বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সারা দেশ জুড়ে উদ্বেগজনক ভাবে বেড়েই চলেছে স্কুল-ছুটদের সংখ্যা। সম্প্রতি এই নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে কেন্দ্র। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ওই রিপোর্ট অনুযায়ী সারা দেশের স্কুল-ছুটদের সংখ্যার নিরিখে সবচেয়ে এগিয়ে পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal)। গত শিক্ষাবর্ষে গোটা বাংলায় ৩ হাজারের বেশি স্কুলছুট রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের এই ৩ হাজার ২৫৪ টি স্কুলে গত শিক্ষাবর্ষে কোন পড়ুয়াই ভর্তি হয়নি। অর্থাৎ সম্পূর্ণ ছাত্রশূন্য স্কুল। গোটা দেশের নিরিখে এমন স্কুলের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি রয়েছে বাংলাতেই। অথচ কোনো পড়ুয়া না থাকায় এই স্কুলগুলিতে মোট ১৪ হাজার ৬২৭ জন জন শিক্ষক ছিলেন।
বাংলার (West Bengal) ছাত্রশূন্য স্কুল নিয়ে ভয়ানক রিপোর্ট প্রকাশ করল কেন্দ্র
সারা দেশে এমনও অনেক স্কুল রয়েছে যেখানে পড়ুয়ারা ভর্তি হলেও শিক্ষক রয়েছেন মাত্র একজন। কেন্দ্রের দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী রাজ্যে (West Bengal) একজন শিক্ষক থাকা স্কুলের সংখ্যা ৬ হাজার ৩৬৬ টি। ওই ২০০ পাতার রিপোর্টে বলা হয়েছে সারাদেশে প্রায় ১৩ হাজার স্কুলে গত শিক্ষাবর্ষে কোন পড়ুয়া ভর্তি হয়নি। এই স্কুলগুলিতে শিক্ষক ছিলেন মোট ৩১ হাজার ৯৮১ জন। আবার এমন প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার স্কুল রয়েছে যেখানে পড়ুয়া ভর্তি হলেও শিক্ষক রয়েছেন মাত্র একজন।
ছাত্রশূন্য স্কুলের পরিসংখ্যানে হিসেবে বাংলার পরেই দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রাজস্থান। এই রাজ্যের ২ হাজার ১৬৭ স্কুলে কোনো পড়ুয়া ভর্তি হননি। তৃতীয় স্থানে থাকা তেলঙ্গানায় ২ হাজার ৯৭টি স্কুলে গত শিক্ষাবর্ষে কোন পড়ুয়া ভর্তি হয়নি। শিক্ষা মন্ত্রকের অধীনস্থ ‘ইউনিফায়েড ডিস্ট্রিক্ট ইনফরমেশন সিস্টেম ফর এডুকেশন প্লাস’ থেকে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কিত একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছিল। মূলত বিভিন্ন রাজ্যের থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই রিপোর্ট তৈরি করেছে শিক্ষা মন্ত্রক।
রাজ্যের (West Bengal) স্কুলগুলির এই পরিস্থিতির দেখে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মন্ডল দাবি করেছেন এই পরিসংখ্যান থেকে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে শুধুমাত্র বই খাতা ট্যাব পাইয়ে দিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি করা যায় না। তাই তিনি বুনিয়াদি কাঠামোর উন্নয়ন দাবি করেছেন। একই সুরে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেছেন, ‘সারা দেশের নিরিখে আমাদের রাজ্যে সবচেয়ে বেশি ছাত্র-শূন্য স্কুল রয়েছে। বহু স্কুলে একজন করে শিক্ষক। এটি আমাদের কাছে লজ্জার।’
পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) স্কুলগুলিতে ছাত্র শিক্ষকদের অনুপাত কেমন আছে তা সব স্কুলের কাছেই জানতে চেয়েছে শিক্ষা দপ্তর। পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত কোন স্কুলে কতজন পড়ুয়া রয়েছে? কোথায় কত জন শিক্ষক রয়েছেন সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করতে শুরু করেছে রাজ্য। বিকাশ ভবন সূত্রে খবর সাধারণত কোনো স্কুলে যদি প্রতি ৪০ জন ছাত্র একজন করে শিক্ষক থাকেন তাহলে তাকে আদর্শ ছাত্র শিক্ষক অনুপাত বলে মনে করা হয়। যদিও বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ১১০ বা ১২০ জন পড়ুয়া পিছু একজন শিক্ষক থাকলে তাকেও আদর্শ অনুপাত বলে মনে করা হয়।