সন্দেশখালি কাণ্ডে মুখ পুড়ল রাজ্যের! হাইকোর্টে বড় জয় শুভেন্দুর

বাংলা হান্ট ডেস্ক : সন্দেশখালি (Sandeshkhali) কাণ্ডে বড় জয় শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari)। ১৪৪ ধারা নিয়ে বড় রায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। এইদিন বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর এজলাসে খারিজ করা হল রাজ্যের জারি করা ১৪৪ ধারা। একইসাথে শুভেন্দু অধিকারীর মামলা প্রসঙ্গে কলকাতা হাই কোর্ট জানাল, এবার থেকে আর সন্দেশখালি যাওয়াতে কেউ বাধা দেবেনা। এলাকা পরিদর্শনের জন্য তিনি অনায়াসে যেতে পারেন সেখানে।

এইদিন সন্দেশখালিতে জারি হওয়া ১৪৪ ধারা সম্পর্কে বিচারপতি বলেন, সাধারণত যে জায়গায় বিশৃঙ্খলা চরমে পৌঁছায় সেইসব জায়গাকে চিহ্নিত করে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। তবে এক্ষেত্রে গোটা সন্দেশখালিতেই ১৪৪ ধারা জারি করেছে রাজ্য। যা সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয়। বরং সন্দেশখালির যা পরিস্থিতি তাতে আরও সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন করা উচিত বলে মনে করেছেন তিনি।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত সোমবার সন্দেশখালি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন বিজেপি দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে পৌছানোর পর প্রসাশনিক বাধার সম্মুখীন হতে হয় তাকে। তারপরেই তিনি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। সন্দেশখালিতে ঢুকতে চেয়ে মামলা করেন তিনি। এইদিন সেই মামলা খারিজ করে বিচারপতি বলেন, যেহেতু ১৪৪ ধারা বাতিল করা হল তাই আর এই মামলার প্রয়োজন নেই। এবার তিনি ইচ্ছে করলেই এলাকা পরিদর্শনে যেতে পারেন।

আরও পড়ুন : ‘মাথায় বন্দুকের নল ঠেকিয়ে ধর্ষণ’, সন্দেশখালি কাণ্ডে উদ্বিগ্ন হাইকোর্ট! বড় সিদ্ধান্ত আদালতের

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত বুধবার থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সন্দেশখালির পরিস্থিতি। তৃণমূলের গুণ্ডা শেখ শাহজাহানের কুকর্মের বিরুদ্ধে সরব হয় সন্দেশখালির সাধারণ মানুষজন। মেয়েদের উপর হওয়া ধর্ষণের প্রতিবাদে লাঠি, ঝাঁটা হাতে পথে নামে সন্দেশখালির আদিবাসী মহিলারা। এরপরেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গোটা এলাকায় জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। বন্ধ করা হয় ইন্টারনেট পরিষেবা। তারপরেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় বাম নেতৃত্ব।

আরও পড়ুন : রাম মন্দিরের আদলে হওয়ার জের, বেলগাছিয়ায় গুঁড়িয়ে দেওয়া হল বাচ্চাদের সরস্বতী প্যান্ডেল! উত্তপ্ত এলাকা

মঙ্গলবার সেই মামলা প্রসঙ্গে রাজ্যের কাছে প্রশ্ন রাখেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। জিজ্ঞেস করেন, ‘গোটা সন্দেশখালি জুড়ে উত্তেজনা? কেন গোটা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি? এর পর তো বলবেন গোটা কলকাতা জুড়েই ১৪৪ ধারা জারি করতে হবে। মামলায় গুরুতর অভিযোগ করা হয়েছে। হালকা ভাবে নেবেন না।’ তখনই আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, এই ঘটনায় পুলিশ আধিকারিকরাও অভিযুক্ত। এতকিছু হয়ে যাওয়ার পরেও শাহজাহান, সুশান্ত, শিবু, উত্তমদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি পুলিশ।

আরও পড়ুন : সন্দেশখালির ঘটনায় চুপ অপর্না, কৌশিকরা! ‘কলকাতার বুদ্ধিজীবীরা নির্লজ্জ’, বলছে অপর বিশিষ্ট মহল

তখনই বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘এখনও কি ওই পুলিশ কর্মীরাই তদন্ত করছেন? তারাই কি আইনশৃঙ্খলা সামলাচ্ছেন?’ জবাবে বিকাশরঞ্জন জানান, পুলিশই সামলাচ্ছে। জবাব শুনে ভর্ৎসনার সুরে বিচারপতি সেনগুপ্ত বলেন, ‘গত তিন বছর ধরে পুলিশ কোনও অভিযোগ নেয়নি বলে দাবি। এলাকার মহিলারা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। এত কিছু অভিযোগের পরে আদালত চোখ বন্ধ করে থাকতে পারে না।’

Moumita Mondal
Moumita Mondal

মৌমিতা মণ্ডল, গ্র্যাজুয়েশনের পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। বিগত ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে লেখালেখির সাথে যুক্ত। প্রায় ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর