বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গরু পাচার মামলায় (Cow Smuggling Case) বহুদিন জেলবন্দি বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। অন্যদিকে তদন্তে অসহযোগিতার অভাবে গত ২৬ এপ্রিল ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলও (Sukanya Mondal)। দুজনেরই ঠিকানা এখন দিল্লির তিহাড়। মেয়ে বলতেই নয়নের মণি, তবে এবার বাবা-মেয়ের মধ্যেই মতবিরোধ। আর তার জেরে বিশাল সমস্যায় পড়তে হল কেষ্ট-সুকন্যাকে। সূত্রের খবর, দুজনার মতবিরোধের জেরে মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন সুকন্যা মণ্ডলের আইনজীবী (Lawyer) অমিত কুমার।
জানা গিয়েছে, অমিত কুমার ইতিমধ্যেই সুকন্যাকে জানিয়ে দিয়েছেন যে তিনি আর মামলা লড়তে চান না। দুদিন আগেই জানা গিয়েছিল বেজায় অসুস্থ কেষ্ট কন্যা। গত ১২ জুলাই খবর মেলে আচমকা জেলের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েন সুকন্যা। তড়িঘড়ি তাকে জেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরই মধ্যে এবার আইনজীবী নিয়ে তার বিপদ আরও বাড়লো।
সূত্রের খবর, কেষ্ট-শুকন্যার মধ্যে বহুদিন ধরে আইনজীবী নিয়ে সমস্যা চলছিল। গরু পাচার মামলায় শুরু থেকেই কেষ্টর আইনজীবী হিসেবে রয়েছেন মুদিত জৈন ও সম্পৃক্তা ঘোষাল। ওদিকে সুকন্যার আইনজীবী হিসেবে কাজ করছিলেন অমিত কুমার। এরই মধ্যে শুরু হয় বিবাদ। জানা যাচ্ছে, আইনজীবী অমিত কুমার যে ভাবে মামলা সাজাচ্ছিলেন তাতে সন্তুষ্ট ছিলেন সুকন্যা। তবে আইনজীবীর ভূমিকা নিয়ে কেষ্ট সন্তুষ্ট ছিলেন না।
যত তাড়াতাড়ি সম্ভবত শুকন্যার জামিন চেয়েছিলেন তিনি। আইনজীবী অমিত কুমারের সঙ্গে দেখাও করতে চাইছিলেন। তবে আলাদা করে কেষ্টর সঙ্গে দেখা করবেন না বলে জানায় সুকন্যার আইনজীবী। এর পরই তিনি মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন।
গত সপ্তাহেই নয়া মোড় নেয় গরু পাচার মামলা। আদালতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ED-র দাবি করে, কেষ্ট নয়, গরু পাচারের মাস্টারমাইন্ড ছিলেন তার মেয়ে সুকন্যা। পাচারের টাকা কোথায় কী ভাবে বিনিয়োগ করা হবে, সেই নিয়ে বাবাকে পরামর্শ দিতেন সুকন্যাই। এরপর খারিজ হয়েছে সুকন্যার জামিনের আবেদনও।
সেই সময় দিল্লির রাউজ অ্যাভিনিউ আদালতে লিখিত আবেদন দায়ের করে সুকন্যা জানিয়েছেন, ইডি তার যাবতীয় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করায় তিনি কার্যত ‘কপর্দকশূন্য’, এমনকি নিজের আইনজীবীদের ‘ফি’ জোগাতেও তিনি অক্ষম। ভবিষ্যতে মামলা চালানোর জন্য বা কোনও নামী আইনজীবীকে নিয়োগ করার জন্যও তার হাতে পর্যাপ্ত টাকা নেই। তাই অবিলম্বে তার জামিনের ব্যবস্থা করা হোক। এদিকে সুকন্যার আইনজীবী অমিত কুমার নিজেই এবার মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন। সুকন্যাকে গ্রেফতারের পর ইডির উদ্দেশে অনুব্রত বলেছিলেন, “মেয়েকে গ্রেফতার করা অন্যায়। ওটা খুব বাহাদুরির কাজ হয়নি।”