ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি চীনে, যেকোনো মুহূর্তে ডুবে যেতে পারে ব্যাঙ্কিং সিস্টেম, বিশাল চাপে জিনপিং

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চিনের (China) ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। মূলত, চিনে রিয়েল এস্টেট সেক্টরের ঋণ এখন এমন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে যে তা বিশ্বের বৃহত্তম ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার জন্য রীতিমতো হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ হল, এর কোনো তাৎক্ষণিক সমাধান চোখে পড়ছে না।

উল্লেখ্য যে, চিনা ব্যাঙ্কগুলি দ্বারা বিতরণ করা মোট ঋণের প্রায় ৪০ শতাংশ শুধুমাত্র রিয়েল এস্টেট কোম্পানিগুলিকে দেওয়া হয়েছে। এখন এই বিষয়টি সেখানকার ব্যাঙ্কগুলির জন্য একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, বেশ কয়েকটি কোম্পানি এবং রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার রয়েছে যারা ঋণখেলাপি হয়েছে। শুধু তাই নয়, চিনের সবচেয়ে বড় রিয়েল এস্টেট কোম্পানি “China Evergrande” বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ঋণগ্রস্ত কোম্পানি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

China is in a deep crisis

বহু বছর ধরে এই সঙ্কট তৈরি হয়েছে: চিনে রিয়েল এস্টেট কোম্পানিগুলির ঋণ সঙ্কট দুই-একদিনে দেখা দেয়নি, বরং বহু বছর ধরে এই পর্যায়ে তা পৌঁছেছে। চিনের রিয়েল এস্টেট সেক্টরে এই সঙ্কটের একটি প্রধান কারণ হল বিশাল ঋণ। এছাড়াও প্রোপার্টির ওভার সাপ্লাই সহ লোকজন বাড়ি ও অন্যান্য সম্পত্তি কেনার সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসাও এই পরিস্থিতির অন্যতম কারণ।

আরও পড়ুন: পকেটে পড়বে টান! এবার স্কুটার-বাইকের দাম বাড়াতে চলেছে এই কোম্পানি, পুজোর আগেই মিলল দুঃসংবাদ

সরকারকে বেলআউট দিতে হবে: এদিকে, বহু বছর ধরে চলমান এই ঋণ সঙ্কট মোকাবিলায় সরকারকে আগামী বেশ কয়েক বছর ধরে ব্যাঙ্কগুলিকে বেলআউট প্যাকেজ দিতে হবে। চিন সরকার এর জন্য পদক্ষেপ নিতেও শুরু করেছে। যার মধ্যে যুক্ত রয়েছে ব্যাঙ্কগুলিকে ঋণগ্রহীতাদের অর্থ পরিশোধের জন্য সময় দিতে বলার মতো বিষয়। এতে ঝুঁকি থাকলেও বর্তমান সঙ্কট কিছুটা হলেও এড়ানো যাবে। পাশাপাশি, চিনের এই সমস্যাও অত্যন্ত গুরুতর। কারণ সেখানকার পুরো ব্যাঙ্কিং সেক্টরের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। ছোট-বড় প্রতিটি ব্যাঙ্কেই চিন সরকারের শেয়ার রয়েছে।

আরও পড়ুন: একসাথে বহু পদে নিয়োগ শুরু করলো কেন্দ্র, হাতে নেই সময়, এক্ষুনি করুন আবেদন

ডুবে যাবে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা: এই প্রসঙ্গে হংকংয়ের একটি ইকোনমিক রিসার্চ ফার্ম ওরিয়েন্ট ক্যাপিটালের প্রতিষ্ঠাতা অ্যান্ড্রু কোলিয়ার জানিয়েছেন যে, চিন যদি এই ঋণ সঙ্কট মোকাবিলায় ব্যর্থ হয় সেক্ষেত্রে প্রোপার্টি মার্কেটে আটকে থাকা ঋণগুলি সঠিকভাবে নিষ্পত্তি করতে পারবে না। তাই সুদের খরচ বাড়বে। যা অর্থনীতির ক্ষতি করবে। পাশাপাশি, এই ধরণের বিনিয়োগে প্রচুর পুঁজি বিনিয়োগ হতে থাকবে। যার কোনো মূল্য থাকবে না। এমন সঙ্কট সত্বেও, চিনে রিয়েল এস্টেটের দাম কমার কোনো আশা দেখা যাচ্ছে না। এমতাবস্থায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে, এটি পুরো ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেবে। যেমনটি ২০০৮ সালে আমেরিকার মন্দার পরে হয়েছিল।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর