ভারতের শুরু হলো ‘Sputnik V”-র টিকাকরণ, হায়দ্রাবাদের পর প্রথম ডোজ পাবে কলকাতা

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দেশে এই মুহূর্তে আতঙ্কজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে কোভিড। গত ২৪ ঘন্টাতেও আক্রান্ত হয়েছেন দু’লক্ষ একাশি হাজারেরও বেশি মানুষ। সংক্রমণের পরিমাণ কিছুটা কমলেও তা যে এখনও যথেষ্ট বেশি তা বলাই বাহুল্য। কোভিড থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হল আগে থেকে টিকাকরণ। কিন্তু টিকার উৎপাদন নিয়েও সমস্যা রয়েছে যথেষ্ট স্বাস্থ্যমন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী এত তৎপরতার পরেও এখনো পর্যন্ত টিকাকরণ হয়েছে ১৮ কোটি ২৯ লক্ষ ২৬ হাজার ৪৬০ জনের। এই পরিমান এমনিতে বেশ বড় হলেও আমাদের দেশের বিপুল জনসংখ্যার তুলনায় প্রায় কিছুই নয়। সারাদেশের মানুষ যাতে দ্রুত টিকা পায় সেই কারণে টিকার ফর্মুলা শেয়ার করতে এর আগে কেন্দ্র সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। সমস্যা সবটা না মিটলেও টিকাকরণের ক্ষেত্রে কিছুটা আশার আলো তৈরি হলো রাশিয়ার স্পুটনিক ভিকে কেন্দ্র করে। হায়দ্রাবাদের রেড্ডিস ল্যাবের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সাধারণ মানুষের কাছে এই টিকা পৌঁছে দেবে অ্যাপেলো হাসপাতাল। প্রাথমিকভাবে দেওয়া হবে প্রায় দেড় লক্ষ ডোজ। গত ১৪ মে এই টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয় ডক্টর রেড্ডিস ল্যাবের আধিকারিক দীপক শাপরাকে। কোভ্যাকসিন এবং কোভিশিল্ডের মত দেশীয় টিকার পাশাপাশি এবার সোমবার থেকে সাধারণ মানুষের জন্য দেওয়া শুরু হল স্পুটনিক’ ভিও। সোমবার হায়দ্রাবাদে এই টিকাকরণ শুরু হয়। মঙ্গলবার টিকা দেওয়া হবে বিশাখাপত্তনমে।

প্রাথমিক ভাবে রয়েছে রাশিয়া থেকে দেশে আসা টিকার প্রায় দেড় লক্ষ ডোজ। তবে এবার তা উৎপাদন হবে ভারতেই৷ এই দায়িত্ব নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছে রেড্ডিস ল্যাব৷ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, হায়দ্রাবাদের এই ল্যাবের সঙ্গেই যৌথ উদ্যোগে করোনা মুক্তির ওষুধ ২-ডিজিও তৈরি করছে ডিআরডিও। যার প্রথম ব্যাচ আজই আসার কথা বাজারে। অ্যাপোলো হাসপাতালের প্রেসিডেন্ট কে হরিপ্রসাদ বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “আপাতত বেসরকারি ক্ষেত্রেই স্পুটনিক’ ভি টিকাটি দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে ডক্টর রেড্ডিসের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে অ্যাপেলো হাসপাতাল।” তিনি জানিয়েছেন দেশের প্রায় ৬০টি জায়গায় টিকা দেওয়া শুরু হচ্ছে। হায়দ্রাবাদ ও বিশাখাপত্তনমের পর টিকা দেওয়া হবে কলকাতা, মুম্বাই, দিল্লি, বেঙ্গালুরু, পুনে আমেদাবাদ ও চেন্নাইতে। তিনি বলেন, “আমরা আশা রাখছি এই উদ্যোগে টিকার ঘাটতি মেটানো যাবে এবং দেশের বড় অংশের মানুষকে খুব দ্রুত টিকার ডোজ দেওয়া সম্ভব হবে। ”

যদিও এখনই টিকার দাম অনেকটাই বেশি। ৫% জিএসটি থাকার কারণে টিকার প্রথম ডোজ নিতে গেলে খরচ হবে প্রায় ৯৯৫ টাকা ৪০ পয়সা। তবে সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, আগামী দিনে ভারতে উৎপাদন হলে টিকার দাম কমতে পারে অনেকটাই। দেশজুড়ে রেড্ডিস ল্যাবের প্রায় ছটি ইউনিট শুরু করবে টিকা তৈরির কাজ। প্রথম দু’টি ইউনিটের টিকা সর্বসাধারণের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া যাবে জুলাই মাসের মধ্যেই। অন্তত এমনটাই মনে করছেন অধিকর্তারা। এই মুহূর্তে দেশে টিকার উৎপাদন করছে ভারত বায়োটেক এবং সেরাম ইনস্টিটিউট। প্রবল চেষ্টার পরেও চাহিদামত টিকা উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না কিছুতেই। কারণ এক মাসে মাত্র ছয় থেকে সাত কোটি টিকা উৎপাদন করতেই সক্ষম এই দুই সংস্থা। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানিয়েছিলেন এভাবে চললে সারা ভারতকে টিকা দিতে সময় লেগে যাবে প্রায় দু’বছর। এখন স্পুটনিক’ ভি বাজারে আশায় চাহিদার ঘাটতি কিছুটা কমবে। ফের একবার কড়া লকডাউনের জেরে এই মুহূর্তে আবারো ধাক্কা খেলো অর্থনীতি। মানুষের জীবনকে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরাতে দ্রুত টিকাকরণ তাই একান্ত জরুরী।


Abhirup Das

সম্পর্কিত খবর