বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী ও স্বচ্ছল স্ত্রী খোরপোশ দাবি করতে পারেন না। সম্প্রতি এমনই একটি গুরুত্বপূর্ণ রায় দিল দিল্লি হাই কোর্ট (Delhi High Court)। আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, খোরপোশ কোনও ভাবেই দু’জনের আর্থিক সমতা আনার উপায় নয়। এটি শুধুমাত্র সেই ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, যেখানে আবেদনকারী সত্যিই আর্থিকভাবে নির্ভরশীল বা সাহায্যের প্রয়োজন রয়েছে।
কোন মামলায় এই রায় দিল হাই কোর্ট (Delhi High Court)?
সম্প্রতি দিল্লির এক মহিলার দায়ের করা খোরপোশের আবেদন খারিজ করেছে দিল্লি হাই কোর্টের (Delhi High Court) ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি অনিল ক্ষেত্রপাল ও বিচারপতি হরিশ বৈদ্যনাথন শংকরের বেঞ্চে শুনানি হয় মামলাটির। আদালত হিন্দু বিবাহ আইন (HMA)-এর ধারা ২৫ ব্যাখ্যা করে জানায় যে যে ব্যক্তি আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী, তিনি খোরপোশের অধিকারী নন।
মামলার তথ্য অনুযায়ী, দিল্লির ওই মহিলা ভারতীয় রেলে কর্মরত। তাঁর সঙ্গে বিয়ে হয় এক আইনজীবীর। কিন্তু ১৪ মাসের মধ্যেই তাঁদের দাম্পত্য জীবনের ইতি ঘটে। মহিলার অভিযোগ, স্বামী তাঁকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। এরপর তিনি বিবাহবিচ্ছেদের মামলা দায়ের করেন এবং ৫০ লক্ষ টাকার খোরপোশ দাবি করেন।
নিম্ন আদালতের পর এবার হাই কোর্টেও খারিজ আবেদন
স্থানীয় পারিবারিক আদালত প্রথমেই তাঁর খোরপোশের আবেদন খারিজ করে দেয়। এরপর মহিলা হাই কোর্টে (Delhi High Court) আবেদন করেন। কিন্তু সেখানেও একই সিদ্ধান্ত জানাল আদালত। রায়ে বলা হয়েছে, “যেহেতু আবেদনকারিণী আর্থিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ, তাঁর নিয়মিত আয় রয়েছে এবং কোনও সন্তানের দায়িত্বও নেই, তাই স্থায়ী ভরণপোষণের দাবি যুক্তিযুক্ত নয়।”
আরও পড়ুনঃ “প্রয়োজনে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বোঝাব”, তৎপর দেব, কি নিয়ে চিন্তা তৃণমূল সাংসদের?
হাই কোর্ট (Delhi High Court) জানিয়েছে, খোরপোশের আবেদন বিবেচনার সময় আদালতকে দেখতে হবে আবেদনকারীর আর্থিক অবস্থা এবং প্রকৃত সাহায্যের প্রয়োজন আছে কি না। আবেদনকারীকে প্রমাণ করতে হবে কেন তাঁর খোরপোশ প্রয়োজন। এই ক্ষেত্রে আবেদনকারিণী তা করতে পারেননি। তাই আদালত আবেদন খারিজ করে দেয়। আদালত স্পষ্ট জানায়, “খোরপোশের উদ্দেশ্য আর্থিক সমতা সৃষ্টি করা নয়, বরং প্রকৃতভাবে আর্থিকভাবে নির্ভরশীল ব্যক্তিকে সাহায্য করা।”