মাত্র ১২ বছর বয়সে বাড়িছাড়া, একাধিক মামলায় ১৫ বছরের জেল! সিনেমাকেও হার মানাবে ‘মাওবাদী’ শোভার কাহিনি

Published on:

Published on:

বাংলাহান্ট ডেস্ক : এ যেন কোনও থ্রিলার ছবি। ল্যান্ডলাইন বিষ্ফোরণ মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে ‘মাওবাদী’ (Maoist) সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছিল বছর ১২-র নাবালিকাকে। পুলিশের কাণ্ডে শোরগোল পড়েছিল সে সময়। সেদিনের সেই ১২ বছরের মেয়েটি আজ বছর ২৭ এর তরুণী। দীর্ঘ ১৫ বছরের জেল জীবন কাটিয়ে অবশেষে মুক্ত বেলপাহাড়ির শোভা মুন্ডা ওরফে চন্দনা সিং।

সিনেমার থেকে কম নয় ‘মাওবাদী’ (Maoist) শোভার কাহিনি

ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ির মাজুগড়া গ্রামের এক দরিদ্র আদিবাসী পরিবারে জন্ম শোভার। তার জীবনটাও আর পাঁচজনের মতো হতে পারত। কিন্তু বিধাতার বোধকরি অন্যরকম ইচ্ছা ছিল। মাত্র ১২ বছর বয়সেই বাড়ি ছাড়ে ‘খেপি’। পাঁচ বছর কোনও রকম খোঁজই মেলেনি তাঁর। বাড়ির লোকেরা একরকম হাল ছেড়েই দিয়েছিল। অবশেষে খোঁজ মেলে শোভার। জানা যায়, মাওবাদীদের (Maoist) দলে যোগ দিয়েছে সে। শুধু তাই নয়, দলেরই আরেক সদস্য রাজেশ মুন্ডাকে বিয়েও করেছে!

After 15 years Maoist shobha munda got bail

গ্রেফতার হয় শোভা: ২০০৯ সাল, ঝাড়খণ্ডের ঘাটশিলায় এক ল্যান্ডলাইন বিষ্ফোরণের ঘটনায় নাম জড়ানোর অভিযোগ ওঠে শোভার বিরুদ্ধে। ২০১০ সালে ঝাড়খণ্ড পুলিশ গ্রেফতার করে তাকে। শোভা তখন নাবালিকা। প্রশ্ন উঠেছিল, একজন নাবালিকাকে কীভাবে গ্রেফতার করা যায়? আরও অভিযোগ ছিল, রিপোর্টে ‘তরুণী’ বলে উল্লেখ করে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২০১৪ তে মাওবাদী (Maoist) কার্যকলাপে যুক্ত থাকার দায়ে ঘাটশিলা আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনায় শোভাকে।

 আরও পড়ুন : ‘ধূমকেতু’ই শেষ, আর ফিরবে না দেব-শুভশ্রী জুটি? মুখ খুললেন সাংসদ

জেল থেকে মুক্তি: তারপর থেকে কেটে গিয়েছে ১৫ বছর। ঘটনায় আসে ‘টুইস্ট’। উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণের অভাবে ১ লা জুলাই ‘বেকসুর খালাস’ পায় শোভা মুন্ডা। বেশ কয়েকটি মামলায় নাম জড়ানোয় মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে ছিল সে। তার স্বামী অবশ্য এখনও বন্দি বহরমপুর সংশোধনাগারে। শোভার দাবি, মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়েছিল তাকে। এত বছর পর বাড়ির পথে শোভা। পরিবারের সদস্যরা জানান, শোভার কোনও খোঁজ তাঁদের কাছে ছিল না। হঠাৎ করেই পুলিশ জানায়, মাওবাদী (Maoist) হামলায় নাকি গ্রেফতার হয়েছে শোভা।

আরও পড়ুন : চলন্ত অ্যাম্বুলেন্সেই গণধর্ষণ অচৈতন্য তরুণীকে! এই রাজ্যের ঘটনায় প্রশ্নের মুখে নিরাপত্তা

এদিকে এক মানবাধিকার সংগঠনের তরফে জানানো হয়, শোভা বেকসুর খালাস পেলেও তার মুক্তির পরেই পরিবারের উপরে নজরদারি শুরু করেছে পুলিশ। সে গ্রেফতার হওয়ার পরে প্রশাসন বা অন্য কোনও রাজনৈতিক দলও তার খোঁজ খবর নেয়নি বলে অভিযোগ।