বাংলাহান্ট ডেস্ক : অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mandal) নিজাম প্যালেসে হাজির করানোটাই যেন এক চ্যালেঞ্জ সিবিআই-র (CBI) কাছে। গত সোমবার থেকেই বাংলায় চলছে অনুব্রত নাটক। এসএসকেএম ছাড়পত্র দিলেও বোলপুর হাসপাতালের চিকিৎসদের পরামর্শকে সামনে রেখে বুধবারও সিবিআই-এর জেরা এড়াতে চাইছেন অনুব্রত। কিন্তু এরই মাঝে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন বোলপুর হাসপাতালের চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারী। তিনি দাবি করেন তাঁকে একরকম জোর করেই অনুব্রত মণ্ডলের বেডরেস্ট লেখানো হয়।
গত সোমবার এসএসকেএমের চিকিৎসকরা অনুব্রতকে পরীক্ষা করেন। তাঁরা জানান, তৃণমূল নেতার কিছু শারীরিক সমস্যা থাকলেও হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন নেই। ছেড়ে দেওয়া হয় তাকে। কিন্তু সিবিআই দফতরে না গিয়ে অনুব্রত সোজা পালিয়ে আসেন বোলপুর। এরপরই মঙ্গলবার ডাঃ চন্দ্রনাথ অধিকারী ও একজন নার্স পৌঁছে যান অনুব্রতর বাড়ি। তাঁকে পরীক্ষা করে জানান, অনুব্রত মণ্ডলের বেশ কিছু গুরুতর সমস্যা রয়েছে। আপাতত বেশ কিছুদিন বিশ্রামে থাকা দরকার তাঁর। এবার প্রশ্ন ওঠে দুই হাসপাতালের দুই চিকিৎসকের আলাদা পরামর্শ কেন?
এইপরই বিস্ফোরক মন্তব্য করেন চিকিৎসক অধিকারী। তিনি জানান, বোলপুর হাসপাতালের সুপার বুদ্ধদেব মুর্মু তাঁকে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ি গিয়ে চিকিৎসার নিদের্শ দেন। তিনি প্রকাশ্যে আনেন একটি অডিও ক্লিপ। সেখানে চন্দ্রনাথ অধিকারীর সঙ্গে হাসপাতাল সুপারের কথোপকথন রয়েছে। সেখানে শোনা যায়, ইডি-সিবিআই টানাপোড়েনের মাঝে অনুব্রতকে বাড়ি গিয়ে চিকিৎসা করতে বিশেষ রাজি ছিলেন না ডাঃ অধিকারী। কিন্তু সুপারের আদেশে যেতে বাধ্য হন তিনি। এমনকী হাসপাতালের প্যাডও দেওয়া হয়নি তাঁকে। সাদা কাগজেই যাবতীয় পরামর্শ লিখে দেন ওই চিকিৎসক।
চন্দ্রনাথ অধিকারীর বলেন, ‘অনুব্রত মণ্ডলের কিছু সমস্যা রয়েছে তবে চাইলেই তবে তা নিয়ে বিশেষ চিন্তার তেমন কিছুই নেই।’ তাহলে তিনি কেন লেখেন বেড রেস্টের কথা? চিকিৎসক জানান, অনুব্রত মণ্ডলই তাঁকে বলেছিলেন বেড রেস্ট লিখতে। তিনি বোলপুরে থাকেন, তাই অনুব্রত মণ্ডলের নির্দেশ অমান্য করার ক্ষমতা তাঁর নেই।
এই ঘটনা সামনে আসতেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন বামনেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘হাজিরা এড়াবেন কি না সেটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু একজন ডাক্তারকে তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে কেষ্টর নির্দেশে বলতে হল, উনি অসুস্থ। কারণ, উনি বোলপুরে থাকেন। ওই ডাক্তারের প্রতি আমার সহানুভূতি রইল।’ রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘অনুব্রত বিভিন্ত ভাবে বাঁচার চেষ্টা করে চলছে। তদন্তকারীদের আদালতে যাওয়া দরকার। হাসপাতালকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এভাবে চলতে পারে না।’ এখন দেখার আদৌও কেষ্ট বুধবার নিজাম প্যালেসে উপস্থিত হন কিনা।