শীঘ্রই একাধিক দেশের সঙ্গে “ট্রেড ডিল”, তালিকায় রয়েছে আমেরিকাও, কী জানালেন পীযূষ গোয়েল?

Published on:

Published on:

বাংলাহান্ট ডেস্ক: ভারতের (India) বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ভারতের অবস্থান এখন ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে। বিশ্বের একাধিক প্রধান অর্থনীতির সঙ্গে ভারতের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (FTA) কার্যকর হয়েছে এবং আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারের সঙ্গে আলোচনা চলেছে। বৃহস্পতিবার এক বক্তব্যে গয়াল বলেন, “ভারত ইতিমধ্যেই অস্ট্রেলিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী ও ইউরোপীয় ফ্রি ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন (EFTA)-এর মতো উন্নত দেশের সঙ্গে সফল বাণিজ্যিক চুক্তি করেছে। যুক্তরাজ্যের সঙ্গেও বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত হয়েছে।”

একাধিক দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির প্রস্তুতি ভারতের (India)

তিনি আরও জানান, বর্তমানে আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU), চিলি, পেরু, নিউজিল্যান্ড এবং ওমানের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে আলোচনা চলছে। গত তিন বছরে একাধিক উন্নত দেশের সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষর করে ভারত (India) প্রমাণ করেছে যে, বিশ্ববাজারে বিনিয়োগ ও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের জন্য ভারত এখন সবচেয়ে পছন্দের গন্তব্য।

আরও পড়ুন:বজায় থাকল ধারা! “প্রথা” মেনেই মোদীর রাজ্যের মন্ত্রিসভায় রদবদল? মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জমা পড়ল ইস্তফাপত্র

পীযূষ গয়াল আরও জানান, দক্ষিণ আমেরিকার বাজারে ভারতের উপস্থিতি বাড়াতে ব্রাজিলের সঙ্গে বিদ্যমান প্রেফারেনশিয়াল ট্রেড এগ্রিমেন্ট (PTA) সম্প্রসারণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা বর্তমান চুক্তির সীমা ছাড়িয়ে ভবিষ্যতে দক্ষিণ আমেরিকার বাজারে গভীর প্রবেশের সুযোগ তৈরি করতে চাই।” এদিকে, একটি সরকারি ভারতীয় (India) প্রতিনিধি দল ওয়াশিংটনে মার্কিন বাণিজ্য আধিকারিকদের সঙ্গে চলমান আলোচনায় অংশ নিয়েছে, যা ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে। ফেব্রুয়ারি মাসে দুই দেশই ২০২৫ সালের শরতের মধ্যে প্রথম ধাপের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি (BTA) সম্পন্ন করার লক্ষ্যে দল গঠন করেছিল। এখন পর্যন্ত পাঁচ দফা আলোচনা শেষ হয়েছে।

উল্লেখ্য, ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় (India) পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছিল, যার মধ্যে রুশ অপরিশোধিত তেলের আমদানির সঙ্গে যুক্ত অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ করও অন্তর্ভুক্ত ছিল। ভারত এই শুল্ককে “অন্যায্য, অযৌক্তিক এবং অবাস্তব” বলে বর্ণনা করেছে। সেই সঙ্গে ভারতীয় শিল্পমহলও যুক্তরাষ্ট্রের সংশোধিত এইচ-১বি ভিসা নীতির কারণে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তবে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফোনালাপের পর দুই দেশের মধ্যে ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি হয়েছে বলে জানানো হয়।

India is signing trade deals with multiple countries.

আরও পড়ুন:শেয়ার বাজারে ফের চমক মুকেশ আম্বানির এই সংস্থার! স্টক কেনার জন্য হুড়োহুড়ি, দাম মাত্র ১৮ টাকা

দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে বর্তমান ১৯১ বিলিয়ন ডলার থেকে বাড়িয়ে ৫০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানো। অর্থবর্ষ ২০২৪-২৫ সালে পরপর চতুর্থ বছরের মতো যুক্তরাষ্ট্র ভারতের (India) সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার। সেই সময়ে ভারতের মোট বাণিজ্য দাঁড়ায় ১৩১.৮৪ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে রপ্তানি ৮৬.৫ বিলিয়ন ডলার। তবে বাণিজ্য মন্ত্রকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানি ১১.৯৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৫.৪৬ বিলিয়ন ডলারে, যদিও আমদানি বেড়েছে ১১.৭৮ শতাংশ।

বহু দেশ ও সংস্থার সঙ্গে সক্রিয় বাণিজ্য আলোচনার মধ্য দিয়ে ভারত এখন ক্রমশ বৈশ্বিক বাণিজ্য কূটনীতির কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে। পীযূষ গয়ালের কথায়, “আমাদের লক্ষ্য শুধু চুক্তি করা নয়, বরং এমন এক বাণিজ্যিক পরিবেশ তৈরি করা, যা ভারতের (India) অর্থনীতিকে আরও আত্মনির্ভর এবং বিশ্বনেতৃত্বের উপযুক্ত করে তুলবে।”