বাংলাহান্ট ডেস্ক: ঐন্দ্রিলা শর্মা (Aindrila Sharma) চলে গিয়েছেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে থাকা স্মৃতি রয়ে গিয়েছে মানুষের সঙ্গে। আর থেকে যাবে চিরকাল। ঐন্দ্রিলার মৃত্যুর দশ দিন পরেও তিনি একই রকম প্রাসঙ্গিক। লড়াই, জেদ, ইচ্ছাশক্তির নতুন অর্থ শিখিয়েছিলেন তিনি। মানুষ চাইলে সবকিছুই হতে পারে, একথা মনে প্রাণে বিশ্বাস করতেন ঐন্দ্রিলা। লড়াইয়ে মা শিখা শর্মা ছিল তাঁর অনুপ্রেরণা আর লড়াইয়ে সঙ্গী সব্যসাচী চৌধুরী (Sabyasachi Chowdhury)।
সব্যসাচী ঐন্দ্রিলার কথা এখন আর কারোরই অজানা নয়। একসঙ্গে সিরিয়াল করতে গিয়েই আলাপ দুজনের। পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব যা দ্রুত গড়ায় প্রেমে। ঐন্দ্রিলা যতটা দস্যি, ছটফটে ছিলেন সব্যসাচী ততটাই শান্তশিষ্ট, মুখচোরা স্বভাবের। বিপরীত দুই মেরু কাছাকাছি এসে এক হয়ে গিয়েছিল দুই হৃদয়।
গত বছর ঐন্দ্রিলার দ্বিতীয় বার ক্যানসার ধরা পড়ায় প্রথম দিন থেকে লড়াইয়ে পাশে ছিলেন সব্যসাচী। দিল্লি থেকে কলকাতা সবসময় অভিনেত্রীর ছায়া হয়ে ছিলেন তিনি। এবার ঐন্দ্রিলার মা জানালেন মেয়ের ভালবাসা, যত্নের কাহিনি। একবার সব্যসাচীর অসুস্থতার খবর পেয়ে শুট ছেড়ে ছুটে এসেছিলেন ঐন্দ্রিলা।
স্কুটির পেছনে তাঁকে বসিয়ে নিজেই নিয়ে গিয়েছিলেন চিকিৎসকের কাছে। সব্যসাচীর লেখালেখির শখটাও ঐন্দ্রিলার জন্যই বড় আকার পেয়েছিল। অভিনেত্রীর জোরাজুরিতে ফেসবুকে লেখা শুরু করেন সব্যসাচী। বইমেলায় তাঁর লেখা বইও প্রকাশিত হয়। ঐন্দ্রিলার বই পড়ার স্বভাব ছিল না। কিন্তু সব্যসাচী পড়ে না শোনালে তিনিই আবার রাগ করতেন।
সব্যসাচী ঠিক করেছেন তিনি আর লিখবেন না কোনোদিন। যার জন্য লেখা সেই যখন নেই, তখন আর লেখার মানে নেই, এমনটাই বক্তব্য সব্যসাচীর। সংবাদ মাধ্যমকে ঐন্দ্রিলার মা জানান, নিজের লেখা থেকে ছবি তৈরি করার ইচ্ছা হয়তো ছিল সব্যসাচী। ঐন্দ্রিলাই হয়তো অভিনয় করতেন সেখানে। তাঁদের মতো ভালবাসা এই জীবনে আর একটা দেখেননি, দাবি করলেন শিখা শর্মা।
তিনি জানিয়েছিলেন, ঐন্দ্রিলা সব্যসাচী একসঙ্গে ছুটে যেতেন সবার বিপদে। এমনকি একবার নাকি শীতে একজনের কষ্ট দেখে মায়ের প্রিয় শালটা নিয়ে গিয়ে তার গায়ে জড়িয়ে দিয়েছিলেন অভিনেত্রী। তাতে মা রাগ করায় বলেছিলেন, ‘কী হয়েছে তাতে? আর একটা কিনে নাও।’