বাংলাহান্ট ডেস্ক : গত বছর অগাস্টে আরজিকর কাণ্ডে (RG Kar) তোলপাড় হয়েছিল গোটা বাংলা। সমগ্র দেশ, বিদেশেও আলোড়ন ফেলে দেওয়া চিকিৎসক ধর্ষণ এবং খুনের মামলাকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ বলে মানেননি শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস। তাই ফাঁসি নয়, মানবতার বাণী শুনিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিলেন তিনি অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে। কিন্তু বছর ঘোরার আগেই সেই বিচারকই দিলেন ফাঁসির সাজা!

আরজিকর মামলায় (RG Kar) যাবজ্জীবন দেওয়া বিচারক শোনালেন ফাঁসির সাজা
‘মানবতার’ খাতিরে ফাঁসির সাজা এড়াতে পেরেছিল সঞ্জয় রায় (RG Kar)। এ নিয়ে বিতর্কও হয়েছিল বেশ। কিন্তু রেহাই পেল না তার ‘নেমসেক’। চিৎপুরে এক শিক্ষক দম্পতি খুনে মূল অভিযুক্তকে ফাঁসির সাজা শোনালেন সেই বিচারক অনির্বাণ দাস। অদ্ভূত ভাবে এক্ষেত্রেও অভিযুক্তের নাম সঞ্জয়। তফাৎ পদবীতে। ১০ বছর আগের একটি মামলায় মৃত্যুদণ্ড পেল অভিযুক্ত সঞ্জয় সেন।
কী নিয়ে মামলা: ২০১৫ সালের ১৫ ই জুলাই চিৎপুরে রানি দেবেন্দ্রবালা রোডে নিজেদের ফ্ল্যাটেই খুন হন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক দম্পতি প্রাণগোবিন্দ দাস এবং রেণুকা দাস। তাঁদের মাথায় রড দিয়ে আঘাত করে খুন করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় তদন্তে নেমে অভিযুক্ত হিসেবে দাস দম্পতির পরিচারক সঞ্জয়কে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।
আরো পড়ুন : গ্রেফতারির ঠিক ১ ঘন্টা আগে কী করছিলেন মনোজিৎ? কসবা কাণ্ডে মোড় ঘোরানো তথ্য এবার পুলিশের হাতে!
এতদিন জেলবন্দি ছিল সঞ্জয়: তদন্তে জানা গিয়েছিল, প্রবীণ দম্পতির খুবই বিশ্বাসী ব্যক্তি ছিল সঞ্জয়। কিন্তু বিশ্বাসের সুযোগ নিয়েই সে খুন করে তাঁদের। তারপর আলমারি খুলে টাকাপয়সা, গয়নাগাটি নিয়ে পালিয়ে যায় সঞ্জয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছিলেন, আবাসন থেকে তাকে ছুটে পালাতে দেখেছিলেন তাঁরা। মঙ্গলবার দোষী সাব্যস্ত করে তাঁকে আলিপুর আদালত।
আরো পড়ুন : বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি খোদ পুলিশের! কসবা কাণ্ডে জামিন হচ্ছে মূল অভিযুক্তের? সামনে আপডেট
বুধবার সাজা শোনানোর দিন সরকারি আইনজীবী মৃত্যুদণ্ড চেয়ে সওয়াল করেন। তিনি বলেন, একজন বৃদ্ধ দম্পতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে সঞ্জয়। এই মামলায় সর্বোচ্চ সাজা না হলে মানুষ কাউকে বিশ্বাস করতেই ভয় পাবে। পালটা সঞ্জয়ের আইনজীবী বলেন, সমগ্র বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন জেলে ছিল অভিযুক্ত। তাই তাকে ফাঁসির সাজা যেন না দেওয়া হয়। এরপর বিচারক সঞ্জয়ের সঙ্গে কথা বললে সে জানায়, তাঁর বাবা অসুস্থ, মা মারা গিয়েছেন। দুই মেয়ের বয়স ১২-১৩ বছর। তাঁকে যেন মৃত্যুদণ্ড না দেওয়া হয়। কিন্তু সব পক্ষের বক্তব্য শুনে ফাঁসির সাজাই ঘোষণা করেন বিচারক অনির্বাণ দাস। উপরন্তু এই ঘটনাকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।