বাংলাহান্ট ডেস্ক: গত প্রায় এক দশক ধরে চলেছে কলকাতা মেট্রোর জোকা-বিবাদী বাগ (Joka-BBD Bag Metro) রুটের কাজ। এখনও অবধি জোকা থেকে তারাতলা অবধি কাজ শেষ হয়েছে। শুরু হয়েছে মেট্রোর ট্রায়াল রানও। তবে সর্বসাধারণের জন্য এই পরিষেবা কবে চালু হবে তা নিয়ে থেকে গিয়েছে সংশয়। প্রথমে বলা হয়েছিল, দুর্গাপুজোর মধ্যেই চালু করে দেওয়া হবে এই রুট। তবে আদৌ তা হয়নি। কবে বেহালাবাসী উঠতে পারবেন এই মেট্রোতে?
মেট্রো রেল সূত্রে খবর, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি মাস অর্থাৎ নভেম্বর থেকেই সাধারণ যাত্রীদের জন্য খুলে যেতে পারে জোকা-তারাতলা মেট্রোর দরজা। আগামীকাল, বৃহস্পতিবার ওই রুটের মেট্রো বুয়বস্থার যাবতীয় পরিকাঠামোর চূড়ান্ত পরিদর্শন করার কথা রেলওয়ে সেফটি কমিশনারের। তিনি সবুজ সঙ্কেত দিলেই চালু হয়ে যেতে পারে পরিষেবা।
উল্লেখ্য, কয়েক সপ্তাহ আগেই ওই মেট্রোয় যাত্রী-পরিষেবা চালু করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছিল। প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র চেয়ে পরিদর্শনের আর্জিও জানানো হয়েছিল মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর প্রথম বার জোকা ও তারাতলার মধ্যে সাড়ে ছ’কিলোমিটার মেট্রোপথে ট্রায়াল রান শুরু হয়। মোট ছ’টি স্টেশনকে নিয়ে প্রথম পর্যায়ের পরিষেবা শুরু করতে উদ্যোগ নিচ্ছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
জোকা-তারাতলা রুটের ছ’টি মেট্রো স্টেশন হল- জোকা, ঠাকুরপুকুর, সখেরবাজার, বেহালা চৌরাস্তা, বেহালা বাজার এবং তারাতলা। তবে এই রুটে সারাদিনে আপাতত মাত্র একটি করেই ট্রেন চালানো হবে। একটি প্রান্তিক স্টেশন ছেড়ে অন্য প্রান্তিক স্টেশনে পৌঁছনোর পর সেই ট্রেনটিই আবার উলটো পথে ফিরে আসবে। পরিষেবা শুরু করার জন্য স্টেশনগুলি প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি আপ ও ডাউন লাইনও ইতিমধ্যেই তৈরি রাখা হয়েছে।
পরিদর্শনে এসে উত্তর সীমান্ত রেলের ভারপ্রাপ্ত রেলওয়ে সেফটি কমিশনার ওই রুটে ট্রেন চালানোর পর্যাপ্ত পরিকাঠামো খতিয়ে দেখার পাশাপাশি দেখবেন স্টেশনগুলির অবস্থাও। উল্লেখ্য, প্রথম ধাপে রেলওয়ে সেফটি কমিশনারের পরিদর্শন-পর্ব সামাল দেওয়ার জন্য মোট ১২ জন মেট্রোকর্মীকে সাময়িক ভাবে বদলি করা হয়েছে এই রুটে। গত ৭ নভেম্বর থেকে আগামী ১১ নভেম্বরের মধ্যে এই পরিদর্শন পর্বের সামাল দেবেন ওই ১২ জন কর্মী।
তাঁদের মধ্যে ছ’টি স্টেশনের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। পরিদর্শন-পর্বের শেষে স্টেশন পরিচালনার জন্য কর্মীদের সেখানে আনানোর ব্যবস্থা করবে মেট্রো। তবে এই রুটে সারাদিনে একটি মাত্র ট্রেন চালালে যাত্রীরা কতটা সুবিধা পাবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। প্রসঙ্গত, গত প্রায় দশ বছর ধরে খুবই ধীর গতিতে এগিয়েছে ওই মেট্রো প্রকল্পের নির্মাণকাজ। এখনও পুরোদমে চালু হয়নি পরিষেবা।
তাই বিভিন্ন মহলের অভিযোগ, খানিকটা মুখরক্ষার খাতিরেই এবার ওই রুটে মেট্রো পরিষেবা শুরু করার চেষ্টা করছেন কর্তৃপক্ষ। জানা গিয়েছে, জোকা-তারাতলা রুটে অত্যাধুনিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা-সহ পুরোদস্তুর পরিষেবা শুরু করতে আরও দু’বছর অপেক্ষা করতে হবে। তত দিন পরিষেবা থেকে সে ভাবে আয় না হলেও পরিষেবা চালু রাখতেই হবে মেট্রোকে। তাই প্রশ্ন উঠছে, এভাবে পরিষেবা চালু করে কী লাভ হবে মেট্রোর?