বাংলা হান্ট ডেস্ক: আটা, ডাল তারপর চাল। সরকার (Government) এইসব পণ্যের দাম কমানোর জন্য ক্রমাগত চেষ্টা করছে। যদিও, সরকার ও সাধারণ মানুষ এখনও ডালের দাম নিয়ে বিপাকে রয়েছে। উৎপাদন কম হওয়ায় ক্রমাগত বাড়ছে দাম। এমন পরিস্থিতিতে, এই মুদ্রাস্ফীতি (Inflation) কমাতে সরকার ২০২৫ সাল পর্যন্ত একটি মহাপরিকল্পনা তৈরি করেছে। শুধু তাই নয়, DGFT-র মাধ্যমে বড় ঘোষণা করা হয়েছে যে ২০২৫ সাল এবং তারপরেও ডালের দাম বাড়বে না। বর্তমান প্রতিবেদনে এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপিত করা হল।
করা হয়েছে বড় ঘোষণা: উল্লেখ্য যে, ক্রমাগত মুদ্রাস্ফীতির মধ্যে ২৮ ডিসেম্বর বৈদেশিক বাণিজ্য মহানির্দেশকের জারি করা আদেশ অনুসারে কেন্দ্র অড়হর এবং বিউলির ডালের ছাড়ের মেয়াদ আরও এক বছরের জন্য অর্থাৎ ২০২৫-এর ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়িয়েছে। এদিকে, এই আদেশ সরকারের মসুর ডালের আমদানি শুল্ক অব্যাহতি এক বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত বাড়ানোর ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের পরে নেওয়া হয়েছে। এই শিথিলতা, ২০২১-এর অক্টোবর থেকে কার্যকর হয়েছে। যেটি ৩১ মার্চ, ২০২৫ পর্যন্ত লাগু থাকবে। এদিকে, শুল্কমুক্ত আমদানি বাড়ানোর বিজ্ঞপ্তিটি এমন সময়ে এসেছে যখন ভারত উচ্চ খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি বা ফুড ইনফ্লেশনের সাথে লড়াই করছে। যেটি নভেম্বরে বেড়ে ৮.৭ শতাংশে পৌঁছেছে। যেখানে অক্টোবর মাসে এই হার ছিল ৬.৬১ শতাংশ। পরিসংখ্যান মন্ত্রক থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বরে ডালের মুদ্রাস্ফীতির হার ২০ শতাংশ রেকর্ড করা হয়েছে।
খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি সরকারের মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে: নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই উচ্চ খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি সরকারের জন্য বড় মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেন্দ্র ইতিমধ্যেই বিনামূল্যে শস্য বিতরণ কর্মসূচি তথা প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনা পাঁচ বছর বাড়িয়ে ২০২৮ পর্যন্ত বাড়িয়েছে। যার অধীনে দরিদ্র পরিবারগুলিকে মাসিক ৫ কেজি শস্য সরবরাহ করা হয়। এর পাশাপাশি চিনি, চাল, ডাল, শাকসবজি এবং ভোজ্য তেলের মতো প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল করার জন্য বেশ কয়েকটি প্রশাসনিক পদক্ষেপও গ্রহণ করা হয়েছে।
কেন এটা বাড়ছে: উল্লেখ্য যে, অভ্যন্তরীণ উৎপাদন না হওয়ায় গত বছর অড়হরের দাম চড়া রয়েছে। তবে, সরকারের পদক্ষেপের প্রভাবে এই দাম পড়তে শুরু করেছে। গত ১৮ ডিসেম্বর অড়হরের দাম এক মাস আগে ১৫৬.৫ টাকা থেকে প্রতি কেজিতে ১৫৪ টাকায় নেমে এসেছে। এদিকে, গত ৮ ডিসেম্বর সরকার এই অর্থবর্ষের শেষ পর্যন্ত অড়হরকে আমদানি শুল্ক থেকে অব্যাহতি দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতের সামনে চলল না কাতারের জারিজুরি, আট প্রাক্তন নৌসেনার মৃত্যুদণ্ড রুখে দিল নয়া দিল্লি
এইসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে: অনিয়মিত আবহাওয়ার কারণে চলতি বছরে ঘাটতির পূর্বাভাসের কারণে কেন্দ্র জানুয়ারিতে অড়হর এবং বিউলির জন্য শুল্কমুক্ত আমদানি নীতি ৩১ মার্চ, ২০২৪ পর্যন্ত বাড়িয়েছে। তদুপরি ২ জুন, সরকার ব্যবসায়ীদের অড়হর এবং বিউলির সীমিত মজুত রাখার অনুমতি দেয়। এই পদক্ষেপের পর, সরকার মূল্যবৃদ্ধি রোধে জাতীয় বাফার স্টক থেকে অড়হর রিলিজ করে দেয়।
আরও পড়ুন: গাধায় ভর্তি পাকিস্তান! অবস্থা এমন যে, এই চারপেয়ের কাঁধেই ভর করে চলছে দেশের অর্থনীতি
এদিকে, সরকার “ভারত ডাল”-এর প্যাকেজিংয়ের অধীনে সারা দেশে ৬০ টাকা প্রতি কেজি ভর্তুকিযুক্ত দামে চানা ডাল চালু করেছে। যার উদ্দেশ্য যারা দামী অড়হর বা বিউলির ডাল কিনতে পারেন না তাঁদের কাছেও খাওয়ার পৌঁছে দেওয়া। পাশাপাশি একটি বাফার স্টক তৈরি করতে কেন্দ্র কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি অড়হর ডাল কেনা শুরু করেছে। যা দাম বাড়লে বাজারে ছেড়ে দেওয়া হবে।