৩৮ বছর বরফের তলায় চাপা, শেষে কফিনবন্দি হয়ে বাড়ি ফেরেন ‘অপারেশন মেঘদূতের’ ল্যান্সনায়েক

বাংলাহান্ট ডেস্ক : প্রায় ৩৮ বছর! ৩৮ টা শীত- বসন্ত পার করে বাড়ি ফিরলেন চন্দ্রশেখর হরবোলা। তবে পায়ে হেঁটে নয়। কফিনবন্দি হয়ে তিনি ফিরে এলেন নিজের গ্রামে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর ল্যান্সনায়েক চন্দ্রশেখর হরবোলার মৃতদেহ সিয়াচেনের হিমবাহের তুষারে প্রায় চার দশক ধরে চাপা পড়েছিল।

সেনা জওয়ানেরা সম্প্রতি চন্দ্রশেখরের দেহ উদ্ধার করে সিয়াচেন থেকে। চন্দ্রশেখর ‘অপারেশন মেঘদূতের’ অঙ্গ হিসেবে ১৯৮৪ সালের ২৯ শে মে টহলদারী চালাচ্ছিলেন সিয়াচেনে। সেই সময় ২০ জন সেনাবাহিনীর সদস্য চাপা পড়েন তুষারঝড়ে। ১৫ জনকে উদ্ধার করা গেলেও ৫ জনকে উদ্ধার করা যায়নি। চন্দ্রশেখর এই পাঁচ নিখোঁজের মধ্যে একজন।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইতিহাসে সিয়াচেনের এই অভিযান অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। ‘পয়েন্ট ৫৯৬৫’ অঞ্চলকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাত থেকে উদ্ধার করাই ছিল চন্দ্রশেখর ও তাঁর বাহিনীর প্রধান কাজ। সাফল্যের জেরে সিয়াচেন শত্রুপক্ষের কবলে যেতে পারেনি। তবে ভারত-পাক দু দেশেরই বহু সেনার প্রাণ এখানে বলিদান হয়েছে।

সূত্রের খবর, সিয়াচেনে রুটিন টহলদারি দেওয়ার সময় জওয়ানেরা একটি দেহ পড়ে থাকতে দেখে এক বাংকারের ভেতর। এছাড়াও সেখানে একটি ধাতব পাত দেখতে পাওয়া যায়। সেই পাতে লেখা ছিল ল্যান্সনায়েকের আইডি নম্বর। এরপর তথ্য খতিয়ে দেখে নিশ্চিত হওয়া যায় যে এই দেহটি ল্যান্সনায়েক চন্দ্রশেখরের।

Chandra ShekharLance Naik Chandra Shekhar

চন্দ্রশেখরের স্ত্রী শান্তি দেবী বলেছেন, “বারবার মেয়েদের আশ্বাস দিতাম যে বাবা ফিরে আসবে। ভেবেছিলাম পাক সেনারা ওকে হয়তো বন্দি করে রেখেছে।” তবে সংবাদমাধ্যমে গত ১৩ই আগস্ট সিয়াচেনে দেহ উদ্ধারের ঘটনা সামনে আসার পর আশাহত হন শান্তি দেবী। কারণ তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে এটি তাঁর স্বামীরই দেহ। দুই মেয়ে সহ শান্তি দেবী প্রতি মুহূর্তে ভেঙে পড়ছেন কান্নায়।


Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর