বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সেই ২০২২ থেকে নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) নিয়ে শোরগোল রাজ্যে। কেলেঙ্কারির দায়ে জেলবন্দি রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী, তৃণমূল নেতা থেকে শুরু করে শিক্ষা দফতরের বহু আধিকারিক। আদালতে চলছে মামলা। এরই মধ্যে বুধবার শেষ হয়েছে এসএসসির (SSC) নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি। শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রাখল কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রসিদির বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চ।
বলে রাখি, প্রায় সাড়ে তিনমাস ধরে দুই বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চে প্রত্যহ শুনানি চলেছে। বুধবার সেই শুনানিই শেষ হল। প্রসঙ্গত, এই মামলার শুনানি শেষ করার জন্য আগেই ডেডলাইন বেঁধে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তবে সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া সময়সীমার আগেই এই মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। যদিও রায়দান ঘোষণা আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।
তবে নিয়োগের দুর্নীতি নিয়ে বিচারপতি বসাকের পর্যবেক্ষণ, ‘এই নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে ভালো কিছু খুঁজে পাওয়া কঠিন কাজ। অতিরিক্ত নিয়োগ হলে তা সরাসরি বাতিল করা উচিৎ।’ বিচারপতির মন্তব্য, “এক্ষেত্রে সমস্ত নিয়োগ প্রক্রিয়াই বাতিল করতে পারি! ওএমআর শিট যাচাই করে নিয়োগের পুনর্মূল্যায়ন করা যেতে পারে। সমস্ত মামলাও খারিজ করে দিতে পারি।”
শেষবেলায় বিচারপতির এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। বুধবার এই মামলার শুনানিতে মূল মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং ফিরদৌস শামিম অতিরিক্ত নিয়োগের পরিসংখ্যান পেশ করেন। তাদের দাবি, ‘শূন্যপদের চেয়েও বেশি সংখ্যক নিয়োগ হয়েছে। যা একটি সুপরিকল্পিত অপরাধ।’
মামলাকারীদের আইনজীবীদের সওয়াল, ‘শূন্যপদের অতিরিক্ত বেআইনি নিয়োগের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের টাকা নয়ছয় হয়েছে। দুর্নীতির সমস্ত টাকা ফেরানোর ব্যবস্থা করা হোক। এক্ষেত্রে প্রশাসনিক স্তরে যুক্ত আধিকারিকদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করা উচিৎ। সাধারণ মানুষের সব টাকা ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হোক।’
আরও পড়ুন: খাস কলকাতায় ফের ED হানা, সকাল থেকে চলছে ম্যারাথন তল্লাশি, নজরে কোন প্রভাবশালী?
এদিকে এদিনও এসএসসি এবং সিবিআইয়ের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিতর্কিত চাকরি প্রাপকদের আইনজীবী। তার কথায়, ‘এসএসসি বা সিবিআই কেউই বিশ্বাসযোগ্য নয়। আদালত নিজের স্বতন্ত্র সিদ্ধান্তের উপরই ভরসা রাখুক।’ পাল্টা বিচারপতি বসাকের প্রশ্ন, ‘তাহলে আদালত কার কথা বিশ্বাস করবে? আদালত তো উত্তরপত্র দেখারও সুযোগ দিয়েছিল।’ সব শেষে রায়দান স্থগিত রাখা হয়।