‘আমি মুখ্যমন্ত্রী হলে…’, এবার যা বললেন প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, শোরগোল রাজ্যে

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ লোকসভা নির্বাচনে বাংলার হাইভোল্টেজ কেন্দ্র গুলির মধ্যে একটি তমলুক। যার কারণ হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিজেপির টিকিকে এই কেন্দ্র থেকে দাঁড়িয়েছেন অভিজিৎবাবু (Abhijit Ganguly)। আইনের আদালত থেকে বর্তমানে তিনি জনতার আদালতে। রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার আগে থেকেই গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে চর্চার শেষ নেই। আর বিজেপিতে (BJP) যোগদানের পর থেকে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamta Banerjee) নিশানায় প্রাক্তন বিচারপতি। সম্প্রতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দেহত্যাগের দাবিও জানিয়েছেন মমতা।

সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে নিজের মতামত ব্যক্তি করেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পাশাপাশি মমতার বদলে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকলে এই নিয়োগ দুর্নীতির পরিস্থিতিতে কীভাবে হাল ধরতেন সেই নিয়েও মন্তব্য করেন তমলুক আসনের বিজেপি প্রার্থী।

বর্তমানে SSC নিয়োগ দুর্নীতি নিয়োগ নিয়ে শোরগোল রাজ্যে। একসময় এই মামলা গিয়েছিল তার এজলাসেও। গত মাসে নিয়োগ দুর্নীতির জেরে ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। যার জেরে চাকরি যায় প্রায় ২৬০০০ জনের। পরে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে যোগ্য-অযোগ্য সকলের চাকরিই আপাতত বহাল থাকলেও শুধুমাত্র সাময়িক স্বস্তিই মিলেছে। এদিন এই প্রসঙ্গে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন,’ যোগ্যদের কোনো দোষ নেই। তবে এখানে আলাদাই করা যাচ্ছে না কে যোগ্য আর কে অযোগ্য। কোর্ট যে ১৭ টা কারণ দেখিয়েছে যে কী কী পন্থায় দুর্নীতি হয়েছে তার কোনও উত্তর এই সমস্ত রাজনৈতিক নেতাদের কাছ থেকে আমি পাই নি। ‘

ধরুন আপনি মুখ্যমন্ত্রী। আপনার সরকারের আমলে এই দুর্নীতি হলে আপনি কী করতেন। সাংবাদিকের এই প্রশ্নের জবাবে গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘যদি এর দু’বছর আগে থেকে আমি মুখ্যমন্ত্রী থাকতাম তাহলে আমি এই কেলেঙ্কারি হতেই দিতাম না। যদিও দুর্নীতি তার অনেক আগে থেকেই হয়েছে। যখন এরম প্রশ্ন হচ্ছেই তাহলে যদি আমি ২০১৬ থেকে মুখ্যমন্ত্রী থাকতাম আমি কখনই এরম চোর-জোচ্চোরদের দ্বারা পরিবৃত হয়ে ঘোরাঘুরি করতাম না। আর নিজেকেও চোর বলে ছাপ মারা থেকে বিরত থাকতাম।’

অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আরও বলেন, ‘আমি মুখ্যমন্ত্রী থাকলে তখন চাকরি বিক্রি হত না। তা পরীক্ষা দিয়েই সঠিকভাবে হত। তাহলে এই দুর্নীতি উন্মেষই হত না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্নীতি হতে দিয়েছেন। আর এই বিষয়ে উনি সচেতন। সবটাই উনি জানতেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানেন না অথচ এত বড় দুর্নীতি ওনার চোখের সামনে হয়ে যাচ্ছে, কারা টাকা পাচ্ছে, কোথায় কোথায় টাকা যাচ্ছে, এমনকি কালীঘাটের কাকু যা বলছেন তার বর্ণনা মিলে যাচ্ছে। মমতা জানতেন না এটা হতেই পারে না।’

বিজেপি প্রার্থীর কথায়, ‘মমতা কতটা যুক্ত এর সঙ্গে সেটা তদন্তের আতস কাঁচের নীচে হয়তো চলে এসেছে। সেসব আরেকটু সময় গেলে দেখা যাবে। এখন বাংলায় কে মুখ্যমন্ত্রী আছেন তা আমি জানি না। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী বলে স্বীকার করি না। এটা আমি অনেক আগেই ঘোষণা করে দিয়েছি। এখন দলের নেত্রী তিনি চুরিরে সম্মতি দিচ্ছেন তার সক্রিয় যোগ রয়েছে বলে আমরা ধারণা পরে তদন্ত হলে বেরোবে আছে কী নেই, তখন আমি ভুল প্রমাণিত হলে হতেও পারি। ‘

Abhijit Gangopadhyay

আরও পড়ুন: ‘বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য…’, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে বিস্ফোরক দাবি মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের, তোলপাড়

অভিজিতবাবু আরও বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ওই ভদ্রমহিলার নাম বলা থেকে আমি আপাতত বিরত থাকছি। যদি পরে কখনও প্রয়োজন হয় তাহলে আমাকে দেখতে হবে আমি ওনাকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মানছি কী না। তবে এখন আমি ওনাকে মুখ্যমন্ত্রী বলছি না। আমি যদি এই সময় মুখ্যমন্ত্রী থাকতাম এই দুর্নীতি ভাই কখনোই হত না।’

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর