বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কিছুদিন আগেই জানা গিয়েছিল ভারতের একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বুদ্ধিজীবী এবং আইনজ্ঞের ফোনে আড়িপাতার কাজ করেছে ইজরায়েলের ‘পেগাসাস’ (Pegasus) নামক একটি সংস্থা। এই নিয়ে বিদেশি সংবাদমাধ্যমে সোমবার একটি খবর প্রকাশ হবে বলেও জানা গিয়েছিল। তখন অবশ্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ (Ravi Shankar Prasad) জানিয়েছিলেন, কোন ভারতীয় নাগরিকের ফোনে আড়িপাতা হয়নি। এসব সম্পূর্ণই গল্প কথা।
কিন্তু এবার সামনে এলো এক চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট। জানা গিয়েছে ‘পেগাসাস’ তার কাজ চালিয়েছে বাংলা নির্বাচন চলাকালীনও। এইসময় আড়িপাতা হয়েছিল তৃণমূলের ভোট প্রকৌশলী প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishor) এবং সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক ব্যানার্জির (Abhishek Banerjee) ফোনেও। অর্থাৎ বিজেপি বিরোধী দলগুলি কি রণনীতি তৈরি করার চেষ্টা করছে, তা যে জানার চেষ্টা হয়েছিল নির্বাচন চলাকালীন এ নিয়ে আর কোন সন্দেহ নেই।
পেগাসাসের এই ফোন হ্যাকিং কান্ডে শুধু যে অভিষেক ব্যানার্জি এবং প্রশান্ত কিশোরকেই টার্গেট করা হয়েছিল তা নয়। তালিকায় ছিলেন প্রশান্ত কিশোরের বেশ কিছু ঘনিষ্ঠ কর্মীও। আড়িপাতা হয়েছিল অভিষেক ব্যানার্জীর ব্যক্তিগত সচিবের ফোনেও। ইজরায়েলি সংস্থা পেগাসাস সম্পর্কে এই তথ্য এসে পৌঁছেছিল গত কয়েকদিন আগেই। কার্যত স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে বাংলার এই দুই প্রধান মুখের ফোনে যেভাবে আড়িপাতা হয়েছে তা যে ভয়ঙ্কর তা বলাই বাহুল্য। এনএসও (NSO) এও জানিয়েছে, যে কোন বৈধ সরকার এই তথ্য ক্রয় করতে পারে।
প্রশান্ত কিশোর জানিয়েছেন, “বাংলার ভোটের সময় পরীক্ষামূলকভাবে এই ধরনের পন্থা অবলম্বন করলে বুঝতে হবে জনমতে কোনও প্রভাবই পড়ে না। এটা তো অস্বীকার করার জায়গা নেই, ক্ষমতার ব্যবহার করে বেআইনিভাবে আড়িপাতা হয়েছিল।” তিনি এও বলেন তার কিছুটা সন্দেহ হয়েছিল যার কারণে তিনি পাঁচবার হ্যান্ডসেটও বদলেছিলেন কিন্তু তাতেও আড়ি পাততে কোন অসুবিধা হয়নি ওই সংস্থার। সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার আগেও তিনি হ্যান্ডসেট বদলে ছিলেন।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি ল্যাবের ডিজিটাল ফরেন্সিক রিপোর্ট অনুযায়ী আড়িপাতা হয়েছিল কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) এবং নতুন তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের (Ashwini Vaishnav ) ফোনেও। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৯ সালেও মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল ফোন হ্যাকিংয়ের। উঠে এসেছিল পেগাসাসের নাম। তখন অবশ্য বিষয়টা গল্প কথাই মনে হয়েছিল অনেকের। তবে সামনে এল আরও কিছুটা তথ্য প্রমাণ।