বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে ক্রমশ উর্ধ্বমুখী মুদ্রাস্ফীতির (Inflation) আবহে জর্জরিত সকলেই। যার ফলে দাম বেড়েছে প্রতিটি জিনিসেরই। এমতাবস্থায়, বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) সাম্প্রতিক সময়ের নিরিখে কয়েক বছর পূর্বে জিনিসপত্রের দাম কি ছিল সেই বিষয়ে একাধিক পোস্ট পরিলক্ষিত হচ্ছে। কখনও বাইক, কখনও সোনা-রূপো আবার কখনও বা সাইকেলের দামও সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে।
জেনে অবাক হবেন যে, আজ থেকে ৮৯ বছর আগে ভারতে একটি সাইকেলের দাম ছিল মাত্র ১৮ টাকা। অথচ আজ এই টাকায় একজন মেকানিক সাইকেলের পাংচারও ঠিক করেন না। এমনকি, দু’কাপ কফির দামও এর চেয়ে বেশি। বর্তমানে ১৯৩৪ সালের একটি সাইকেলের বিল সোশ্যাল মিডিয়ায় খুব ভাইরাল হচ্ছে। যা দেখে চক্ষু চড়কগাছ হয়ে গিয়েছে নেটিজেনদের।
ওই বিলটি সঞ্জয় খারে নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী শেয়ার করেছেন। সেখানে খারে দাবি করেছেন, সেটি তাঁর ঠাকুর্দার নেওয়া সাইকেলের বিল। বিলের ছবির সাথে ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, “একসময় সাইকেল অবশ্যই আমার ঠাকুর্দার স্বপ্ন ছিল। সময়ের চাকা সাইকেলের চাকার মতো কত ঘুরছে!” খারে যে বিলটি শেয়ার করেছেন সেটি কলকাতার কুমুদ সাইকেল ওয়ার্কসের। সাইকেলটি ১৯৩৪ সালের ৭ জানুয়ারি বিক্রি হয়েছিল। ১৯৩৩-এর মডেলের ওই সাইকেলটিতে একটি ঘণ্টা এবং আলো ছিল। যেটির দাম ছিল মাত্র ১৮ টাকা।
এদিকে, ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা এই বিলকে ঘিরে নেটিজেনরাও বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন। এই প্রসঙ্গে একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “সত্যিই দেশ এখন কতটা বদলে গেছে। এখন ১৮ টাকায় একটা সিটও পাওয়া যায় না, সাইকেল তো দূরের কথা।” অন্যদিকে, অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন যে, “আজকের সময়ে, ওই সাইকেলটি খুব দামি ছিল। তখন সরকারি মেকানিকের বেতন ছিল ১২ টাকা, হেড ক্লার্কের ২০ টাকা এবং কালেক্টরের ৫০ টাকা।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ব্যবহারের নিরিখে আমাদের দেশে যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠেছে সাইকেল। আজও বহু মানুষ সাইকেলকেই যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম করে রেখেছেন। তবে, সাইকেল যে শুধু সাধারণ মানুষ চালাতেন তা কিন্তু নয়। বরং, স্বনামধন্য ব্যক্তিদেরও পছন্দের তালিকায় রয়েছে এই যানটি। ইংল্যান্ড হোক অথবা দক্ষিণ আফ্রিকা, মহাত্মা গান্ধী প্রায়ই সবক্ষেত্রে সাইকেল চালাতেন। আজও গান্ধীজির সাইকেলটি সবরমতী আশ্রমে সংরক্ষিত আছে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী এবং বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদবও প্রচুর সাইকেল চালিয়েছেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনসুখ মান্ডব্য এখনও প্রায়ই সাইকেলে চেপে সংসদে যান।
ইসরো সাইকেলেই রকেটের যন্ত্রাংশ বহন করেছিল: জেনে অবাক হবেন যে, ভারতের প্রথম রকেট উৎক্ষেপণেও সাইকেলের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ISRO) ১৯৬২ সালে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কমিটি ফর স্পেস রিসার্চ নামে পরিচিত ছিল। এটি ১৯৬৩ সালে ভারতের প্রথম রকেট উৎক্ষেপণ করে। এই রকেটের অংশগুলি একটি সাইকেলে করে লঞ্চ সাইটে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।