বাংলাহান্ট ডেস্ক : ‘দোস্ত দোস্ত না রাহা!’, মনের দুঃখে পিকে (PK) যদি এই গান গাওয়া শুরু করেন, তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। আর হবে নাি বা কেন? নাম না করেই ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরকে (Prashant Kishor) কটাক্ষ করলেন তাঁর এক সময়ের বন্ধু তথা বর্তমান বিহারের (Bihar) মুখ্যমন্ত্রী নিতিশ কুমার (Nitish Kumar)। বুধবার রাতে বিরোধী জোটে পিকের ভূমিকা সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তরে নিতিশ বলেন, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কাজ করাটাই ওঁর ব্যবসা। বিহারে আমাদের জন্য ওঁর কিছুই করার নেই।’
এর পরেই পিকে সম্পর্কে নিতিশ বলেন তিনি ‘প্রচার বিশেষজ্ঞ’। নিতিশ আরও বলেন, ‘উনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিবৃতি দিচ্ছেন। হতে পারে এর পর তিনি বিজেপির সঙ্গে থাকতে চান। হতে পারে, তিনি তাদেরও সাহায্য করতে চান।’ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে নিতিশের এই মন্তব্য স্পষ্ট যে আগামী লোকসভা নির্বাচনে পিকের ‘সাহায্য’ নেওয়ার কোনও প্রয়োজনই মনে করছেন না তিনি।
বিজেপির সঙ্গে ছেড়ে নিতিশ কুমার আরজেডি-কংগ্রেস-বামেদের ‘মহাগঠবন্ধনে’ যোগ দিয়ে বিহারে ক্ষমতার পালাবদল ঘটনার। এর পরই পিকে মন্তব্য করেন, ‘বিহারে শুধু নেমপ্লেটগুলো বদলেছে। সরকারের কার্যকলাপে কোনও পরিবর্তন হয়নি।’ সেই মন্তব্য নিয়ে নিতিশ বলেন, ‘২০০৫ সাল থেকে বিহারে যা কাজ হয়েছে সে সম্পর্কে পিকে কতটুকু জানেন?’
সম্প্রতি পিকে নিতিশ সরকারের প্রতিশ্রুতিকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘আগামী এক-দু’বছরে মহাগঠবন্ধন সরকার যদি ১০ লক্ষ চাকরি দিতে পারে, তা হলে আমি ‘জন সূরয যাত্রা’ প্রত্যাহার করে সরকারকে সম্পূর্ণ সমর্থন জানাব। আসলে মানুষকে বোকা বানাতে এই চমক দেওয়া হয়েছে। ১০ লক্ষ মানুষকে বেতন দিতে কোথা থেকে টাকা পাবেন ওঁরা? যাঁরা এই মুহূর্তে সরকারি চাকরি করছেন, তাঁদেরই টাকা দিতে অক্ষম এই সরকার।’ মনে করা হচ্ছে, সেই মন্তব্যের জেরেই নিতিশের এই ক্ষোভ।
এই প্রসঙ্গে বলা যায়, ২০১৫ সালে বিহারের বিধানসভা ভোটে নিতিশ কুমারের নেতৃত্বে মহাগঠবন্ধনের জয়লাভে পিকে বড় ভূমিকা নেন। এর পর জেডি (ইউ)-তে যোগ দিয়ে সহ-সভাপতিও নির্বাচিত হন তিনি। কিন্তু এর পরই ২০১৭-য় নিতিশ আবার এনডিএতে যোগ দেওয়ার পরই দু’জনের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। নিতিশের বিজেপি-ঘনিষ্ঠতা নিয়ে ‘নীতিগত’ প্রশ্ন তুলে এবং সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর বিরোধিতা করে ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে জেডি(ইউ) থেকে বহিষ্কৃতও হন পিকে। তারপর মাঝেমধ্যেই প্রকাশ্যে নিতিশ কুমারের সমালোচনা করতে দেখা যায় প্রশান্ত কিশোরকে।