বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বহু আগেই নিয়োগ দুর্নীতিতে (Recruitment Scam) নাম জড়িয়েছিল প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারী (Paresh Adhikari)। নিজের ক্ষমতাকে ব্যবহার করে বেআইনিভাবে তার মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীকে সহ শিক্ষিকা পদে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে অঙ্কিতার। তারপর বেশ কিছুদিন পর সদ্য এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই এর চার্জশিটে নাম উঠেছে তৃণমূলের পরেশ অধিকারীর। আর এসবের মধ্যেই এবার আরেক গুঞ্জন শুরু হয়েছে পরেশবাবুকে নিয়ে। শোনা যাচ্ছে এবার তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) ছেড়ে বিজেপি (BJP) শিবিরে যোগ দিচ্ছেন পরেশ অধিকারী।
সামনেই লোকসভা নির্বাচন। এই আবহে আগামী ১৯ জানুয়ারি মেখলিগঞ্জে জনসভা করবেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর সেই সভাতেই নাকি ফুল বদল করবেন মেখলিগঞ্জের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক পরেশ অধিকারী। এমনটাই শোনা যাচ্ছে।
লোকসভা নির্বাচনের আগে সমস্ত দল যখন নিজের পায়ের তলার জমি জমি শক্ত করতে ব্যস্ত তখন পরেশ অধিকারীর বিজেপি যোগের জল্পনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে উত্তরবঙ্গে। উত্তরবঙ্গ বিজেপির অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী ঘাঁটি বলেই পরিচিত। আর লোকসভার আগে যদি সত্যিই পরেশবাবু বিজেপি যোগ করেন তাহলে এবার বড় দাঁও পারতে চলেছেন তৃণমূল বিধায়ক, এমনটাই মনে করছেন অনেকেই।
সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে এসেছিলেন পরেশ অধিকারী। ভোটে জিতে বিধায়কও হন। কোচবিহার সহ উত্তরবঙ্গে তার জনপ্রিয়তা কম না। এবার কি তাহলে আসন্ন লোকসভায় বিজেপির প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াবেন পরেশবাবু? কান পাতলে এরম প্রশ্নই শোনা যাচ্ছে এখন।
আরও পড়ুন: চাল খাটিয়ে রাজ্যে উজ্জ্বলা যোজনা বন্ধের জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন মমতা! টুইটে বিস্ফোরক শুভেন্দু
বিজেপি-পরেশ জল্পনার মাঝেই বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক দধিরাম রায় আবার বিরাট দাবি করে বসেছেন। পদ্মে পরেশ এই দাবিতে সিলমোহর দিয়ে দধিরামের সাফ দাবি, ‘শুভেন্দু অধিকারীর জনসভায় বিজেপিতে যোগ দিতে চেয়ে দলের রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন পরেশ অধিকারী। রাজ্য নেতৃত্ব এই বিষয়ে আমাদের মতামত জানতে চেয়েছে। তবে আমরা ওনাকে নিতে ইচ্ছুক নই। পরেশের মতো চাকরি চোরকে আমরা দলে নেব না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আর রাজ্য নেতৃত্বও সেই সিদ্ধান্তে সহমত হয়েছেন।’
ওদিকে জামালদহের এক প্রাক্তন তৃণমূল জনপ্রতিনিধি বলেন, ‘আমি শুভেন্দু অধিকারীর সভায় বিজেপিতে যোগ দেব। পরেশবাবুও বিজেপিতে যোগ দিতে চাইছেন।’ তৃণমূল অবশ্য এই বিষয়ে চৰ্চা না করলেও তৃণমূল যুব কংগ্রেসের জলপাইগুড়ি জেলার সাধারণ সম্পাদক বাপ্পা মণ্ডল ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করে ফেসবুকে লেখেন, ‘জেল যাওয়া ঠেকাতে সিবিআইয়ের চার্জশিটে নাম ওঠা পচা আলু বঙ্গ–বিজেপিতে যোগ দিতে চাইছে।’
আবার বিজেপির গলাতেও একই সুর। বিজেপির মেখলিগঞ্জ বিধানসভার আহ্বায়ক পবন ভাদানি সম্প্রতি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘গ্রেফতারি এড়াতে বিজেপির সঙ্গে গোপন যোগাযোগ। মহাশয় বিজেপি আর সিবিআই এক নয়।’ যদিও তৃণমূল, বিজেপির এই সমস্ত মন্তব্য, কটাক্ষের মধ্যেই বিতর্কে লাগাম দিতে পরেশ অধিকারী উত্তরবঙ্গ বলেন, ‘ভিত্তিহীন বিষয় নিয়ে গুজব ছড়িয়েছে। আমি তৃণমূল কংগ্রেসেই থাকছি।’