বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতির পাশাপাশি রেশন দুর্নীতি (Ration Scam) নিয়ে বর্তমানে তোলপাড় গোটা রাজ্যে। রেশন কেলেঙ্কারির অভিযোগে ইতিমধ্যেই ইডির (Enforcement Directorates) হাতে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্ৰিয় মল্লিক (Jyotipriya Mallick) ওরফে বালু। আর তৃণমূলের এই বালুকে নিয়েই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আনছেন গোয়েন্দারা।
রেশন দুর্নীতি নিয়ে এবার দাবি ইডির। আদালতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, পদের ক্ষমতার প্রয়োগ করে চালকল মালিকদের থেকে নগদে কাটমানি তুলতেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। নিয়ম করে জ্যোতিপ্রিয়কে ক্যুইন্টালপ্রতি ধানে ২০ টাকা কাটমানি দিতে হত মিল মালিকদের।
ইডির দাবি, পদাধিকারবলে রাজ্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ সংস্থার চেয়ারম্যান ছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। আর সেই ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে চালকল মালিকদের থেকে টাকা তুলতেন মন্ত্রীমশাই। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, গত বছর শেষের দিকে তল্লাশি চালিয়ে জ্যোতিপ্রিয়র প্রাক্তন আপ্তসহায়ক অভিজিৎ দাসের বাড়ি থেকে একটি মেরুন ডায়েরি উদ্ধার করেছিল তারা। সেই ডায়েরি থেকেই এই চাঞ্চল্যকর উঠে এসেছে।
‘রহস্যময়’ মেরুন ডায়েরি বিশ্লেষণ করে মিল মালিকদের কাছ থেকে নগদে কাটমানি নেওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট উঠে এসেছে। ইডি তরফে আদালতে জানানো হয়েছে ইতিমধ্যেই মন্ত্রীর কাটমানি তোলার বিষয়টি জেরায় স্বীকার করে নিয়েছেন বাকিবুর ও তার মিলের এক আধিকারিকও। প্রসঙ্গত, রেশন দুর্নীতির তদন্তে নেমে সর্বপ্রথম ইডির হাতে গ্রেফতার হন ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমান। পরে তার সূত্র ধরেই জ্যোতিপ্রিয়কে গ্রেফতার করে ইডি।
আরও পড়ুন: ‘লোকসভা ভোটে অভিষেকের বিরুদ্ধে লড়ে দেখান’, বিচারপতিকে ওপেন চ্যালেঞ্জ কুণালের, এবার কি তবে…
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালে অক্টোবর পর্যন্ত রাজ্য সরকার কেন্দ্রের FCIএর সাহায্যে ধান ক্রয়ের পরিমাণ ছিল ১ লক্ষ ৪৭ হাজার মেট্রিকটন। এর থেকেই ধারণা পাওয়া যায় ঠিক কি পরিমাণ কাটমানি তুলেছেন রাজ্যের হেভিওয়েট মন্ত্রী জ্যোতিপ্ৰিয় মল্লিক। ইডির অনুমান সদ্য গ্রেফতার হওয়া তৃণমূল নেতা শঙ্কর আঢ্যর সংস্থার মাধ্যমে দুর্নীতি করে তোলা এই টাকার একটা বড় অংশ বিদেশে পাচার করা হয়েছে। আবার দেশেও একাধিক ভুয়ো কোম্পানি খুলে কালো টাকা সাদা করা হয়েছে।
ওদিকে গত শনিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে ইডির দাবি করে, এক কোটি, দু’কোটি বা ১ হাজার কোটিও নয়, মোট ১০ হাজার কোটি টাকার রেশনে দুর্নীতি হয়েছে রাজ্যে। এর মধ্যে ২ হাজার কোটি টাকা তৃণমূল নেতা শঙ্কর আঢ্যর সংস্থার মাধ্যমে দুবাইয়ে পাচার করা হয়েছে।