বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ‘দুর্গাপুজোয় (Durga Puja) মানুষ যখন রাস্তায় বের হয়, তখন আমি পাহারাদার হিসেবে থাকি’, গতকাল ঠিক এই ভাষাতেই নিজ পরিচয় দিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। একইসঙ্গে তৃণমূল মন্ত্রী সুজিত বসুর (Sujit Basu) পাশাপাশি অন্যান্য আধিকারিকদেরও সতর্ক করে তিনি বলেন, “পুজোর সময় যাতে কোনো রকম অসুবিধা সৃষ্টি না হয়, তা দেখার দায়িত্ব সকলের।”
দুর্গাপুজো আসন্ন; মাঝে আর কয়েকটা দিন বাকি থাকলেও গতকাল থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে উদ্বোধন। গতকাল শ্রীভূমি, টালা প্রত্যয় এবং আরও একটি পুজো মণ্ডপের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে আগামী সপ্তাহে পুজো উদ্বোধনে কলকাতায় আসার কথা রয়েছে কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের।
উল্লেখ্য, গতকাল শ্রীভূমিতে পুজো প্যান্ডেলের উদ্বোধন করতে পৌঁছে নিজেকে মানুষের পাহারাদার বলে পরিচয় দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে পুজোর সময় কোনরকম বিশৃঙ্খলা কিংবা অনিয়ম না হওয়ার সতর্কতাও দেন মুখ্যমন্ত্রী। গত দু’বছর করোনার প্রকোপের কারণে জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে দুর্গাপুজো আয়োজন করা না হলেও এবছর মহামারির প্রভাব কমায় ধুমধাম করেই পালন করা হতে চলেছে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব।
বলে রাখা ভালো, গত বছর বুর্জ খালিফার আদলে মণ্ডপ তৈরি হয় শ্রীভূমিতে। এক্ষেত্রে পুজোর নিয়ম মানা তো দূরের কথা, পরবর্তীত শ্রীভূমি পুজো প্যান্ডেলের লাইটিংয়ের জন্য সমস্যায় পড়তে হয় বিমান চালকদের; যা নিয়ে একাধিক কথাও শুনতে হয় রাজ্যকে। এ বছর যাতে সেরকম কিছু না হয়, তার জন্য গতকালই তৃণমূল মন্ত্রীসহ অন্যান্য আধিকারিকদেরও সতর্ক করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “একটাই অনুরোধ করছি, পুজোর সময় রাস্তা যেন বন্ধ না হয়। মানুষ প্লেন ধরতে সক্ষম হলো না কিংবা কোথাও যেতে অসুবিধা হলো, সেই রকম ঘটনা যেন না ঘটে। একটা ক্লাবের কর্তা বলেই হয়ে গেল, সেটা করা যাবে না। পুজোর সময় যাতে সকল রাস্তা সচল রাখা যায়, তা দেখতে হবে।”
পরবর্তীতে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি পুজোর সময় ছুটি কাটাই না। মানুষ যখন রাস্তায় বের হয়, তখন আমি তাদের পাহারাদার হিসেবে থাকি। সব খবর রাখি। বিধাননগরে নতুন কমিশনার হয়ে এসেছে গৌরব। দেখে নেবে সবকিছু। নাহলে আমি ওকে দেখবো।”
প্রসঙ্গত, এ বছর বাংলার দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কোর তরফ থেকে হেরিটেজ সম্মান প্রদান করা হয়েছে। এক্ষেত্রে দুর্গোৎসবের সময় যাতে সবকিছু ভালো মতোই ঘটে, তা সুনিশ্চিত করার জন্যই মুখ্যমন্ত্রীর এহেন বক্তব্য বলে মত বিশেষজ্ঞদের। পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে যেভাবে বাংলায় একের পর এক দুর্নীতি মামলায় জেরবার হয়ে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস, সেক্ষেত্রে নিজেকে মানুষের ‘পাহারাদার’ আখ্যা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যেন বোঝানোর চেষ্টা করলেন যে, অতীতে যাই হোক না কেন, বর্তমান সময় এবং পরবর্তীতেও বাংলার দায়িত্ব তার কাঁধেই থাকতে চলেছে।