বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: গত শনিবার প্রথম মহিলা ভারতীয় হিসাবে প্রিয়াঙ্কা গোস্বামী কমনওয়েলথ গেমসে ১০,০০০ মিটার বা ১০ কিমি হাঁটা ইভেন্টে রৌপ্যপদক জয় করেছেন। গোস্বামী এই প্রতিযোগিতায় ব্যক্তিগত সেরা সময় ৪৩:৩৮.৮৩ সেকেন্ড সময় করে রুপো জিতেছেন। অস্ট্রেলিয়ার জেমিমা মন্টাগে তাকে হারিয়ে সোনা জিতেছেন। কেনিয়ার এমিলি ওয়ামুসি এনগি প্রিয়াঙ্কার পরে ফিনিশ করে ব্রোঞ্জ জিতেছেন।
তেজস্বিন শঙ্কর (হাই জাম্প) এবং এম শ্রীশঙ্কর (লং জাম্পে) পরে প্রিয়াঙ্কার এই পদকটি ছিলো চলতি কমনওয়েলথ গেমসে ভারতের অ্যাথলেটিক্স থেকে তৃতীয় পদক। এর আগে পুরুষ ও নারী মিলিয়ে এই রেস ওয়াক প্রতিযোগিতায় কমনওয়েলথের ইতিহাসে ভারতকে একটিমাত্র পদক (ব্রোঞ্জ) এনে দিতে পেরেছিলেন হরমিন্দর সিং। সেই পদকটিও এসেছিল ২০১০ সালে। ২৬ বছর বয়সী প্রিয়াঙ্কা ভারতীয় মহিলাদের মধ্যে ২০ কিমি এবং ৩৫ কিমি উভয় ক্যাটাগরির রেস ওয়াকেই জাতীয় রেকর্ডের অধিকারী। শনিবার শুরু থেকেই গতি বাড়িয়ে নিজের যাত্রা শুরু করেছিলেন এবং ৪ কিমি দূরত্ব অবধি সবথেকে এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু তারপর অজি প্রতিদ্বন্দ্বির কাছে হার মানতে হয় তাকে।
প্রিয়াঙ্কা গত শনিবার পদক জয়ের পর যখন ক্যামেরাম্যানদের অনুরোধে ছবির জন্য কিছু পোজ দিচ্ছিলেন তখন একটি ব্যাপার সকলের নজরে পড়ে। তার হাতে ছিল একটি অষ্ট ধাতুর তৈরি শিশু গোপালের মূর্তি। সেই গোপালের মূর্তি যা আমাদের বাড়ির ঠাকুর ঘরে ঢুকলেই অনেকে দেখতে পাবেন। হামাগুড়ি দেওয়া সেই গোপাল হাতে মাখন এবং মুখে হাসি নিয়ে চুপচাপ বসে রয়েছে। আমাদের মা, ঠাকুমাদের হাতে সেই এক টুকরো ভালোবাসা জায়গাটা হাতে নিয়ে প্রিয়াঙ্কা নিজের পদক জয় উদযাপন করেছেন যা দেখে খুশি অনেকেই।
অনেকেই প্রিয়াঙ্কা গোস্বামীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এই ছোট্ট গোপালের সঙ্গে একসময় কথা বলার ভাষা গুলি জানতেন আমাদের ঠাকুরমা দিদিমারা। তারা বাড়িতে কারোর অসুখ হলে এই মূর্তির সামনে ধর্ণা দিতেন। আবার অন্য সময়ে নিজের সন্তানের মতোই যত্নে করতেন মুর্তিটিকে। অনেকের মতে প্রিয়াঙ্কা যখন থেকে এই মুহূর্তে প্রতি বিশ্বাস আবেগ এবং ভালোবাসাকে নিজের জীবনের অঙ্গ বানিয়েছেন তখন থেকেই জীবনের দৌড়ে ফেলেছেন। উত্তরপ্রদেশের মেয়ে হলেও আজ অনেক তিরিশোর্ধ্ব বাঙালি তাকে দেখে নিজেদের ছোটবেলাকে যেন ফিরে পাচ্ছেন। তাই মন থেকে এবং দুহাত ভরে প্রিয়াঙ্কাকে শুভেচ্ছা ও আশীর্বাদ জানিয়ে ভবিষ্যতের জন্য শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।