বাংলা হান্ট ডেস্ক : বিগত কয়েক মাস ধরেই অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের দৌরাত্ম্যে টিকছেনা ভারতের কোনও শত্রু। ইতিমধ্যেই গত ১৯ মাসে ১৭ জন ভারত (India) বিরোধী সন্ত্রাসীর প্রাণ গেছে পাক (Pakistan) মাটিতে।আর এবার হাফিজ সইদ, মৌলানা রহিমুল্লাহ তারিকের পর তালিকায় নাম জুড়লো লস্কর-ই-তৈয়্যবা সন্ত্রাসী নেতা সাজিদ মীরের (Sajid Mir)। এবার নিশানায় ২৬/১১ হামলার নেপথ্যে থাকা সন্ত্রাসবাদী সাজিদ মীর।
২০০৮ সালের ২৬/১১ এক রক্তাক্ত স্মৃতি মাখানো দিন। যা আপামর ভারতবাসী কোনোদিনই ভুলতে পারবেনা। মাঝরাতে মুম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ টার্মিনাসের যাত্রী প্রতীক্ষালয়ে তখন শুধুই রক্ত আর চিৎকার। তাজ হোটেলের পাশাপাশি মোট ৮ টি জায়গায় চলে হামলা (Mumbai Terror Attack)। পাক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন লস্কর-ই-তইবার হামলায় পুলিশ আধিকারিক সহ মোট ১৬৪ জনের দেহ ঝাঁঝরা হয়ে যায় সেদিন। জখম হয় প্রায় ৩০০ এরও বেশি মানুষ।
১৪০ কোটি ভারতীয়র মনে এই ভয়াভয় স্মৃতি তৈরির কারিগরদের মধ্যে একজন ছিল সন্ত্রাসী নেতা সাজিদ মীর। সম্প্রতি সেই সাজিদ মীরকেই বিষ প্রয়োগ করে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। সূত্র বলছে, পাকিস্তানের ডেরা গাজি খানে অবস্থিত কেন্দ্রীয় কারাগারে তাকে বিষ প্রয়োগ করা হয়। দেহে এখনও প্রাণ অবশিষ্ট থাকলেও তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। এইমুহুর্তে এই সন্ত্রাসী নেতা বাহাওয়ালপুর সিএমএইচে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই তাকে এয়ারলিফট করে এখানে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে।
আরও পড়ুন : সাবধান, ‘বাংলার বাড়ি’ কিনে বিক্রি করলে করতে হবে হাজতবাস! সতর্ক করলেন খোদ মেয়র
ঘটনার পর তদন্ত শুরু করেছে পাকিস্তান পুলিশ। তাদের প্রাথমিক সন্দেহ কারাগারের রাঁধুনির উপর। গোপন সূত্রে খবর, এই রাঁধুনি ২০২৩ সালের অক্টোবরে এই কারাগারে পুনর্বহাল হয়েছিলেন। যদিও এখন সে পলাতক। উল্লেখ্য, বিগত কয়েক মাসে বহু ভারত বিরোধী সন্ত্রাসীর দমন হয়েছে পাক মাটিতে। যদিও এর নেপথ্যে ‘কে’, তা এখনও সকলের অজানা। পাক প্রশাসন বহু চেষ্টা করেও এইসব হত্যা রহস্যের কূলকিনারা করতে পারেনি।
আরও পড়ুন : তিন রাজ্যে BJP সরকার গঠন হতেই বড় চমক, ফের বাড়ছে কেন্দ্র সরকারি কর্মীদের DA! কত ঢুকবে অ্যাকাউন্টে
৪০-৫০ বছর বয়সী সাজিদ মীর প্রসঙ্গে বললে, তাকে কয়েকদিন আগেই লাহোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। আমেরিকার নজরে সে এখন মোস্ট ওয়ান্টেড ক্রিমিনালদের মধ্যে একজন। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র তার জন্য ৫০ মিলিয়ন ডলার পুরস্কারও ঘোষণা করেছে। যদিও মাস কয়েক আগেই পাকিস্তানের তরফে দাবি করা হয়, সাজিদ মীর মারা গেছে। তবে সেই দাবি নাকচ করে দেয় পশ্চিমা দেশগুলি। এরপর ভারত ও আমেরিকা সাজিদ মীরকে ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী’ হিসাবে চিহ্নিত করার জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জে প্রস্তাব রাখলে চীন তাতে বাধা দেয়। তবুও সাজিদের শেষ রক্ষা বোধহয় হলনা। তবে এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল, এই সমস্ত হত্যার পেছনে কি রয়েছে নয়াদিল্লির গুপ্তচরদের হাত? তুঙ্গে উঠেছে তরজা।