ভারতের হুঙ্কার “বিচার চাই”; পৈশাচিক ধর্ষণে শুধু পুড়েনি তার আত্মা,পুড়েছে দেশের অহংকার; কাঁদছে ভারত মাতা

 

অমিত সরকারঃ”শত শত সাম্রাজ্যর ভগ্নাবশেষ পরে /ওরা কাজ করে” সাম্রাজ্যঃ লোভী ক্ষমতা দর্পী জাতিগুলো দেশে দেশে সাম্রাজ্য বিস্তার করে বিপুল ঐশ্বর্যের অধিকারী হয়ে শক্তিও পরাক্রমের উচ্চশিখরে আসীন হয়। তাদের বড় নিষ্ঠুর বর্বরতা অমানুষিকতা তথাকথিত দুর্বল হয়ে পড়ে সমাজের পিছিয়ে পড়া শ্রেণি। কিন্তু এখানে শ্রেণীবৈষম্যের লড়াই নয়। এখানে রয়েছে মানবিকতার লড়াই। নারীজাতির উঠে আসার লড়াই। একটি নারী সমাজের সমস্ত কলুষতাকে দূর করে সমাজকে এক নতুন আয়না দেখায়। পৃথিবীতে নিয়ে আসেন নতুন প্রাণ। কিন্তু সেই প্রাণকে পদলেহন করে কিছু অমানুষিক নির্মম-নিষ্ঠুর পাশবিক চিন্তার মানুষ তাদের উপর অত্যাচার চালায়। সেই দলিত-মথিত দেহের ওপর তাদের পুরুষ শক্তির প্রতিযোগিতা চালায়। তাই বর্তমান সমাজের কাছে একটা লজ্জার নিদর্শন। যার পোশাকি নাম ধর্ষণ। কিন্তু কতদিন কিভাবে একে মেনে নিতে পারে সভ্য সমাজের মানুষ।

 

বারবার আন্দোলনের ঢেউ উঠে মোমবাতিগুলো জ্বলে ওঠে। কিন্তু তার পিছনের অন্ধকার আইন তাকে বারবার নিভিয়ে দেয়। নিভে যায় একের পর এক প্রাণ। কিন্তু কখনো সেই প্রাণ গুলো আবার চিতকার করে ওঠে আর্তনাদ করে ওঠে বাঁচার লড়াই এর জন্য। কিন্তু বাঁচতে দেয় না তারা। তারা সমাজে এমন এক প্রাণী যারা পশুর চেয়েও ভয়ানক। ইতিহাস বারবার নারীশক্তিকে পূজিত করেছে নিজস্ব ভঙ্গিতে কিন্তু কখনো বা প্রকৃতির অমোঘ লীলা পুরুষ জাতির এমন কিছু পৈশাচিক দৃষ্টিভঙ্গি যা খুবলে খেয়েছে তাদের দেহ। তছনছ করে দিয়েছে দেহের প্রতিটি অঙ্গ। তাতেও তাদের তৃষ্ণা মিটেনি। তারা সেই দগ্ধ দেহের উন্মত্ততার বাদ্যবাজনা বাজিয়েছে। উন্মাদনার কামরসের নিজেদের সিক্ত করেছে বারবার। বর্তমান সমাজ চায়না তাদের সেই পৈশাচিক কাজের আইনি সমাধান।। বর্তমান সমাজ চায় তাদের সেভাবে করেই শাস্তি দেওয়া হোক। যেভাবে সেই মেয়েটির নিজের শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত নিজের সাথে নিজের লড়াই করে দাবানলের মত দেহের জ্বালা কে কে গলাধঃকরণ করে ছটফট করতে করতে মারা গিয়েছে।

201912011575185477883191P63BhW5o2eY

নির্ভয়া কাণ্ডের ইতিহাস আজও স্মৃতির খাতায় জ্বলজ্বল করছে। সাত বছর আগে ভারতের প্রতিটি কোনা কেঁপে উঠেছিল। সেই ধর্ষণের প্রতিবাদ করতে ছোট থেকে বড় আট থেকে আশি বালক থেকে বালিকা বিদ্যালয় থেকে কলেজ প্রত্যেকে যেন সেই আন্দোলনের ছোট ছোট বন্নি শিখা হাতে এগিয়ে এসেছিল রাস্তায়। হয়েছিল বিক্ষোভ, চলছিল আন্দোলন। ভারতের বড় বড় নেতা নেত্রীদের সংবিধানের ধারা মাথানত করতে হয়েছিল সেই সময় তৎকালীন সরকারকে।

কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত প্রতিবাদ শুরু হয়। চার অভিযুক্তকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে আবেদন করা হয় অভিযুক্তদের হয়ে কেউ যেন সওয়াল জবাব না করেন। দোষীদের চরম শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে। হায়দরাবাদ সরকার চাইছে এই কেসকে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে তুলতে যাতে দ্রুত কেসের নিষ্পত্তি হয়।
হায়দরাবাদের ২৬ বছর বয়সী ওই পশু চিকিৎসককে বৃহস্পতিবার রাতে গণধর্ষণ করে চারজন। পুলিশ সূত্রে খবর, একটি টোল প্লাজায় তরুণী নিজের স্কুটি রেখে ক্লিনিকে গিয়েছিলেন।
অভিযুক্তরা প্রথমে তাঁর স্কুটি পাংচার করে। তারপর তরুণী সেখানে এলে তাঁকে জোর করে একটা ফাঁকা জায়গায় নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করে। তারপর একটা কালভার্টের নীচে নিয়ে গিয়ে পেট্রল ঢেলে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে।

কিন্তু এই লড়াইয়ে শেষ কোথায়? এই লড়াই কে কি প্রতিটি মেয়ে কি করে যেতে হবে? আধুনিক সভ্যতার কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে তাহলে আর কিসের সভ্য সমাজ? কিসের এত অহংকার? কিসের এত অস্মিতা? মানবিকতা যেখানে পাতালে প্রবেশ করেছে। সেখানে ধর্ষণ যদি হয় একটি দেশের লঘু বিষয় তাহলে তার চেয়ে লজ্জার আর কিছু নেই।


সম্পর্কিত খবর