এগরা বিস্ফোরণ কাণ্ডে পুলিশের জালে ভানু বাগ, এমন জায়গায় লুকিয়ে ছিলেন শুনলে চমকে উঠবেন

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মঙ্গলবার ভয়াবহ বিস্ফোরণে (Blast) কেঁপে ওঠে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা (Egra)। সেখানের ১ নম্বর ব্লকের সাহারা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃত্যু হয় ৯ জনের। আহতের সংখ্যাটা আরও বেশি। যার অবৈধ কারখানার জন্য এত গুলো মানুষের প্রাণ গেল, অবশেষে সেই ভানু বাগকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার ছেলে পৃথ্বীজিৎ বাগ ও ভাইপোকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ৷ গত বুধবার রাতেই ওড়িশার কটক থেকে এই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

সূত্রের খবর, মঙ্গলবারের সেই ভয়াবহ বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হয়েছিল ভানু৷ সেই অবস্থাতেই গাড়িতে চেপে ওড়িশার দিকে পালিয়ে যায় সে৷ ভানুর খোঁজে ওড়িশা গিয়েছিল সিআইডি-র বিশেষ দল৷ সেখান থেকে ধরা হল অভিযুক্তকে। আপাতত কটকের একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে ভানুকে৷

ওড়িশা পুলিশের কড়া নজরদারিতে অভিযুক্ত৷ শারীরিক পরিস্থিতি কিছুটা আয়ত্তে আসলেই ট্রানজিট রিমান্ডে ভানুকে পশ্চিমবঙ্গে আনা হবে বলে জানা গিয়েছে। ভানু বাগের ছেলেকে গ্রেফতার করা হলেও বাজির বেআইনি ব্যবসাতে ছেলের মত ছিলনা বলেই জানা গিয়েছে৷ আলাদা বাড়ি করে কীটনাশকের ব্যবসা চালাত ছেলে৷ তবে, বিস্ফোরণের বাবার আহত হওয়ার খবর পেয়ে তার সঙ্গে দেখা করতে ওড়িশা ছুটে যান ছেলে।

বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকেই তার খোঁজে নামেন সিআইডি আধিকারিকেরা৷ ওড়িশায় যায় তদন্তকারীদের বিশেষ দল৷ প্রসঙ্গত, বাম জমানায় সিপিএম নেতা ছিলেন ভানু বাগ। রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসতেই জোড়াফুল পতাকা ধরে। ২০১১সালের পর থেকে এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা নামে পরিচিত। ২০১৩ – ২০১৮ সাল পর্যন্ত পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন এই ভানু । সূত্রের খবর, খানিকটা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়েই বাজি কারখানার জায়গা দখল করেন তিনি।

egra blast

সূত্রের খবর, আজ থেকে প্রায় ১৫ বছর আগে বাজি তৈরি করতে গিয়ে কৃষ্ণপদের বাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে, সেই ঘটনায় প্রায় যায় নিজেরই ছোট ভাই বাদল বাগের মৃত্যু হয়। তবে তাতেও থামানো যায়নি কৃষ্ণকে। বাড়ির বদলে এগরা ১ নম্বর ব্লকের সাহাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে বাজির কারখানা গড়ে তোলে। যার থেকে তার বাড়ির দূরত্ব চারশো মিটার মতো।

এর আগেও একাধিকবার ওই কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি স্থানীয়দের। পূর্বে ২০২২ সালে তাকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশ। তবে কোনোক্রমে কোর্ট থেকে ছাড়া পেয়ে যায় কৃষ্ণ। তারপর আবার রমরমিয়ে চলছিল কারখানা। কীভাবে প্রশাসনের নাকের ডগায় এই অবৈধ কারখানা চালাচ্ছিলেন কৃষ্ণ? অনেকে আবার বলছেন বাজি নয়, বোমা তৈরী হচ্ছিল কারখানায়। কাদের হাত ছিল তার মাথার ওপর? শুধুই কী অর্থ লোভ নাকি এর নেপথ্যে বড় কোনো কাহিনী! ক্রমশ্যই ঘনাচ্ছে রহস্য।


Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর