বাংলাহান্ট ডেস্ক: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর ক্রমাগত হামলা ও গণপিটুনিতে হিন্দু যুবকের হত্যার ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক হিসেবে চিহ্নিত করেছে ভারত (India)। শুক্রবার ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক প্রতিক্রিয়ায় জানান, বাংলাদেশে কট্টরপন্থীদের হাতে হিন্দু, খ্রিস্টান ও বৌদ্ধদের বিরুদ্ধে অবিরাম সহিংসতা নিয়ে ভারত গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং ঢাকার কাছে নিয়মিতভাবেই তাদের অবস্থান তুলে ধরছে।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার নিয়ে সরব ভারত (India):
জয়সওয়াল স্পষ্ট করেন, “আমরা বাংলাদেশে ঘটে চলা সাম্প্রতিক ঘটনাবলি সম্পর্কে সবাই অবগত। পরিস্থিতি কী ছিল, কী হওয়া উচিত এবং ভবিষ্যতে কী হতে পারে—এই সব বিষয়েই আমরা ধারাবাহিকভাবে অবহিত করছি।” তিনি জোর দিয়ে বলেন যে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা ও মানবাধিকার রক্ষার বিষয়টি ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ভারত এই বিষয়ে কড়া নজর রাখছে।
উল্লেখ্য, গত ১৮ ডিসেম্বর ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় দীপুচন্দ্র দাসকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে জনতা পিটিয়ে হত্যা করে ও তাঁর দেহে আগুন লাগায়। ওই ঘটনার পরও ভারত তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল এবং জাতিসংঘও বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে চিন্তা জানিয়েছিল। তবে তারপরও পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।
দীপু হত্যাকাণ্ডের পর বুধবার রাতে ঢাকা বিভাগের রাজবাড়ি জেলায় ফের অমৃত মণ্ডল নামে এক যুবক গণপিটুনির শিকার হয়ে নিহত হন। স্থানীয় পুলিশের দাবি, তোলাবাজিকে কেন্দ্র করে বিবাদের জেরে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানায়, অমৃতের এক সহযোগী সেলিম শেখকে গ্রেপ্তার করে একটি পিস্তল ও ওয়ান শটার উদ্ধার করা হয়েছে। তবে সমালোচকদের অভিযোগ, তোলাবাজির মতো অভিযোগের আড়ালে সংখ্যালঘুদের উপর কট্টরপন্থী হামলার প্রকৃত চিত্রটি ঢাকার চেষ্টা করা হচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কার্যকারিতা নিয়ে ভারতের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মহলেও উদ্বেগ বেড়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, বারবার এমন সহিংসতা ও তার অস্পষ্ট ব্যাখ্যা দেশটিতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও সামাজিক সম্প্রীতির জন্য হুমকিস্বরূপ। ভারতের এই প্রকাশ্য উদ্বেগ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে একটি শক্ত অবস্থান হিসেবে পড়া হচ্ছে, যা দুই দেশের সম্পর্কের গতিপ্রকৃতিকেও প্রভাবিত করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।












