বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এসএসসি (SSC), প্রাথমিক টেট (Primary Tet) এবং অন্যান্য একাধিক ক্ষেত্রে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগে সরগরম গোটা বাংলা। প্রতিদিনই কোনো না কোনো ক্ষেত্রে নয়া দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসে চলেছে আর এবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নয়া সভাপতি গৌতম পালের (Gautam Pal) বিরুদ্ধে অস্বচ্ছতার অভিযোগ সামনে উঠে এলো, যা ঘিরে ইতিমধ্যে শোরগোল পড়েছে সর্বত্র। এ বিষয়টিকে সামনে এনে ইতিমধ্যে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) একটি মামলা পর্যন্ত দায়ের করা হয়েছে। দ্রুত মামলাটির শুনানি হবে বলে খবর সামনে আসছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলার বুকে শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসেছে আর এই সংক্রান্ত একটি মামলার দরুণ গত জুন মাসে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে বরখাস্ত করে কলকাতা হাইকোর্ট। গত বুধবার রাজ্য সরকারের তরফ থেকে উক্ত পদে নিয়োগ করা হয় গৌতম পালকে আর এবার তাঁর বিরুদ্ধেই উঠে গেল অস্বচ্ছতার অভিযোগ! স্বাভাবিকভাবেই রাজ্য সরকারের এহেন সিদ্ধান্তে সমালোচনায় সরব হয়েছে একাধিক মহল।
কি অভিযোগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সভাপতির বিরুদ্ধে? উল্লেখ্য, পর্ষদ সভাপতি হওয়ার আগে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য পদে নিযুক্ত ছিলেন গৌতম পাল। বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই এই পদে রয়েছেন তিনি। তবে বর্তমানে তাঁর পুরানো পদ ঘিরেই উঠে গিয়েছে একাধিক প্রশ্ন চিহ্ন। সহ উপাচার্য পদে নিয়োগ করা হলেও সেই সংক্রান্ত যোগ্যতা গৌতমবাবুর ছিলো না বলে ইতিমধ্যে হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, পর্ষদ সভাপতির বিরুদ্ধে বর্তমানে মামলাটি দায়ের করেছেন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মী প্রলয় চক্রবর্তী। এক্ষেত্রে যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে সহ উপাচার্য পদে নিযুক্ত হওয়ার জন্য যে সকল নিয়ম এবং যোগ্যতার দরকার পড়ে, তা গৌতম পালের ক্ষেত্রে মানা হয়নি বলে অভিযোগ প্রলয়বাবুর। এই প্রসঙ্গে তাঁর আইনজীবী জানান, “কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে গৌতম পালকে প্রধানত রিডার হিসেবে নিয়োগ করা হয়। তবে এক্ষেত্রে যে সকল নিয়ম এবং যোগ্যতা মানা দরকার, তা পালন করা হয়নি। সহ উপাচার্য হওয়ার কোনো রকম যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও তাঁকে পদে নিয়োগ করা হয়।”
ইতিমধ্যে আদালতে এ সংক্রান্ত মামলাটি উঠেছে এবং পরবর্তীতে মামলার শুনানি চলাকালীন আদালতের রায় কি হয়, সেদিকেই নজর সকলের। উল্লেখ্য, গত বুধবার মানিক ভট্টাচার্যর স্থানে পর্ষদ সভাপতির পদ গ্রহণ করেন গৌতম পাল। এক্ষেত্রে মানিকের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসায় তাঁকে বরখাস্ত করে কলকাতা হাইকোর্ট এবং এক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিয়ে আসার জন্যই কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন সহ উপাচার্যকে নিয়োগ করে রাজ্য। পদে বহাল হওয়ার পরেই গৌতমবাবু জানান, “নিয়োগের ব্যাপারে এবার থেকে সকল স্বচ্ছতা মানা হবে। প্রতিবছর টেট হওয়ার পাশাপাশি চাকরির উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা হবে। যদি কারোর কোনরকম প্রশ্ন থাকে, তবে আমাকে করতে পারেন। কোনো রকম দুর্নীতি হবে না।” তবে বর্তমানে সেই সভাপতির বিরুদ্ধেই অস্বচ্ছতার অভিযোগ ওঠায় শোরগোল পড়েছে সর্বত্র।