যার মামলার জেরে বাজি পোড়ানো নিষিদ্ধ বাংলায়, চিনে নিন সমাজকর্মী রোশনি আলিকে

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দীপাবলি, ছট, কিম্বা গুরু নানকের জন্মদিনের উৎসব পালন করতে হবে বাজি না পুড়িয়েই এমনই নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারক সব্যসাচী ভট্টাচার্য। শুক্রবার আদালতের পক্ষ থেকে জারি করা হয়েছে এই নির্দেশ। বিচারক সব্যসাচী ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, বৃহত্তর মানুষের স্বার্থের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত, প্রস্তুতকারক সংস্থা বিক্রেতা সকলের কথাই তো ভাবতে হবে। করোনার তৃতীয় ঢেউ আসার আশঙ্কা এখনও পুরোপুরি নস্যাৎ হয়ে যায়নি। তাই সকলের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর তাই শুধুমাত্র মোমবাতি জ্বালিয়েই এবারও পালন করতে হবে উৎসব।

কলকাতা হাইকোর্টের এই রায়ের নেপথ্যে ছিলেন রোশনি আলি। বাজির ধোঁয়া ও দূষণে বয়স্কদের সাথে সাথে শিশুদেরও শ্বাসকষ্ট হতে পারে বলেই আদালতের কাছে এই আর্জি জানিয়েছিলেন পরিবেশকর্মী রোশনি। তার এই আর্জি মেনে নিয়েছে সব্যসাচী ভট্টাচার্য এবং বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চও। কে এই রোশনি আলী? তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট একটু ঘাটলেই জানা যায় তিনি একজন প্রাক্তন সাংবাদিক। বর্তমানে পরিবেশ কর্মী হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেন রোশনি।

এবারেই অবশ্য প্রথম নয় ২০১৫ সালে কালীপূজায় বাজি ফাটানোকে কেন্দ্র করেও সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছিলেন তিনি। এছাড়া ধাপার মাঠে আবর্জনা পোড়ানোর ফলে যে দূষণ হয় তা নিয়েও কথা বলতে দেখা গিয়েছে তাকে। তার মতে যারা বাজি পোড়ানো তারা ‘সার্টিফায়েড ইডিয়টস’। গতবছর গণেশ পূজার সময়ও তাকে প্রতিবাদে সরব হতে দেখা গিয়েছে। পূজার বিপক্ষে তার বক্তব্য নয়, কিন্তু তার মতে সারাবছর হাতিদের কোন গুরুত্ব না দিয়ে একদিন এই পূজা আসলে ‘ভন্ডামি’। রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও কখনো কখনো তার পোস্টে দেখা গিয়েছে নরেন্দ্র মোদির সমালোচনা এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর প্রশংসা।

images 2021 10 30T174352.654

নিজের সম্পর্কে বলতে গিয়ে রোশনি জানান, “আমার বাবা ছিলেন একজন মুসলিম, আমার মা একজন হিন্দু। আমার যাবতীয় শিক্ষায় ভীষণ ভাবে খ্রিস্টান প্রভাব রয়েছে। পাকিস্তান ও বাংলাদেশে আমার একজন করে পিসি রয়েছেন আর আমার দিদিমা ছিলেন ব্রিটিশ।” একই সঙ্গে তার নিজের মতাদর্শ সম্পর্কে বলতে গিয়ে রোশনি লেখেন, “আমি রুপোর তৈরি বুদ্ধের পেনডেন্ট পরি গলায়, আবার আমার পাসপোর্ট বলে আমি মুসলিম। আমি প্রতি সপ্তাহে একটি কালী মন্দিরে যাই, কিন্তু আমার ‘আলি’ পদবিকেও ভালবাসি কারণ, সেটি বাবার থেকে পাওয়া।”

 

Abhirup Das

সম্পর্কিত খবর