বাংলাহান্ট ডেস্ক: রাজ্য রাজনীতি এখন বুদ্ধ-ময়। পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (Buddhadeb Bhattacharya) অসুস্থ, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দল, মত নির্বিশেষে রাজনৈতিক জগতের মানুষ এবং আমজনতাও দ্রুত আরোগ্য কামনা করছেন প্রবীণ রাজনীতিকের। কিন্তু সবার মাঝে ব্যতিক্রমী মন্তব্য করে বসলেন কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)।
রাজ্যের শাসক দল, বিরোধী দল নির্বিশেষে বুদ্ধদেবের সুস্থতা কামনা করছেন। সেখানে দাঁড়িয়ে তৃণমূল মুখপাত্র মন্তব্য করে বসেন, ‘বুদ্ধবাবুকে সম্মান করলেও তাঁকে মহাপুরুষ বলে মানতে পারছি না’। কুণাল ঘোষের মন্তব্য বিতর্কের পারদ চড়াতে বেশি সময় নেয়নি। একজন অসুস্থ মানুষের আরোগ্য কামনায় রাজনৈতিক রঙ যখন সকলেই দূরে সরিয়ে রাখছেন, সেখানে রাজ্যের শাসক দলের মুখপাত্রের এহেন মন্তব্য দৃষ্টিকটু বলেই মনে করছে রাজনৈতিক জগৎ।
এবার কুণাল ঘোষকে পালটা জবাব দিলেন টলিউডের প্রযোজক রানা সরকার। স্পষ্টবক্তা হিসেবে সুনাম এবং বদনাম দুই রয়েছে তাঁর। বিষ্ফোরক মন্তব্য করায় তিনিও কম যান না। বুদ্ধদেবকে ‘মহাপুরুষ’ বলা নিয়ে কুণালের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ভদ্র ভাষায় তীক্ষ্ণ বাক্যবাণ ছুড়লেন রানা।
একটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘কুনাল বাবু, বিশ্বাস করুন আপনাকে কেউ ‘চোর’ বললে আপনার যতটা দুঃখ বা লজ্জা হয়, বুদ্ধদেব বাবুকে কেউ ‘মহাপুরুষ’ বললে ওনার ঠিক ততটাই দুঃখ বা লজ্জা হবে। আপনার তবু উপায় আছে আইন আদালতের মাধ্যমে প্রমান করার যে আপনি ‘চোর’ নন, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কাছে কিন্তু কোনো রাস্তা নেই প্রমান করার যে উনি ‘মহাপুরুষ’ নন।
আরো বড় ব্যাপার, আপনি যখন অসুস্থ ছিলেন পা ভেঙেছিল তখনো আপনাকে যারা ‘চোর’ বলেছিল তাদের মনুষ্যত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। একই ভাবে বুদ্ধদেব বাবুর অসুস্থতার সময় তিনি ‘মহাপুরুষ’ কিনা সেই নিয়ে আলোচনাটাও অমানবিক একটা বিষয়।’
এখানেই না থেমে তিনি আরো লেখেন, ‘ছোটবেলা থেকে বাবা মা শিখিয়েছিলেন ‘কানা কে কানা বা খোঁড়া কে খোঁড়া’ মুখের ওপর বলতে নেই। তাই কাউকে চোর বা কাউকে মহাপুরুষ, এমনকি সেগুলো সত্যি হলেও মুখের ওপর বলা উচিত না। আশাকরি আমার পয়েন্টটা বোঝাতে পারলাম। ভালো থাকবেন… বুদ্ধদেব বাবুর আরোগ্য কামনা করি।’
নেটিজেনরা বাহবা দিয়েছেন রানাকে স্পষ্ট কথা স্পষ্ট ভাবে বলার জন্য। একজন লিখেছেন, ‘সুন্দর উওর দিয়েছেন, বুদ্ধ বাবুর সুস্থতা কামনা করছি।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘সাড়ে তিন বছর জেল খাটা মহাপুরুষ কুণালের কথায় কেউ গুরুত্ব দেয় না’।