ্ছে, গত ১৬ সেপ্টেম্বর হরিয়ানার বাসিন্দা নরেশ কুমার এনএসসিবিআই থানায় এসে তাঁর ছেলে রাহুল কুমার নিঁখোজ হয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু তিনি কোনও ভাবে জানতে পারেন তাঁর ছেলে কলকাতাতেই রয়েছে। অগস্ট মাসের ২৮ তারিখ থেকে তাঁর ছেলে নিখোঁজ বলে পুলিসের কাছে জানান তিনি। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্তে নেমে পুলিস দমদম ও এয়ারপোর্ট সংলগ্ন এলাকা থেকে সুরেশ সিনহা, রাকেশ প্রসাদ সিনহা, ধীরাজ দাসকে গ্রেফতার করে।
এরপরেই রবিবার ভোর রাতে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে ২০ জনকে উদ্ধার করে পুলিস। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন রাহুলও। পুলিসের দাবি, এদের থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ নিয়ে এদের আমেরিকায় নিয়ে যাবে বলে কলকাতায় নিয়ে আসে। এরপরে তাঁদের আটকে রেখে এদের পরিবারের থেকে টাকা আদায় করে। রাহুলের ক্ষেত্রে তার পরিবারের থেকে ৪৯ লক্ষ টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা। এরমধ্যে রাহুলের বাবা ৪০ লক্ষ টাকা দেন বলেও জানা যায়।
এরপরেই তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে রাহুল সহ আরও ১৯ জনকে ইকোপার্ক থানার অন্তর্গত ইকো আরবান ভিলেজের বাসিন্দা ডাঃ গৌর চন্দ্র বিশ্বাস বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছিল। এমনকী অপহরণকারীরা তাঁদের বাড়িতে ফোন করতেও বাধ্য করেন। জানা যাচ্ছে, ফোনে তাঁদের জোর করে বলতে বলা যে তাঁরা ভাল আছেন।
রাহুলকে উদ্ধার করার পর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই সমস্ত তথ্য পান পুলিসের তদন্তকারী আধিকারিকরা। রাহুল কুমারের বাবার কাছে যে নম্বর থেকে ফোন করেছিল অপহরণকারীরা সেই নম্বরের সূত্র ধরেই শেষ পর্যন্ত অপহরণকারীদের হাতেনাতে ধরতে পারে পুলিস। হরিয়ানা, দিল্লি থেকেই বেশিরভাগ চাকরিপ্রার্থীকে কলকাতায় ডেকে আনা হয়। তারপরই তাঁদের আটকে রেখে পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ চাওয়া হয়। তদন্তে নেমে এমনটাই জানতে পেরেছে পুলিশ। তবে ধৃত তিনজন ছাড়াও প্রতারকদের এই ব়্যাকেটে আরও অনেকেই রয়েছে বলে পুলিস মনে করছে। ধৃতদের জেরা করে বাকিদের খোঁজে তল্লাশি করছে পুলিস।