বাংলাহান্ট ডেস্ক : ”ব্যাঙ্গা-ব্যাঙ্গির বিয়ে, কুলো মাথায় দিয়ে, ও ব্যাঙ জল আন গিয়ে আন গিয়ে। খালেতে নাই জল, বিলেতে নাই জল, আকাশ ভেঙে পড়ে ফোঁটা ফোঁটা জল।” দাবদাহ থেকে বাঁচতে এবার ধুমধাম করে ব্যাঙয়ের বিবাহ অনুষ্ঠান পালন করা। আর এই বিবাহ আসরের মূল উদ্যোক্তা যিনি ছিলেন তিনি হলেন আরামবাগ পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী।
বলা বাহুল্য, ধুমধাম করেই এই বিয়ের আয়োজন করা হয়। এই বিয়ের জন্য বিবাহমণ্ডপ, ফুলের মালা, গায়ে হলুদ, থেকে শুরু করে জমিয়ে খাওয়াদাওয়া—সব ধরনের ব্যবস্থাই ছিল। শুধু তাই নয়, বিয়েতে নিমন্ত্রিত ব্যক্তিরাও ব্যাঙ দম্পতিকে আশীর্বাদ করেন। এমনকি, শাস্ত্র মতে পুরোহিত মন্ত্র উচ্চরণ করে তাদের বিয়ে সুসম্পন্ন করেন। এলাকাবাসীর জন্য মধ্যাহ্নভোজের আয়োজনও করা হয়েছিল।
হুগলি জেলার আরামবাগ পাঁড়ের ঘাট মন্দিরে এই বিবাহকার্যের আয়োজন করতে পেরে যারপরনাই উচ্ছ্বসিত স্বপন নন্দী। তিনি বলেন, বাপ ঠাকুরদার আমল থেকে এই রীতি প্রচলন আছে আমরাও দেখেছি গ্রীষ্মের প্রখর রৌদ্রে মাঠঘাট ফেটে হাহা করছে. চাষিরা বৃষ্টির জন্য মাঠে ফসল পালাতে পারছে না। সেই প্রথা মেনেই তীব্র গরম থেকে মুক্তি পেতে ব্যাঙ দম্পতির বিয়ে দিলেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ঠিক কবে থেকে এ ধরনের বিয়ের সংস্কৃতি চলে আসছে, তার সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। তবে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি কম হলে কিংবা প্রচণ্ড খরা হলে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এ ধরনের ব্যাঙ বিয়ের আয়োজন করে থাকেন। তাঁদের বিশ্বাস, এই আয়োজন করলে বৃষ্টি নামবে এবং ধান ভালো উৎপাদন হবে। মূলত হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থ রামায়ণে বৃষ্টির দেবতা বরুণ দেবকে তুষ্ট করতেই ব্যাঙ বিয়ের আয়োজন করা হয়।