বাংলা হান্ট ডেস্কঃ SSC কেলেঙ্কারির পর এবার নজরে প্রাইমারি টেট। এপ্রিলের শেষেই নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে বাতিল হয়েছে ২০১৬ এসএসসির গোটা প্যানেল। হাইকোর্টের নির্দেশে (Calcutta High Court) যোগ্য-অযোগ্য মিলিয়ে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ২৬০০০ জন। সেই নিয়ে তোলপাড়ের মাঝেই এবার ২০১৪ সালের প্রাইমারি টেট (Primary TET) নিয়েও প্রশ্ন। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগেও ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে, বিপুল টাকার বিনিময়ে বিক্রি হয়েছে অধিকাংশ চাকরি। এই তথ্যই এবার সামনে উঠে আসছে।
এসএসসির মতো ২০১৪ সালের প্রাথমিকে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক দুর্নীতির কথা আদালতে জানাল CBI. প্রাইমারিতে নিয়োগ নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে রিপোর্ট পেশ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। CBI-র পেশ করা রিপোর্টে বলা হয়েছে, এসএসসির মতো প্রাথমিকেও দেদারে বিক্রি হয়েছে চাকরি। টাকার বিনিময়ে চলেছে দুর্নীতি।
সম্প্রতি এই নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে রিপোর্ট জমা করে সিবিআই জানিয়েছে, প্রাইমারিতে টিচার্স ট্রেনিং কলেজের আড়ালে টাকার বিনিময়ে বিক্রি করা হয়েছে যোগ্যদের চাকরি। মূলত DLEd কলেজগুলির ওপর ভর করে চলেছে চাকরি বিক্রির চক্র। এদিন বিচারপতি মান্থার এজলাসে রিপোর্ট পেশ করে প্রাইমারি নিয়োগ দুর্নীতির চক্র ‘খোলসা’ করে সিবিআই।
সিবিআই এর দাবি, এই প্রাইমারি দুর্নীতি চক্রের পান্ডা ছিলেন অল বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং অ্যাচিভার্স অ্যাসোসিয়েশন (ABTTAA)-এর প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত তাপস মণ্ডল। বহু কলেজের মালিকানা ছিল তার অধীনে। সিবিআই এর দাবি, বিপুল টাকার বিনিময়ে TET ফেল দের কাছে চাকরি বিক্রি করেছেন এই তাপস মণ্ডল। নিয়োগে দুর্নীতি করে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে মোট ৪ কোটি ১২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা এজেন্ট মারফত তাপস মণ্ডল। এমনই বিস্ফোরক দাবি করেছে সিবিআই।
আদালতে সিবিআই এর দাবি, নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত কুন্তল ঘোষের সঙ্গে হাত মিলিয়ে প্রাইমারিতে চাকরি বিক্রি করেছেন এই তাপস। এই বিষয়ের উল্লেখ করে রিপোর্টে সিবিআই জানিয়েছে, চাকরি বিক্রির ক্ষেত্রে তাপস এবং কুন্তল ঘোষের যোগসূত্র মিলেছে। CBI জানিয়েছে, পরীক্ষা হওয়ার আগেই চাকরি বিক্রি হয়ে যায়। যারা টাকা দিয়েছিলেন তাদের সাদা খাতা জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছিল এই তাপস, কুন্তলরা। সাদা খাতা জমা দিয়েই চাকরি পেয়েছেন তারা।
আরও পড়ুন: উত্তাল সমুদ্র! জারি হল টর্নেডো সতর্কতা! একটু পরই দক্ষিণবঙ্গের ৬ জেলায় ৬০ কিমি বেগে কালবৈশাখী
এদিন রিপোর্ট পেশ করে সিবিআই জানায়, ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেটের ভিত্তিতে যে ৩২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছিল তাদের অনেকেই টাকার বিনিময়ে চাকরি পেয়েছেন। এদিন সিবিআই এর পেশ করা রিপোর্ট দেখে বিচারপতি মান্থার প্রশ্ন, রাজ্য প্রাইমারি শিক্ষা সংসদের পক্ষে কি যোগ্য-অযোগ্যদের বেছে নেওয়া সম্ভব?
প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের কাছে বিচারপতি মান্থার জানতে চেয়েছেন, প্যানেল থেকে যোগ্য ও অযোগ্যদের আলাদা করা সম্ভব কি না। যদি সম্ভব না হয় তাহলে SSCর মতো ২০১৪ সালের ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের গোটা প্যানেলটাই বাতিল করে দিতে পারে হাইকোর্ট। গত শুনানিতে এই বিষয়ে জবাব তলব করেছেন বিচারপতি। সংসদকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে আদালতকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।