বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পরাজিত প্রার্থীদের জন্য নিরাপত্তা বলয় কেন থাকবে, তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল দলের অন্দরেই। বিজেপির অন্দরে একাংশ এও বলেছিলেন, যারা জিতেছেন তাদের জন্য নিরাপত্তা বেশি জরুরি। এই অবস্থাতে দলের মধ্যেই ছিল বিরোধ, কারণ তৃণমূল থেকে আসা অনেক হেভি ওয়েট নেতাই এসেছিলেন আগে থেকে নিরাপত্তা বলয়ের শর্ত নিয়ে। শেষ পর্যন্ত বেশ কয়েকজন তারকা প্রার্থীর নিরাপত্তা বলয় তুলে নিল কেন্দ্র। তৃণমূলের মতই ভোটের আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন এক ঝাঁক তারকা। অনেকের মতে টলিউড দু’ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছিলও বলা চলে। একদিকে যেমন ছিলেন রাজ চক্রবর্তী, কাঞ্চন মল্লিক, লাভলী মৈত্র,সায়নী ঘোষ, কৌশানিরা। তেমনি অন্যদিকে ছিলেন পাপিয়া অধিকারী, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, রুদ্রনীল ঘোষ, তনুশ্রী ভট্টাচার্য সহ আরো অনেকে।
নিরাপত্তা তুলে নেয়া হলো তারকা প্রার্থীদেরঃ
কিন্তু নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর দেখা যায়, তৃণমূলের তারকা প্রার্থীদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জয় হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হারতে হয়েছে গেরুয়া শিবিরের একাধিক তারকা প্রার্থীকে। এমনকি পরাজিত হয়েছিলেন হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ও। এমতাবস্থায় নিরন্তর এই তৈরি হয়েছিল বিতর্ক। সেই কারণেই শেষপর্যন্ত তনুশ্রী ভট্টাচার্য, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, পাপিয়া অধিকারী, রুদ্রনীল ঘোষ সহ একাধিক বিজেপি নেতৃত্বের নিরাপত্তা প্রত্যাহার করল দল। অবশ্য বিজেপি সূত্রের খবর নির্বাচনের পর ১০ মে অব্দি ছিল নিরাপত্তা। তারপর নিরাপত্তা রাখতে হলে আবেদন করতে হতো প্রার্থীদের। কিন্তু তারা সেই আবেদন করেননি।
প্রার্থীদের বক্তব্যঃ
পাপিয়া অধিকারী জানান, “ভোটের আগে নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল। এরপর কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হবে বলে নির্দেশিকা আছে। নিরাপত্তা রাখতে চাইলে আবেদন করার কথাও বলা হয়েছিল। আমি আর আবেদন করিনি।”
অন্যদিকে শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় কিম্বা তনুশ্রী ভট্টাচার্য এ বিষয়ে কোন মুখ না খুললেও মুখ খুলেছেন রুদ্রনীল ঘোষ। যদিও তার নিরাপত্তা অবশ্য এখনও রয়েছে। তিনি জানান,তিনি চেতলায় মার খাবার পর থেকে নিরাপত্তা পেয়েছিলেন। এ বিষয়ে তিনি নিজে থেকে কিছু বলতে চান না। দল যা সিদ্ধান্ত নেবে তাই তিনি মেনে নেবেন। অন্যদিকে হেরেছেন পায়েল সরকারও। এ বিষয়ে মুখ না খুললেও জানা গিয়েছে, আপাতত লকডাউনের কারণে বাড়িতেই আছেন অভিনেত্রী আর সেই কারণেই নিরাপত্তা ছেড়ে দিয়েছেন তিনি।
কটাক্ষ তৃণমূলেরঃ
যদিও এ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল। তৃণমূল নেতা সৌগত রায়ের বক্তব্য, “বিজেপি কেন্দ্রীয় সুরক্ষা নিয়েও নোংরামি করছে। তারকাদের কাজ শেষ। তাই নিরাপত্তা তুলে নিয়েছে। ওরা বুঝুক বিজেপি কেমন পার্টি।”
অন্যদিকে অবশ্য বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “তারকা প্রার্থী ছাড়াও কিছু সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল। নির্বাচন শেষ। যাদের নিরাপত্তা দিয়েছিল তাদের থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। যাদের প্রয়োজন আছে এখনও। তাদের নিরাপত্তা আছে এখনও। যাদের প্রয়োজন নেই বলে মনে হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয়েছে।”