বাংলা হান্ট ডেস্কঃ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University Incedent) প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর মৃত্যুতে শোকাহত গোটা রাজ্য। বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের তিন তলা থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন স্বপ্নদীপ। তড়িঘড়ি একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। বৃহস্পতিবার সকালে মৃত্যু হয় তাঁর। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন স্বপ্নদীপ।
স্বপ্নদীপ তো চলে গিয়েছে, তবে তুলে দিয়ে গিয়েছে হাজারো প্রশ্ন। বর্তমানে প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার রহস্য মৃত্যুতে তোলপাড় সমাজ। মর্মাহত কলকাতার মেয়র তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও (Mayor Firhad Hakim)। শুক্রবার এই প্রসঙ্গে ববি বলেন, ‘‘সামান্য সময়ের জন্য একটা মানসিক হতাশায় মেধাবী ছেলেটি একটা মারাত্মক সিদ্ধান্ত নিল।’’ এরপরেই নিজের জীবনের কিছু অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন ফিরহাদ।
বলেন স্বপ্নদীপের মতো জীবন শেষ করে দেওয়ার কথা ভেবেছিলেন তিনিও! তারও মনে হয়েছিল এই জীবন রেখে লাভ নেই। তবে পরিণত শক্ত মনের জন্য সেই পরিস্থিতি থেকে নিজেকে সরিয়ে এনেছেন তিনি। তিনি বলেন, “দীর্ঘ এই রাজনৈতিক জীবনে অনেক সময় অযথা সাংবাদিকদের অনেক অপ্রিয় প্রশ্নের মুখোমুখি আমাকেও হতে হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার নানান ভাবে এজেন্সি দিয়ে হেনস্তা করেছে। তখন আমারও এক মুহূর্তের জন্য মনে হয়েছে জীবনটা রেখে কী হবে?”
আরও পড়ুন: কিছুক্ষনেই আবহাওয়ার তুমুল বদল! ঝড়-বৃষ্টির ডবল তাণ্ডব, ৫ জেলায় জারি হল অরেঞ্জ অ্যালার্ট
এরপরই ফিরহাদ বলেন, ‘‘সেই সময়টায় আমি নিজে নিজেকে প্রশ্ন করি, এত মানুষের জন্য কাজ করছি। সেটা কি কিছু নয়?” মন্ত্রীর পরামর্শ, “স্কুল, কলেজ হোক বা কর্মক্ষেত্র সব জায়গাতেই অপমান শুনতে হয়। তখন প্রিয়জনের সঙ্গে গল্প করবেন। মনটা অনেক হালকা হবে। এই মানসিক সাপোর্টটাই দরকার।’’
আরও পড়ুন: পার্থর জীবনে নেমে এল গভীর অন্ধকার! প্রাক্তন মন্ত্রীকে ‘অতীত’ করে জায়গা নিল ‘এই’ হেভিওয়েট
ওদিকে মন্ত্রীর ছোট মেয়ে আফশা হাকিম সম্প্রতি এলএলবি পাস করেছেন। আইনে উচ্চতর ডিগ্রি করতে তিনি এক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছেন। সেখানে হোস্টেলেই থাকবেন। যাদবপুরের ঘটনার পর থেকে মেয়ের জন্য চিন্তায় রয়েছেন বাবা। এই নিয়ে ফিরহাদ বলেন, ‘‘আমিও তো বাবা। যাদবপুরের ওই ঘটনাটা শোনার পর থেকে ভেতরে ভেতরে অস্থির ছিলাম। আমার মেয়েও হোস্টেলে থাকবে। কাল রাত্রিবেলা মেয়েকে বললাম, মা কিছু হলে ছেড়ে আমার কাছে চলে আসবি। কোনওরকম টেনশন নিবি না।’’
নিজের শৈশবের স্মৃতি হাতড়ে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের ছোটবেলায় কত কড়া অনুশাসনের মধ্য দিয়ে বড় হতে হয়েছে। বাবা বেল্ট দিয়ে মারত। এখনকার ছেলেমেয়েরা ভাবতেও পারবে না। এখন কিশোর কিশোরীরা সকলে হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটার, ফেসবুকে মগ্ন। সেটাই ওদের জগৎ। কিন্তু তার মধ্যেও মা-বাবাকে বলব, মোবাইল সরিয়ে গল্প করুন। বাচ্চাদের মনের কথা জানার চেষ্টা করুন।’’