টাকা যেত আমলা, নেতা-মন্ত্রীদের কাছে! স্বীকারোক্তি অর্পিতার! SSKM-র ICU-তে পার্থ

বাংলাহান্ট ডেস্ক : ২২ জুলাই থেকেই রাজ্য তোলপাড় করছে ইডি (ED)। একটানা ২৭ ঘণ্টার ম্যারাথন জেরার পর গতকাল, শনিবার সকালেই গ্রেফতার করা হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা বর্তমান শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে (Partha Chatterjee)।

এর পরই সল্টলেকে সিজিও কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার সময় মন্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন, মাঝপথেই গাড়ি ঘুরিয়ে জোকা ইএসআই হাসপাতালে পার্থকে নিয়ে যান ইডির আধিকারিকরা। আদালত আগেই নির্দেশ দিয়ে রেখেছিল, এসএসকেএমে কোনও ভাবেই নিয়ে যাওয়া যাবে না মন্ত্রীকে। ইএসআই হাসপাতালে পার্থর স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়। তেমন কোনও অসঙ্গতি মেলেনি তাঁর স্বাস্থ্যে। তারপর পার্থকে পেশ করা হয় ব্যাঙ্কশাল আদালতে। তবে রাতে সেই এসএসকেএম (SSKM) হাতপাতালেই ভর্তি হলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

শুক্রবার সকাল থেকে একটানা ২৭ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদের সময়েও পার্থ চট্টোপাধ্যায় দু-এক বার অশুস্থ বোধ করেন বলে জানা যায়। এমনকি শুক্রবার বিকেলে পার্থর বাড়িতেও পৌঁছন এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

জানা যাচ্ছে, গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ এসএসসি দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায় পৌঁছে যান এসএসকেএম-এ। হাসপাতাল সূত্রে খবর কার্ডিওলজি বিভাগের এমার্জেন্সি-তে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখানে পরীক্ষার করে তাঁকে ভর্তি করানো দরকার বলে জানান চিকিৎসকরা। এখন কার্ডিওভাস্কুলার সায়েন্সেস-এর আইসিসিইউতে (ICCU) চিকিৎসা চলছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। তাঁকে পরীক্ষা করে দেখেন নেফ্রোলজি, কার্ডিয়োলজি, এন্ডোক্রিনোলজির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। চিকিৎসকদের ছ’জনের একটি দলও গঠন করা হয়েছে পার্থর চিকিৎসার জন্য।

জানা গেছে, শনিবার আদালতে শুনানি চলাকালীন সময়ে পার্থের আইনজীবী তাঁর শারীরিক অসুস্থতার কারন দেখিয়ে পার্থকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তির আবেদন করা হয়। ইডির আইনজীবী তখন পাল্টা আলিপুর কমান্ড হাসপাতাল বা জোকা ইএসআই হাসপাতালে পার্থকে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেন। কিন্তু বিচারক শেষ পর্যন্ত এসএসকেএম হাসপাতালেই পার্থকে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। এর পরেই আদালত থেকে সোজা এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় পার্থকে।

অপরদিকে শনিবার সকালেই পার্থ ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কেও গ্রেফতার করেছে ইডি। তাঁর বাড়ি থেকে মিলেছে ২১ কোটি ২০ লক্ষ নগদ টাকা ও ৭৯ লক্ষ টাকার গয়না। বিরাট অংকের ওই টাকা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ই তাঁকে রাখতে দিয়েছিলেন বলে দাবি করে অর্পিতা। ইডি জানায়, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া ২১ কোটি টাকা এসেছে নবম থেকে দ্বাদশ ও প্রাইমারি শিক্ষকের চাকরি বিক্রি করে।

শুধু তাই নয়, ইডির আরও দাবি, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে নিয়মিত অর্পিতার যোগাযোগ ছিল। নগদ ছাড়াও অর্পিতার বাড়ি থেকে যে ২০টি মোবাইল ফোন মিলেছে তা কী কাজে ব্যবহৃত হতো তাও খতিয়ে দেখছে ইডি। বলেও জানিয়েছে ইডি।

অর্পিতার বয়ানের ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। জানা যাচ্ছে, গতকাল গ্রেফতার হওয়ার পর অর্পিতাকেও নিয়ে যাওয়া হয় জোকার ইএসআই হাসপাতালে। সেখানেই টানা তিন ঘণ্টা চলে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা। সেখান থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে। আজ, রবিবারই আদালতে তোলা হবে তাঁকে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে।


Sudipto

সম্পর্কিত খবর