বাংলা হান্ট ডেস্ক: একটা সময়ে তিনি ছিলেন পাথর খাদানের কর্মী। কিন্তু, আজ তাঁর বৈভবের শেষ নেই। এমনকি, তাঁর কয়েক কোটি টাকার বাড়িগুলিকে দেখলেও অবাক হবেন যে কেউই। ঠিক সেই রকমই তিনটি বাড়িতে এবার তল্লাশি চালাল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। আর যিনি এই প্রাসাদোপম বাড়িগুলির মালিক তিনি হলেন টুলু মণ্ডল। পেশায় পাথর ব্যবসায়ী টুলুর বয়স হবে ৫০-এর কাছাকাছি। যদিও, রাজনীতির মঞ্চেও তাঁর যোগাযোগ পরিলক্ষিত হয়েছে। তবে, এবার বীরভূমের (Birbhum) তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের “অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ” হিসেবে পরিচিত টুলুকেই খুঁজছেন ইডি আধিকারিকেরা।
জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত টুলুর তিনটি বাড়ির খোঁজ মিলেছে। শান্তিনিকেতনের সুভাষপল্লির একটি প্রাসাদোপম বাড়ি ছাড়াও সিউড়ির সাজানোপল্লির বাড়িটিতেও তল্লাশি চলে বুধবার। যদিও, সেই বাড়িটি তালাবন্ধ অবস্থায় ছিল। সেই তালা ভেঙেই বাড়ির ভেতরে ঢোকেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। তবে, সুভাষপল্লির বাড়িটির ভেতরে ঢুকেই অবাক হয়ে যান সকলে। মোট তিনতলা ওই বাড়িটিতে ঝুল বারান্দা সহ প্রতিটি ঘরে রয়েছে এসির ব্যবস্থা। এমনকি, রয়েছে লিফট্ও। যদিও, টুলুর বাড়িতে হানা দেওয়া হলেও তিনি আপাতত “বেপাত্তা” রয়েছেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বর্তমানে এসএসসি নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পর একাধিক জায়গায় তাঁর প্রচুর সম্পত্তি আছে বলে দাবি করেছে তদন্তকারী সংস্থা। আর সেই তালিকায় একদম প্রথমেই রয়েছে শান্তিনিকেতন। এমতাবস্থায়, বুধবার ইডি সেখানে অভিযান চালানোর আগে টুলুর বাড়িতে হানা দেয়। যদিও, টুলুর নাম একটি অন্য মামলায় উঠে এসেছে।
মূলত, কয়লা ও গরুপাচার কাণ্ডে তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে টুলুর বাড়ি ও অফিসে অভিযান চালায় তদন্তকারী দল। এদিকে, ইতিমধ্যেই এই মামলায় অনুব্রত মন্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। পাশাপাশি, গ্রেফতার করা হয়েছে তৃণমূল নেতার দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকেও। জানা গিয়েছে, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই পাওয়া গিয়েছে টুলুর নাম। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বীরভূমে বৈধ পাথর খাদানের সংখ্যা হল মাত্র ছ’টি। তবে অবৈধভাবে খাদান চলে প্রায় ৪০০ টি।
এমতাবস্থায়, প্রথম জীবনে পাথর খাদানের কর্মী হিসেবে কাজ করলেও পরবর্তীকালে একের পর এক খাদানের মালিক হন “অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ” টুলু। এমনকি, পরিচিতরা বলেন, যে ‘‘টুলুর দৈনিক কামাই হল কোটি টাকা।’’ এমতাবস্থায়, ইডি আধিকারিকরা সেই টুলুর খোঁজ পেতেই অভিযান চালাচ্ছেন। জানিয়ে রাখি, পাথর ব্যবসা ছাড়াও একটি পেট্রোল পাম্পেরও মালিক হলেন টুলু। মহম্মদবাজারের ওই পেট্রোল পাম্পে হানা দিয়ে সেটি সিল করে দেয় ইডি।