বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বাংলাদেশ সহ অন্যান্য দেশ থেকে প্রতিবছরই বেশ কিছু মানুষ ইটালি, মালটা ইত্যাদি দেশে পাড়ি দেন জীবিকার সন্ধানে৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভালো না হওয়ায়, অথবা কখনও কখনও গৃহযুদ্ধের কারণে বিদেশে পাড়ি দেন এ ধরণের মানুষরা। কিন্তু দালাল চক্রের হাতে পড়ে রাবারের ভেলা কিংবা ছোট ছোট জেলে নৌকায় দুরন্ত ভূমধ্য সাগরের বুকে ভেসে পড়েন তারা। যার জেরে প্রায়শই ঘটে দুর্ঘটনা। একের পর এক স্বপ্নের সলিল সমাধি দেখে ভূমধ্য সাগরের নীল জল। ফের সামনে এল এ রকমই এক ঘটনা। গোপন পথে নৌকায় বিদেশ পালাতে গিয়ে নৌকাডুবি হয়ে মৃত্যু হলো বেশকিছু বাংলাদেশিসহ প্রায় ৪৩ জনের।
জানা গিয়েছে শুধু বাংলাদেশেই নয় এর মধ্যে ছিলেন ভারতের তিন জন নাগরিকও। আপাতত এই দুঃসহ বিপদ থেকে ৮৪ জনকে উদ্ধার করেছে তিউনিসিয়ার রেড ক্রিসেন্ট। জানা গিয়েছে, শনিবার নৌকাডুবির ফলে ভয়ংকর দুর্ঘটনার মুখে পড়েন যে সমস্ত অভিযাত্রীরা তাদের বেশিরভাগই বাংলাদেশ, মিশর, সুদান এবং এরিত্রিয়ার নাগরিক। লিবিয়ার উত্তর পশ্চিম উপকূল হয়ে ইতালির দিকে যাত্রা করেছিল নৌকাটি।
বেশিরভাগ সময়ই এধরনের ক্ষেত্রগুলিতে দালালরা বিদেশের লোভ দেখিয়ে অভিযাত্রীদের কাঠের নৌকা, জেলে নৌকা কিংবা রাবারের ডিঙায় তুলে দেয়। ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত মানুষ নৌকায় থাকায় ভূমধ্য সাগরের প্রবল ঢেউয়ের সঙ্গে পেরে ওঠেনা নৌকাগুলি। যার জেরে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সলিল সমাধি ঘটে। গত এপ্রিল মাসেই তিউনিসিয়ার উপকূলে ভূমধ্যসাগরে পাড়ি দিতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল ৪০ জনের। উত্তর আফ্রিকার উপকূল থেকে ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ইউরোপ পৌঁছাতে গিয়ে এই বছরে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৮৬৬ জনের।
কিন্তু তাও ইউরোপ যাত্রী মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ইটালি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মতে এবছর এই দেশগুলি থেকে ইটালি পৌঁছেছেন ১৯ হাজারেরও বেশি মানুষ। ফের একবার এই দুঃসাহসিক যাত্রায় মৃত্যু হল ৪৩ জন নাগরিকের। রেড ক্রিসেন্টের কর্মকর্তা মঙ্গি স্লিম সংবাদমাধ্যমকে জানান, ”লিবিয়ার জুওয়ারা থেকে ইউরোপের দিকে যাত্রা করা অভিবাসীদের ৮৪ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের জারজিসের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রাখা হয়েছে।”
এর আগে গত রবিবারও লিবিয়া থেকে ইউরোপ যাওয়ার পথে অভিবাসন প্রত্যাশীদের একটি নৌকা ভূমধ্যসাগরে ভেঙে পড়ে। যার জেরে সমস্যায় পড়েছিলেন প্রায় ১৭৮ জন। সেবারও তাদের উদ্ধার করে তিউনিসিয়ার নৌ বাহিনী।