বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: ২০০৭ সালের ২৪ শে সেপ্টেম্বর। সেদিন একটি বিশেষ ঘটনা না ঘটলে দক্ষিণবঙ্গবাসীর একটা বড় অংশের হয়তো দিনটি মনে থাকতো প্রবল বর্ষণের কারণে। সত্যিই সেই দিন প্রবল বৃষ্টিপাত হয়েছিল দক্ষিণবঙ্গের একটা বড় অংশ জুড়ে। বাইরে সেই প্রবল বর্ষণকে উপেক্ষা করে মানুষ চোখ রেখেছিল টিভির পর্দায় কারণ তখন দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ইতিহাস করছিলেন গৌতম গম্ভীর।
হ্যাঁ, আজ থেকে ১৫ বছর আগে এই তারিখেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম আয়োজিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে মাঠে নেমেছিল মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ভারত। গোটা টুর্ণামেন্টে দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলে ফাইনালে পৌঁছেছিলেন যুবরাজরা। আয়নাল এর আগেও একবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের মুখোমুখি হয়েছিল ভারতীয় দল। এই ম্যাচে ৪০ ওভার শেষে দুই দলের স্কোর সমান হওয়ায় বোল আউট করা হয় যার মধ্যে দিয়ে ভারতকে সেই ম্যাচ জিতিয়ে দেয় সেওয়াগ হরভজন এবং রবিন উথাপ্পা।
তবে ফাইনালে ভারত কে রীতিমত বেকায়দায় ফেলে দিয়েছিল পাকিস্তান। গোটা টুর্ণামেন্টে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা যুবরাজ সিং ফাইনালে ভালো ব্যাটিং করতে পারেননি। গোটা টুর্নামেন্টের মতোই ফাইনালেও বেড়াতে অতি সাদামাটা পারফরম্যান্স করেছিলেন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। তাও ভারত পাকিস্তানের সামনে ১৫৮ রানের লক্ষ্যমাত্রা রাখতে পেরেছিল।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে এই অবস্থায় ভারতের নায়ক হয়ে উঠেছিলেন গৌতম গম্ভীর। প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে গম্ভীর নিজে জানিয়েছেন যে এটি তার প্রথম কোন বিশ্বকাপের মঞ্চে খেলতে নামার অভিজ্ঞতা ছিল। এর আগে তিনি অনূর্ধ্ব ১৪, অনূর্ধ্ব ১৯ এবং ২০০৭ ওয়ান ডে বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাননি। এই টুর্নামেন্টের শুরুর ম্যাচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন। তারপর গোটা টুর্ণামেন্টে খেলে ভারত ফাইনালে পৌঁছানোর পর তার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে করা ৭৫ রানের অসাধারণ ইনিংসটি নিজের কেরিয়ারের সেরা মুহূর্তগুলোর মধ্যে একটি বলে আখ্যা দিয়েছেন গৌতম গম্ভীর।
ওই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে গম্ভীরের অসাধারণ পারফরম্যান্স এর পাশাপাশি রোহিত শর্মার ৩০ রানের ক্যামিও, ইরফান পাঠান এবং আরপি সিংদের নিজেদের বোলিংয়ে ৩ টি করে উইকেট নেওয়াও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল ভারতের জয়ে। ম্যাচের ফাইনাল ওভারে পাকিস্তানের হাতে ছিল আর একটি মাত্র উইকেট এবং জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১২ রানের। ক্রিজে ছিলেন আইসিসি টুর্নামেন্টগুলিতে ভারতের বিরুদ্ধে বরাবর ভালো ব্যাটিং করা মিসবা-উল-হক। যোগীন্দর শর্মার ওভারের প্রথম বলটিতে কোনও রাগ হয়নি। দ্বিতীয় বলটি ফুলটস হয় এবং লং অফের উপর দিয়ে বিরাট ছক্কা মারেন মিসবা। পর তৃতীয় বলে অতিরিক্ত চালাকি করতে গিয়ে স্কুট খেলার চেষ্টা করেন পাকিস্তান তারকা। বলটি অনেকক্ষণ হাওয়ায় থাকে এবং টিভিতে ম্যাচ দেখা কিছু দর্শক সেই সময় হয়তো ভেবেছিলেন যে বলটি বাউন্ডারির বাইরেই যাচ্ছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফাইন লেগে শ্রীশান্তের তে নেমে আসে পল্টি এবং ধোনির নেতৃত্বে ইতিহাস তৈরি করে ভারত।