বাংলাহান্ট ডেস্ক: বছরের পর বছর ব্যাঙ্ক ও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পড়ে থাকা দাবিহীন টাকা ফেরাতে বড় উদ্যোগ নিল ভারত (India) সরকার। ‘ইউর মানি, ইউর রাইট’ অভিযানের মাধ্যমে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা ইতিমধ্যেই বৈধ মালিকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সূত্রের দাবি, বহু নাগরিক জানতেনই না যে তাঁদের বা তাঁদের পরিবারের নামে ব্যাঙ্ক, বিমা কিংবা বিনিয়োগ সংস্থায় অর্থ জমা রয়েছে। সেই কারণেই এই অভিযান শুরু করে সাধারণ মানুষকে নিজের টাকার অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
দাবিহীন টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে বিশেষ অভিযান ভারত (India) সরকারের
চলতি বছরের অক্টোবর মাসে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ‘ইউর মানি, ইউর রাইট’ কর্মসূচির সূচনা হয়। এই অভিযানের মূল লক্ষ্য হল ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, বিমা পলিসি, মিউচুয়াল ফান্ড, শেয়ার, ডিভিডেন্ড ও অবসর তহবিলে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা দাবিহীন অর্থ প্রকৃত মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া। কেন্দ্রের উদ্যোগে ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে গ্রাহকদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে তাঁদের জমা অর্থ তুলে নেওয়ার প্রক্রিয়া সহজ করা যায়।
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, বাড়ি বদল, নথিপত্র হারিয়ে যাওয়া, পুরনো অ্যাকাউন্টের কথা ভুলে যাওয়া বা উত্তরাধিকার সংক্রান্ত জটিলতার কারণে অর্থ দীর্ঘদিন ধরে দাবি না হওয়া অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কেন্দ্রীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দেশের বিভিন্ন ব্যাঙ্কে প্রায় ৭৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ এমন অবস্থায় পড়ে আছে, যার কোনও দাবিদার সামনে আসেননি। এই বিপুল অঙ্কের অর্থ সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত সঞ্চয় হওয়ায় সরকার তা ফেরত দেওয়ার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে।
ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় ১০ বছরের বেশি সময় ধরে নিষ্ক্রিয় থাকা সেভিংস অ্যাকাউন্ট, ফিক্সড ডিপোজিট এবং রেকারিং ডিপোজিটকে সাধারণত আনক্লেমড অ্যামাউন্ট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। শুধু ব্যাঙ্ক নয়, বিমা ক্ষেত্রেও বিপুল অঙ্কের টাকা পড়ে রয়েছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকার আনক্লেমড ইন্সুরেন্স পলিসি এখনও দাবি করা হয়নি। একই সঙ্গে মিউচুয়াল ফান্ড খাতে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগেরও কোনও দাবিদার পাওয়া যাচ্ছে না।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ভারতীয়দের টার্গেট করছে হাদির সংগঠন? বড় দাবি জানিয়ে ইউনূস সরকারকে দেওয়া হল ডেডলাইন
এই পরিস্থিতিতে ‘ইউর মানি, ইউর রাইট’ অভিযানকে আর্থিক সচেতনতার দিক থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কেন্দ্রের বক্তব্য, এই কর্মসূচির মাধ্যমে শুধু টাকা ফেরানোই নয়, মানুষকে নিজেদের আর্থিক নথি ও বিনিয়োগ সম্পর্কে সচেতন করাও লক্ষ্য। আগামী দিনে আরও বেশি পরিমাণ দাবিহীন অর্থ প্রকৃত মালিকদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলবে বলেও আশ্বাস দিয়েছে সরকার।












