আজ থেকে কি কি থাকছে খোলা আর কোন কোন ক্ষেত্রে রয়েছে বাধা-নিষেধ? দেখুন তালিকা

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যে চলছে কোভিডের বাড়বাড়ন্ত। প্রতিদিনই আক্রান্ত হচ্ছেন কুড়ি হাজারেরও বেশি মানুষ। গত ২৪ ঘন্টায় লড়াইয়ে পরাজিত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন ১৩৬ জন। অর্থাৎ বাংলা এখন জল বইছে বিপদসীমার উপর দিয়ে। রাজ্যে সম্পূর্ণ লকডাউন নয় বরং আংশিক লকডাউনের পক্ষপাতী তিনি, ক্ষমতায় ফেরার পরে কথা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু রোজদিন যেভাবে লাগামছাড়া ভাবে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। লকডাউন ছাড়া আর উপায় নেই। ইতিমধ্যেই বিপদজনক পরিস্থিতিতে থাকা রাজ্যগুলির মধ্যে অন্যতম হয়ে উঠেছে। এর আগেই ১০ শতাংশের বেশি সংক্রমণের হার রয়েছে এমন রাজ্যগুলিকে লকডাউনের পরামর্শ দিয়েছিলেন আইসিএমআর প্রধান বলরাম ভার্গব। এবার একপ্রকার তার কথার সূত্র ধরেই, লকডাউনের পথে হাঁটল রাজ্য। রেল বন্ধ করা হয়েছিল আগেই এবার ৩০ মে অব্দি বন্ধ করে দেওয়া হলো সরকারি-বেসরকারি সমস্ত অফিস। আগের মতোই ছাড় দেওয়া হয়েছে কেবলমাত্র জরুরী পরিষেবার ক্ষেত্রে। আসুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কোন কোন ক্ষেত্রে ছাড় দিল রাজ্য সরকারঃ

ওষুধের দোকান ও চশমার দোকানঃ যেভাবে কোভিড থাবা বসাচ্ছে রাজ্যে। তাতে সাধারণ উপসর্গ দেখা দিচ্ছে বেশিরভাগ মানুষের মধ্যেই আর এক্ষেত্রে সবচেয়ে জরুরী পরিষেবা হলো ওষুধ। তাই ওষুধের দোকান এবং চশমার দোকান খোলা রাখার ক্ষেত্রে ছাড় দিল রাজ্য সরকার।

বাজার এবং মুদির দোকানঃ বাজার এবং মুদির দোকানের ক্ষেত্রে নিয়ম হয়েছে প্রায় একই। আংশিক লকডাউনের সময় মুদির দোকান এবং অন্যান্য খুচরা দোকানদানির ক্ষেত্রে সকালবেলা ৭ টা থেকে ১০টা এবং বিকেলবেলা ৫টা থেকে ৭টা অবধি দোকান খোলা রাখার অনুমতি ছিল। কিন্তু বর্তমানে কেবলমাত্র সকালবেলাই ৭টা থেকে ১০ টা অবধি দোকান খুলতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। বাজারের ক্ষেত্রেও নিয়মটা একই।

ব্যাঙ্ক/ এটিএমঃ ব্যাংক, এটিএমের ক্ষেত্রে গতবছর লকডাউনে নিয়ম ছিল শিথিলযোগ্য। জরুরী পরিষেবা হিসেবে ব্যাংক খোলা রাখার অনুমতি ছিলো সবসময়ই। কিন্তু এবছর নিয়ম বদলালো মমতা সরকার। সকাল দশটা থেকে দুটোর মধ্যেই মেটাতে হবে ব্যাংকের কাজ। যদিও এটিএম এর ক্ষেত্রে কোনো বাধা-নিষেধ নেই।

পেট্রোল পাম্প ও অটো রিপেয়ারের দোকানঃ পেট্রোল পাম্প এবং গাড়ি সারাইয়ের দোকানের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ছাড় দিয়েছে রাজ্য। যদিও রাস্তায় নেই বাস বা অন্যান্য পাবলিক ট্রান্সপোর্ট। তবে ব্যক্তিগত গাড়ির ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে। আর সেই কারণেই খোলা থাকবে পেট্রলপাম্প এবং গাড়ি সারাইয়ের দোকান গুলি।

ই-কমার্স, হোম ডেলিভারিঃ বেশিরভাগ সময়ই দোকানদারি বন্ধ থাকায় মূলভিত্তি হয়ে উঠেছে অনলাইন পরিষেবাগুলি। সেক্ষেত্রে জোমাটো, ফ্লিপকার্ট ও অন্যান্য অনলাইন ই-কমার্স সংস্থাকে সম্পূর্ণ ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।

মিষ্টির দোকানঃ মিষ্টির দোকানের ক্ষেত্রে এবারের লকডাউনে ছাড় রয়েছে আংশিক। দশটা থেকে পাঁচটা অবধি দোকান খোলা রাখতে পারবেন ব্যবসায়ীরা।

চা বাগানঃ কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ রয়েছে চা বাগানের কর্মীদের ক্ষেত্রেও। ৫০% কর্মী নিয়ে রোটেশন পদ্ধতিতে কাজের অনুমতি দেয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে।

জুট মিলঃ জুট মিলের ক্ষেত্রেও কাজ একবারে বন্ধ করার পক্ষপাতি নয় রাজ্য সরকার। এক্ষেত্রে অবশ্য কাজ করার অনুমতি মিলেছে ৩০% কর্মীর।

ট্যাক্সি ও জরুরি ভিত্তিক পরিষেবাঃ এমনিতে ট্যাক্সি বন্ধ হলেও জরুরী ভিত্তিতে ট্যাক্সি চালানোর অনুমতি থাকছে চালকদের।

বিয়ে বাড়ি ও অন্যান্য অনুষ্ঠানঃ বর্তমানের লকডাউন এর মতোই বিবাহ ও অন্যান্য অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে ৫০ জন অতিথিকে ছাড় দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে।

বর্তমান কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে রাজ্য সরকারের তরফে আজ এই বিধি-নিষেধ ঘোষণা করেন মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী রবিবার অর্থাৎ কাল থেকে এই নিয়ম চালু হতে চলেছে গোটা রাজ্যে।

Abhirup Das

সম্পর্কিত খবর