বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে যখন প্রায়শই জমিজমা সংক্রান্ত বিবাদের কারণে ভাইদের মধ্যে তুমুল দ্বন্দ্বের বিষয় খবরের শিরোনামে উঠে আসে ঠিক সেই আবহেই এক নজিরবিহীন কাণ্ড ঘটালেন চার ভাই। যেটি জানার পর রীতিমতো অবাক হয়ে যাবেন প্রত্যেকেই। শুধু তাই নয়, তাঁদের এই কর্মকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে অনেকেই তাঁদের দানবীর কর্ণের সাথেও তুলনা করেছেন। জানা গিয়েছে, ওই চার ভাই ৩০ লক্ষ টাকা দামের জমি স্কুল (School) তৈরির নির্মাণের জন্য অবলীলায় দান করেছেন। এমতাবস্থায়, তাঁদের এই মহতী সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন সকলেই।
এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, ওই চারভাই নবগাছিয়ার রাঙ্গাড়া ব্লকের বাসিন্দা। তাঁরা সবাই পেশাগতভাবে কৃষক। এমতাবস্থায়, তাঁরা বিদ্যালয় তৈরির উদ্দেশ্যে ২ কাঠা জমি দান করেছেন। যার বর্তমান মূল্য ৩০ লক্ষ টাকা। পাশাপাশি, গ্রামবাসীরাও ওই বিদ্যালয়টি নির্মাণের জন্য অনুদান সংগ্রহে ব্যস্ত রয়েছেন।
জানা গিয়েছে, ভাগলপুরের নবগাছিয়া মহকুমার অন্তর্গত বাইসি গ্রামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। কিন্তু, সেটি রয়েছে নদীর অন্য পারে। যে কারণে শিশুদের এই বিদ্যালয়ে যেতে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এমনকি, নদীতে ডুবে গিয়ে শিশুমৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। সেই কারণে সেখানকার পরিবারগুলি তাদের ছেলেমেয়েদেরকে স্কুলে পাঠানোর বিষয়ে অত্যন্ত চিন্তায় ছিল। যার ফলে ২০১৩ সালে বাইসি গ্রামের রঞ্জিত রায়, জগদেব রায়, বলদেব রায় এবং বিবেকানন্দ রায় তাঁদের ২ কাঠা জমি স্কুল তৈরির জন্য দান করেছিলেন।
আরও পড়ুন: লুকিয়ে রয়েছে কোনো রহস্যময় জীব? সমুদ্রে ভাঙা সোনালি ডিমের সন্ধান পেতেই ঘুম উড়েছে বিজ্ঞানীদের
এরপর গ্রামবাসীরা স্কুল নির্মাণের জন্য সরকারি অফিসে ঘোরাফেরা করলেও সেটি নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। অবশেষে এখন গ্রামবাসীরা অনুদান সংগ্রহ করে স্কুলটি নির্মাণের উদ্যোগ নিচ্ছেন। বর্তমানে বাঁশ ও টিনের তৈরি একটি চালা বসানো হয়েছে। ইটও কেনা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে বলদেব রায় জানান, তাঁরা ২ কাঠা জমি দান করেছেন। যার দাম এখন ৩০ লক্ষ টাকা। পাশাপাশি, তিনি আরও জানান, “আমাদের বেঁচে থাকার জন্য একটি ছোট জমি আছে। গ্রামের ছেলেমেয়েরা স্কুল না যেতে পারে এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়াত। এরপর আমরা চার ভাই মিলে জমি দান করেছি। যাতে এখানকার শিশুরা পড়াশোনা করতে পারে।”
কি জানিয়েছেন ডিইও: এদিকে, জেলা শিক্ষা আধিকারিক সঞ্জয় কুমার এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন যে, কিছু জায়গায় মানুষ নিজেরাই জমি দান করে স্কুল তৈরি করেন। নবগাছিয়ার বিদ্যালয়ের জন্য বিভাগীয় পর্যায় থেকেও আমরা অর্থ দেব। বিদ্যালয়টি নির্মাণের জন্য জনপ্রতিনিধিদেরও অনুরোধ করা হয়েছে।