বাংলাহান্ট ডেস্ক: এই মুহূর্তে রাজ্য রাজনীতির অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে কেবল একটি কথাই। দুর্নীতি। দিন গড়ানোর সঙ্গে কমছে সরকারি চাকরি। বাকি যা থাকছে তা বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। ২০০৮-এ টাটা গোষ্ঠী সিঙ্গুর ছেড়ে চলে যাওয়ার পর আর সেভাবে শিল্প হয়নি পশ্চিমবঙ্গে। এ নিয়ে চলছে শাসক বিরোধীর মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি।
কে কতটা দুর্নীতি করল, কার আমলে দুর্নীতি বেশি হল, তা নিয়েই সরগরম হয়ে রয়েছে রাজ্যের রাজনৈতিক পটভূমি। রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদল হওয়ার পর কেটে গিয়েছে ১২ বছর। তবু কেন তেমন শিল্প এল না বঙ্গে? কেন রাজ্যের প্রগতি ঢাকা পড়ে গেল দুর্নীতির কালো মেঘে? অভিযোগ পালটা অভিযোগে হারিয়ে যাচ্ছে না তো আসল সমস্যাগুলি? সেই প্রশ্নই করেছিলাম আমরা। একেবারে শিল্পের খাসতালুক, বাংলার শিল্পাঞ্চল দূর্গাপুরে।
সৃজনী হলের বিতর্ক সভায় উপস্থিত ছিলেন গর্গ চট্টোপাধ্যায়, ইন্দ্রাণী মিশ্র, দেবাংশু ভট্টাচার্য, কোহিনুর মজুমদার, চন্দ্রশেখর ব্যানার্জি, তরুণজ্যোতি তিওয়ারি, সজল ঘোষ প্রমুখ। আমাদের প্রশ্নে গর্গবাবু যেমন বললেন, “বাংলায় কাজ আছে কিন্তু বাঙালির কাজ নেই। শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুরের অধিকাংশ জায়গা দখল করে রেখেছে বহিরাগতরা।” এ বিষয়ে বিজেপি-র জেলা সহ-সভাপতি বলেন, “ডিপিএল ভেঙে সেটি সঞ্জীব গোয়েঙ্কার হাতে তুলে দেওয়া হবে। সেখানে আবাসন তৈরি হবে। শিল্পের জন্য নির্ধারিত জায়গায় কীভাবে আবাসন হয়?”
বাংলায় চপশিল্প নিয়ে শাসক দলকে বরাবর কটাক্ষ করে এসেছে বিরোধী দলগুলি। এ দিনের সভামঞ্চ থেকে তাদের এক হাত নিলেন ইন্দ্রানী মিশ্র। বললেন, “চপশিল্প নিয়ে বিরোধীরা যা কটাক্ষ করেন, তা অনৈতিক। কারণ বাংলার প্রান্তিক মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে চপশিল্পের কারণে।” একই সুর শোনা গিয়েছে তৃণমূলের মুখপাত্র কোহিনুর মজুমদারের গলায়। বিজেপি-র নেতা তরুণজ্যোতি তিওয়ারি যেমন দায়ী করলেন রাজ্যের প্রশাসনকে। তাঁর মতে, শিল্পের জন্য কোনও সুবিধা দেয় না পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তাঁর কথার পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূলের আইটি সেলের মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্যের মত, “বিজেপি বলছে বাংলায় শিল্পের ভবিষ্যৎ নেই। তারা সরকার গড়লে শিল্প আনবেন। তার মানে বিজেপি-র এ রাজ্যে ভবিষ্যৎ নেই।”
বাংলায় শিল্পের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে শাসক-বিরোধী দলের প্রতিনিধি এবং শিল্পপতিরা দিলেন নিজেদের মতামত। এছাড়াও সেখানে উপস্থিত ছিলেন শিল্পপতি কবি দত্ত, স্বরূপ ঘোষ, বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী এবং শাসক দলের অন্যতম হেভিওয়েট নেতা মদন মিত্র। সব মিলিয়ে একটি হাই ভোল্টেজ বিতর্ক সভার আয়োজন করল বাংলাহান্ট ডিজিটাল মিডিয়া।
বাংলাহান্টের পথচলা শুরু হয়েছিল আজ থেকে ৬ বছর আগে ২০১৭ সালে। ২০২২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি কলকাতার ইস্টার্ন মেট্রোপলিটান বাইপাসের এনএক্স হোটেলে আয়োজিত হয়েছিল প্রথম বিতর্ক সভা। তারপর কেটে গিয়েছে অনেকগুলি মাস। এই কয়েক মাসে বঙ্গের সমস্যাগুলি তুলে ধরে আরও বেশ কয়েকটি বিতর্ক সভার আয়োজন করা হয়। এ বার আমরা পা রাখলাম বাংলার শিল্পাঞ্চল দূর্গাপুরে। যেখানে অনুষ্ঠিত হল আরও একটি বিতর্ক সভার।