বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যের দুয়ারে পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat Vote)। একদিকে যেখানে চলছে শেষ মুহূর্তের তোড়জোড়। সেখানে নির্বাচনের ঠিক ৪৮ ঘন্টা আগে বৃহস্পতিবার অস্ত্রোপচার হয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)। পায়ে অস্ত্রোপচারের জন্য বৃহস্পতিবার দুপুরে এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় মমতাকে। মুখ্যমন্ত্রীর হাঁটুতে জমা ফ্লুইড একটা ছোট অপারেশনের মাধ্যমে বের করা হয়। এরপর এসএসকেএম থেকে ফিরলেন মমতা। তাকে টানা বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
প্রসঙ্গত, সপ্তাহ খানেক আগে পঞ্চায়েত ভোট পূর্বে প্রচারের জন্য উত্তরবঙ্গে যান তৃণমূল সুপ্রিমো। সেখানে গিয়ে জলপাইগুড়ি থেকে উড়ানের পরই দুর্যোগের কবলে মধ্যে পড়ে মমতার হেলিকপ্টার। বৈকুণ্ঠপুরের জঙ্গলের ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় প্রবল ঝড়-বৃষ্টির দরুন সেবকে বায়ুসেনার ঘাঁটিতে জরুরি অবতরণ হয়। সেই সময়ই নামতে গিয়ে কোমরে এবং পায়ে ভীষণ ভাবে চোট পান মুখ্যমন্ত্রী। তার জেরেই অস্ত্রোপচার।
তবে নিজের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনেএই প্রথম যে মুখ্যমন্ত্রী চোট পেলেন তেমনটা কিন্তু নয়। এর আগেও বহুবার চোট পেয়েছেন মমতা। সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজ মুখেই সেকথা জানান তৃণমূল সুপ্রিমো।
দীর্ঘ রাজনৈতিক কেরিয়ারে কোথায় কোথায় চোট পেয়েছেন তিনি? মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমার ব্রেন অপারেশন হয়েছে। আমার মাথায় ৪৬টি স্টিচ আছে। দু’হাত এ অপারেশন হয়েছে। দু’হাত পুরোটাই কাটা। পেটটাও পুরো কাটা। তিনবার অপারেশন হয়েছে।”
মমতা আরও বলেন, “আমার চোখে অপারেশন হয়েছে।” এরপরেই নন্দীগ্রামের ঘটনার উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পায়ে যে চোটটা দিল, সেটা এখনও ভালো হয়নি। এখনও ফুলে আছে। কোনওদিন ভালো হবে না। এসব যন্ত্রণা নিয়েই আমায় চলতে হয়। আমার মনের জোর খুব বেশি।”
জানিয়ে রাখি, গতকাল দুপুরে এসএসকেএমের ইউসিএম ভবনে আসেন মমতা। সেখানে পৌঁছে তার পায়ের দুটি স্ক্যান করা হয়। এরপর মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয় উডবার্ন ওয়ার্ডে। সেখানে সাড়ে ১২ নম্বর কেবিনে তৃণমূল সুপ্রিমোকে রাখা হয়। দুপুর ২টোর একটু পর হাঁটুতে অস্ত্রোপচার শুরু হয় তার। জয়েন্ট অ্যাসপিরেশনের মাধ্যমে বের করা হয় মাননীয়ার হাঁটুতে জমা থাকা ফ্লুইড।
সম্প্রতি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার পর সেদিনই কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় মুখ্যমন্ত্রীকে। সেই সময় চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রীর বাঁ পায়ের হাঁটু ও হিপ জয়েন্টের লিগামেন্টে আঘাত লেগেছে৷ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, তার ‘হাঁটু স্ম্যাশ হয়ে গেছে’। লিগামেন্ট ও টিস্যু ছিঁড়েছে। তারপর থেকেই ফিজিওথেরাপি চলছিল তার।
বৃহস্পতিবার সেই চিকিৎসার অংশ হিসেবেই এসএসকেএমে ছোটোখাটো অস্ত্রোপচার করা হয় মুখ্যমন্ত্রীর। বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ সেই প্রক্রিয়া শেষ হয়। এরপর তাকে ওটিতেই পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। মমতার পায়ে বিশেষ ধরনের ব্যান্ডেজ বাঁধা। হাসপাতাল থেকে বের করার সময় তাকে হুইলচেয়ারে গাড়ি পর্যন্ত আনা হয়। সঙ্গে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
জানা গিয়েছে এদিন বাড়ি ফিরে গেলেও, তাকে বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। মুখ্যমন্ত্রীকে দেখতে রোজ তার বাড়িতে যাবেন ফিজিওথেরাপিস্ট ও চিকিৎসক দল। আপাতত তাকে বেশ কিছু অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ দেওয়া হয়েছে।