প্রস্রাব ও নর্দমার জল থেকে তৈরি হয় এই বিয়ার, মিলছে গোটা দেশেই! খাবার আগে নাম জেনে নিন

বাংলাহান্ট ডেস্ক : সুরাপ্রেমী, অথচ বিয়ার পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। সারা বিশ্বেই পানীয়ের মধ্যে বিয়ারের জনপ্রিয় তুঙ্গে। বিয়ারের এই বিপুল জনপ্রিয়তার কারণেই বিভিন্ন দেশের পানীয় প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি গ্রাহকদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে বিয়ার তৈরি করে। সিঙ্গাপুরের ব্রুয়ার্কজ একটি বিখ্যাত বিয়ার প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান। তবে এই কোম্পানির একটা বিশেষত্ব আছে। জানা যাচ্ছে, এই কোম্পানি বিয়ার তৈরি করে মূত্র ও নর্দমার জল পরিশোধন করে। এই ঘটনা চূড়ান্ত আলোড়ন ফেরেছে বিশ্ব জুড়ে।

এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মূত্র ও নর্দমার জল শোধন করে ‘নিউব্রিউ’ নামে নতুন একটি বিয়ার বাজারে এনেছে ব্রুয়ার্কজ। দেশটির বিভিন্ন দোকান এবং বারগুলিতে পাওয়া যাচ্ছে এই নিউব্রিউ বিয়ার। শুধু তাই নয়, সিঙ্গাপুরের পরিবেশবান্ধব বিয়ার হিসেবে এই পানীয়টির প্রচারও চালাচ্ছে ব্রুয়ার্কজ।

জানা যাচ্ছে, এই ‘নিউব্রিউ’ বিয়ার তৈরি করতে জার্মান বার্লি ও নরওয়েজিয়ান ঈস্ট ব্যবহৃত হয়। অন্য সব বিয়ারের মতো এ বিয়ারেরও মূল উপাদান জল। এই বিয়ারটির ৯৫%-ই জল। নিউব্রিউ বিয়ারের মূল জল হলো নুওয়াটার। প্রধানত মূত্র ও নর্দমার জলের পরিশোধিত রূপই হচ্ছে নুওয়াটার। সিঙ্গাপুরে প্রায় ২০ বছর ধরে পয়ঃনিষ্কাশনের পানি পরিশুদ্ধ করে নুওয়াটার তৈরি করা হয়।

ব্রুয়ার্কজের কর্মকর্তারা জানান, নুওয়াটার দিয়ে বিয়ার তৈরির আগে অনেক রকম পরীক্ষা করা হয়েছে। বেশ কয়েক ধরনের ফিল্টারও করা হয়েছে। নিউব্রিউ বিয়ার পান উপযোগী এবং সম্পুর্ণ নিরাপদ।

সিঙ্গাপুর একটি দ্বীপ রাষ্ট্র হলেও পান যোগ্য জলের অভাব রয়েছে। জলসংকটের কারণে সিঙ্গাপুরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে অতীতে। বৃষ্টির জল সংরক্ষণ ও মালয়েশিয়া থেকে আমদানি করেও চাহিদার মাত্র ৫০ শতাংশই পূরণ করা সম্ভব হয়। বাকি পরিশুদ্ধ জলের মূল উৎস হলো নুওয়াটার ও সমুদ্রের জল।

Untitled design 2022 06 18T140429.391

সিঙ্গাপুর সরকারের ধারণা, ২০৬০ সালের মধ্যে এখানকার জলের চাহিদা বর্তমান সময়ের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বাড়বে। আর তার জন্যই দেশের জলসংকট নিয়ে সচেতনতা বাড়াতেই নুওয়াটার থেকে বিয়ার তৈরির অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে ব্রুয়ার্কজ।

তবে শুধু সিঙ্গাপুরই না, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে একই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেই জানা যাচ্ছে। জলের অপচয় কমানো এবং মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টিই এই কর্ম কাণ্ডের মূল উদ্দেশ্য।


Sudipto

সম্পর্কিত খবর