বাংলা হান্ট ডেস্ক : বিশ্বের একমাত্র পরাশক্তি অর্থাৎ সুপারপাওয়ারের কথা বললে তা হলো আমেরিকা। আর এই আমেরিকার বড় শত্রু রাশিয়া। সেই সোভিয়েত আমল থেকে চলে আসছে দুই দেশের মধ্যেকার শত্রুতা। তবে বর্তমানে সময়ে আমেরিকার কাছে রাশিয়ার থেকেও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে চীন। কম্যুনিস্ট লাল চীনের সাথে সম্মুখ সমর না হলেও শুরু হয়েছে বাণিজ্য যুদ্ধ। রাশিয়ার বিরুদ্ধে যেমন তারা NATO খাড়া করেছে, চীনকে চাপে রাখতে তৈরী হয়েছে QUAD (QUAD এর সদস্য সংখ্যা 4, আর এই দেশগুলো হলো আমেরিকা, ভারত, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়া)।
চীনকে চেপে ধরতে QUAD তৈরী হলেও এই সংগঠনের শুরুটা মোটেই সহজ থাকেনি। ইরান ও উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচিকে নজরে রাখতে বেজিংয়ের সমর্থন দরকার ছিল ওয়াশিংটনের। তৎকালীন সময়ে আমেরিকা তাই QUAD এর গঠনের ওপর খুব বেশী চাপ না দেওয়ার নির্দেশ দেয়। এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছিল Jaipur Literature Festival এ। বক্তা ছিলেন প্রাক্তন পররাষ্ট্র সচিব শ্যাম শরণ। তিনি এও বলেন যে, বহুসময় নিষ্ক্রিয় থাকলেও 2017 সালে চীনকে টক্কর দেওয়ার পুনরায় সক্রিয় হয় QUAD।
2017 সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প আসার পর সংগঠনটি পুনরায় সক্রিয় হয়। আর এই সংগঠনে চার দেশ থাকলেও মূখ্য ভূমিকায় ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এখানে ভারতের গুরুত্বের কথা বলতে গিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত এরিক গারসেটি বলেন, ‘QUAD যদি একটি গাড়ি হয় তবে তার ড্রাইভিং সিটে বসে ভারত এবং আমেরিকা তার পাশের সিটে।’ এক্ষেত্রে ভারতকে অধিক গুরুত্ব দেওয়ার মাধ্যমে চীনকে সরাসরি বার্তা দিয়েছে আমেরিকা।
আরও পড়ুন : সাম্প্রদায়িকতা ছাড়ানো লক্ষ্য! উস্কানি দিয়ে গ্রেফতার মৌলানা, গুরুতর অভিযোগ আজাহারের বিরুদ্ধে
ওদিকে রাজনৈতিক অস্থিরতায় জর্জরিত পাকিস্তানের জন্য পরিস্থিতি আরও ভয়ানক। এমনিতেই আমেরিকা পাকিস্তানের উপর বিরক্ত এবং চীনও তাকে খুব বেশি উসকানি দেওয়ার মুডে নেই। এই অবস্থায় ভারত ‘কোয়াড’কে নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটাই দেখার বিষয়। গারসেটি জয়পুর লিটারেচার ফেস্টিভালে এসে বলেন যে, ‘ভারত QUAD এর দিকনির্দেশনা নির্ধারণ করতে পারে। এছাড়া এটা ভারতের উপর নির্ভর করে যে আমরা QUAD এর সাথে কী করতে চাই।’
আরও পড়ুন : বাজেটের বাইরে গিয়ে ধার করছে মমতার সরকার! কন্যাশ্রী-রূপশ্রী নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিল CAG
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের ইঙ্গিত, বিশ্বের একাধিক দেশ এই QUAD এর অংশ হতে চায়। তিনি বলেন, ‘ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সবসময়ই জটিল, কিন্তু যখন সবকিছু সরাসরি হয়, তখন উভয় দেশ একে অপরের প্রতি একটু বিরক্ত হয়ে যায়। এটি একটি ডিনার পার্টির মতো। তিনজনকে আমন্ত্রণ জানালে বিষয়টি আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। যদি চারজন আসে, বং আপনার দল প্রস্তুত। তখন অন্য লোকেরাও দলে আসতে চায়। আর এর থেকেই বোঝা যায় আপনার ফলে বিশেষ কিছু আছে।’ এতে কোনও সন্দেহ নেই যে ইন্দো প্যাসিফিক থেকে আফ্রিকা পর্যন্ত অনেক দেশই, হয় চীনের প্রতি বিরক্ত, নয়তো এর মোকাবিলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।